|
|
|
|
বাঁধ মেরামতে দুই দফতরের যুগ্ম কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বাঁধ মেরামতি নিয়ে গ্রামোন্নয়ন দফতরের সঙ্গে সেচ দফতরের মেলবন্ধনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আরামবাগ মহকুমায়। সামনে বর্ষা। বন্যাপ্রবণ এই মহকুমা মুণ্ডেশ্বরী, দামোদর এবং দ্বারকেশ্বর নদীবেষ্টিত। মুণ্ডেশ্বরীর উপর গুরুত্বপূর্ণ চারটি জায়গায় বাঁধ মেরামতের কাজ সংশ্লিষ্ট দুই দফতরের মেলবন্ধনে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেচ দফতর কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছে সংশ্লিষ্ট ব্লক প্রশাসনগুলি। সেচ দফতরের বক্তব্য, ওই কাজ মিলিত ভাবে করা সম্ভব নয়।
হুগলির জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন বলেন, “মেলবন্ধনের ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত অসুবিধা কাটাতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ নদীবাঁধগুলি সারানোর কাজ টাকা পেলেই শুরু হবে।” জেলা সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার প্রদীপ চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, “১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে পাকাপোক্ত ভাবে বাঁধগুলি মেরামত করা সম্ভব নয়। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, ওই প্রকল্পের বরাদ্দের ৬০ শতাংশ শ্রমিকের মজুরি এবং ৪০ শতাংশ উপাদানে ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ওই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সারাতে আমাদের হিসেব অনুযায়ী ন্যূনতম ৮০ শতাংশ উপাদান (এ ক্ষেত্রে বোল্ডার) লাগবে।”
১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের সঙ্গে সরকারি অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের মেলবন্ধন সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে জারি করে কেন্দ্র। এই মেলবন্ধনে বিপুল পরিমাণ কাজ তৈরি এবং টাকা খরচের নিশ্চয়তায় পঞ্চায়েতগুলিতে ব্যাপক সাড়া পড়ে। সেচ দফতরের সঙ্গে মেলবন্ধনে আরামবাগের পার্বতীচক এবং পুড়শুড়ার জঙ্গলপাড়ার দু’টি ছোট বাঁধ সংস্কারের কাজও (২ থেকে ৪ লক্ষ টাকা) হয়েছে। কিন্তু মূল কাজগুলি হয়নি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, আরামবাগের আরান্ডি-২ পঞ্চায়েত এলাকার লঘুচকে মুণ্ডেশ্বরী নদীর প্রায় ৩০০ মিটার বাঁধ মেরামত না হলে বন্যায় ২৫-৩০টি বাড়ি ধ্বংস তো হবেই, বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে খানাকুল পর্যন্ত ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে। মলয়পুরের পূর্ব কেশবপুর এবং হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েতের মজফ্ফরপুরেও বাঁধ মেরামতি জরুরি।
খানাকুলের উদনায় প্রায় দেড় কিলোমিটার নদীবাঁধে ভাঙন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, জানুয়ারিতে প্রকল্প তৈরি করে পাঠানো হয়েছে জেলা সেচ দফতরে। কারিগরি অনুমোদন দেওয়ার কথা তাদের। কিন্তু পাঁচ মাসেও কিছু হয়নি। অথচ, সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষেরা দ্রুত বাঁধ মেরামতের দাবিতে পঞ্চায়েতগুলিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জনরোষ এবং নিগ্রহের আশঙ্কায় বিডিও-দের ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। বিডিও-রা মহকুমাশাসকের কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন।
মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী বলেন, “সেচ দফতর জানিয়েছে, নদীবাঁধ মেরামতের ক্ষেত্রে তাদের দফতরের নির্ঘন্টের (শেডিউল) সঙ্গে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের নির্ঘন্ট মিলছে না। বিষয়টি জেলাশাসক দেখছেন।”
জেলা সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার জানান, উদনার জন্য ৪ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকার প্রকল্প এবং পূর্ব কেশবপুরের জন্য ৩ কোটি ৭ লক্ষ টাকার প্রকল্প জেলাশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। টাকা পেলেই কাজ শুরু করা হবে। প্রয়োজনে জরুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী ভাবে বাঁধ মেরামত করা হবে। সে কথা জেলাশাসককে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। |
|
|
|
|
|