আইপিএল ফাইভের প্রথম চার দলের মধ্যে থাকার লড়াইটা গনগনে হয়ে উঠেছে। আজ কলকাতায় চেন্নাইয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। ইডেনে কেকেআরের মহড়া নেওয়াটা ধোনিদের কাছে মোটেও সহজ হবে না। মনে হচ্ছে দু’বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন টিমের এ বারের ভাগ্যরেখা ইডেনেই লেখা হয়ে যাবে। সোমবার চেন্নাই না জিতলে চলতি টুর্নামেন্টে ওদের ওপর যবনিকা নেমে আসবে। ঘরের মাঠে কেকেআর সহজ প্রতিপক্ষ নয়। চেন্নাই যদি এ বার সেমিফাইনালে উঠতে না পারে, তা হলে সেই চিরন্তন কথাটাই আবার বলতে হবে ওপরে উঠলে নীচেও পড়তে হয়, পড়তে হয় ফের পরীক্ষার সামনে।
আইপিএলের জন্ম থেকেই চেন্নাইয়ের স্বপ্নের দৌড় চলছে। প্রথম বছরে রানার্স, দ্বিতীয় বারে সেমিফাইনালিস্ট, তৃতীয় আর চতুর্থ সংস্করণে চ্যাম্পিয়ন। এ বার চেন্নাই যদি সত্যিই শেষমেশ সেমিফাইনালের আগেই ছিটকে যায়, তা হলে এটাই বোঝা যাবে যে, এক জন অধিনায়ক কোনও জাদুকর নয়। এক জন ক্যাপ্টেন ততটাই ভাল, যতটা ভাল তার টিম। চেন্নাই ব্যর্থ হলে লোকে নিশ্চয়ই বুঝবে যে, সেটা ওদের সমষ্টিগত ব্যর্থতা। ধোনিকে একক ভাবে সেই ব্যর্থতার জন্য চিহ্নিত করা যাবে না। চেন্নাইয়ের এ বার সবচেয়ে বড় খামতি, নিজেদের মাঠে ওদের আর অপরাজেয় দেখাচ্ছে না। যেমনটা অন্যান্য আইপিএলে দেখিয়েছিল। এ ছাড়াও ওদের প্রধান ব্যাটসম্যানরা ফর্ম নিয়ে ভুগেছে। হিলফেনহস আসার আগে পর্যন্ত ওদের বোলিংয়েও সেই কামড় ছিল না। লিগের লড়াইয়ের এই মাহেন্দ্রক্ষণে ওরা নিজেদেরকে কী ভাবে একত্রিত করে সেমিফাইনালের দড়ি পেরনোর চেষ্টা করে সেটা দেখতে খুব কৌতূহল নিয়ে অপেক্ষা করব।
কেকেআর চেন্নাইকে চেন্নাইয়ের মাঠে হারিয়ে এলেও ইডেনে কিন্তু আজ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ধোনি অ্যান্ড কোং-এর মোকাবিলা করবে। শনিবার রোহিত শর্মার হিরের টুকরো ইনিংসের কাছে কেকেআর হেরেছে। এ বারের আইপিএলের অন্যতম সেরা ইনিংস। এই ছেলেটা সাম্প্রতিক অতীতে ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা প্রতিভাবান তরুণ হয়েও প্রতিভাকে পারফরম্যান্সে রূপান্তরিত করতে পারছিল না। ওর ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে এবং সেটার দিকে ওর আরও নজর দেওয়া দরকার। বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মা হল ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। ওরা দু’জন যদি নিজেদের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করে তা হলে ভারতীয় ক্রিকেটের প্রচুর সেবা হবে।
ইডেনে রোহিত যে ইনিংসটা খেলল আর বেঙ্গালুরুর শেষ দুটো ম্যাচে গেইল পরপর যে দুটো ইনিংস খেলেছে, সেগুলো বুঝিয়ে দিয়েছে যে, ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফর্ম্যাটেও নিজেকে বিজয়ী দেখার জন্য তোমার ব্যাটিং অস্ত্রভাণ্ডারে ক্রিকেটীয় শট থাকাটা ভীষণই জরুরি। অনেকে বলে গেইল ‘স্লগ’ করে। আমি তাদের এটুকু বলতে পারি যে, স্লগ করে কারও পক্ষে টেস্টে ট্রিপল সেঞ্চুরি করা সম্ভব নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোর্ড যে গেইলের সঙ্গে ঝামেলা মিটিয়ে ওকে আবার ক্যারিবিয়ান টিমে ফেরানোর দিকে এগিয়েছে, সেটা খুব ভাল ব্যাপার। গেইলের মতো ব্যাটসম্যানকে বিভিন্ন দেশের শুধু টি-টোয়েন্টিতে খেলার জন্য ফেলে রাখা উচিত নয়। ওর মতো প্লেয়ারকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খুব দরকার। দর্শকদের খেলাটার প্রতি আগ্রহ আরও বাড়ানোর জন্যই। |