প্রায় দেড় দিন নিখোঁজ থাকার পরে শনিবার রাতে হাওড়া স্টেশন থেকে জগৎবল্লভপুরের নিখোঁজ স্বর্ণ ব্যবসায়ী তাপস পালকে উদ্ধার করল রেল পুলিশ। রাতেই তাঁকে পাতিহালে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রেল পুলিশ জানিয়েছে, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে ওই ব্যবসায়ী অভিযোগ দায়ের করেছেন। অপহরণকারীরা ১৫ হাজার টাকা কেড়ে নিয়েছে বলেও তাঁর দাবি।
যদিও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাঁর কথাবার্তায় কিছু ‘অসঙ্গতি’ রয়েছে বলে দাবি পুলিশের। রেল পুলিশের পাশাপাশি, জেলা পুলিশও তদন্ত শুরু করেছে। হাওড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাওড়া (গ্রামীণ) সুখেন্দু হীরা বলেন, “ওই যুবককে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ওঁর করা অপহরণের অভিযোগে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। |
বাড়ি ফেরার পরে পরিবারের সঙ্গে তাপস পাল। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায় |
আমরা রেল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।”
বছর পঁয়ত্রিশের তাপসবাবু রেল পুলিশকে জানিয়েছেন, শুক্রবার পাতিহাল স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হাওড়া স্টেশনের ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে নামেন। সাবওয়ের দিকে যাওয়ার সময়ে ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের কাছে তাঁর নাকের সামনে এক জন সুগন্ধী রুমাল দিয়ে ঝাপটা মারে। ওই গন্ধে তিনি কিছুটা ‘আচ্ছন্ন’ হয়ে পড়েন। প্ল্যাটফর্মের কাছের কলে মুখে-চোখে জলের ঝাপটা দেন তিনি। তার পরে সাবওয়ের কাছে পৌঁছনো মাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার পরে তাঁর আর কিছু মনে ছিল না। জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখেন, অন্ধকার ঘরে শুয়ে রয়েছেন। দরজা খোলার চেষ্টা করেও পারেননি। বুঝতে পারেন, তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে। ডাকাডাকি করেও কারও সাড়া পাননি।
পুলিশের কাছে তাপসবাবুর দাবি, বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে দুই যুবক ঘরে ঢোকে। তারা বাংলায় কথা বললেও, তাতে হিন্দির টান ছিল। কিছু ক্ষণ পরে তারা তাপসবাবুর নাকে ফের রুমাল চেপে ধরলে তাপসবাবু জ্ঞান হারান। শনিবার রাত ১০টা নাগাদ জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখেন, বসে রয়েছেন হাওড়া স্টেশনের ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের শেষ প্রান্তে। তখনও তাঁর আচ্ছন্ন ভাব কাটেনি। এর পরে বন্ধ মোবাইল ফোন চালু করেন তিনি। বাড়িতে ফোন করেন। বাড়ির লোকজন এলে হাওড়া রেল পুলিশের কাছে অপহরণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। একই কথা তিনি রবিবার সংবাদমাধ্যমকেও জানিয়েছেন। কিন্তু তদন্তকারীদের বক্তব্য, মাত্র ১৫ হাজার টাকার জন্য তাপসবাবুকে অপহরণ করা হয়েছিল, এ ‘তত্ত্ব’ মানা দুষ্কর। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। |