বিহারের এক বন্দিকে ঘিরে দুই রাজ্যের এনডিএ জোট সরকারের মধ্যে চাপান-উতোর শুরু হল। মহম্মদ কাফিল আখতার নামে দ্বারভাঙার এক অভিযুক্তকে কর্নাটকের পুলিশ যে ভাবে গ্রেফতার করেছে তার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিহার সরকার। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী ডি ভি সদানন্দ গৌড়ার চিঠির প্রেক্ষিতে এ দিন বিহারের মুখমন্ত্রী নীতীশ কুমার বলেছেন, “কর্নাটকের পুলিশ যে ভাবে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে তাদের রাজ্যে নিয়ে গিয়েছে তা আইন বিরুদ্ধ।” তাকে রাঁচির আদালতে কেন তোলা হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন নীতীশ। প্রসঙ্গত, নিয়ম অনুযায়ী এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে নিয়ে যেতে হলে পুলিশকে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের আদালতের অনুমতি নিতে হয়।
দ্বারভাঙার ওই ঘটনা জানার পরেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের নির্দেশে বিহারের ডিজিপি কর্নাটকের ডিজিপিকে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। ৬ মে রাতে কর্নাটক পুলিশের একটি দল দ্বারভাঙার কিউটি থানার বালসামেলা গ্রাম থেকে মহম্মদ কাফিল আখতার নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ, গত বছর ১৭ এপ্রিল চিনাস্বামী স্টেডিয়ামে যে বিস্ফোরণ ঘটেছিল সে ঘটনায় আখতার জড়িত। ওই রাতে বাড়ি থেকে আখতারকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রর কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। নীতীশের ক্ষোভের কারণ, রাজ্যের পুলিশকে কিছই না জানিয়ে ওই ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। নীতীশ কুমার বলেন, “কর্নাটক পুলিশের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে এই রাজ্যের পুলিশের প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র আস্থাও নেই।”
বিহার সরকারের প্রতিবাদে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিহারকে জানিয়েছেন, সময়ের অভাবে এবং নিরাপত্তার স্বার্থেই কর্নাটক পুলিশ এই কাজ করেছে। এর জবাবে এ দিন নীতীশ বলেন, কর্নাটকের ওই সাফাইয়ের কোনও সারবত্তা নেই। নীতীশের প্রশ্ন, “আখতারকে দ্বারভাঙা থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে পটনার আদালতে না এনে প্রায় ৪২৫ কিলোমিটার দূরের রাঁচির আদালতে তোলা হল কেন? ধরার পর ২৬ ঘণ্টা বাদে রাঁচির আদালতে তাকে তোলা হয়। বিহারে কি আদালত নেই? রাঁচি অন্য রাজ্যের মধ্যে পড়ে। পটনার কোনও আদালতে না তুলে তাকে রাঁচির নিয়ে যাওয়ার কোনও এক্তিয়ারই কর্নাটক পুলিশের নেই। তা ছাড়া তাড়াহুড়ো থাকলে পুলিশের দলটি পটনায় না এসে রাঁচিতে গিয়ে এত সময় নষ্ট করে অভিযুক্তকে আদালতে তুলতে গেল কেন?”
রাঁচি থেকে বিমান ধরার জন্যই তাড়াহুড়ো করা হয় এ যুক্তিও উড়িয়ে দেন নীতীশ। নীতীশ জানান, পটনা বিমান বন্দর থেকে প্রতিদিনই উড়ান আছে বেঙ্গালুরুর। সে জন্য রাঁচিতে যাওয়ার দরকার ছিল না। গোটা ব্যাপারটাই বিহার পুলিশের প্রতি কর্নাটক পুলিশের আস্থাহীনতা বলেই মনে করছেন নীতীশ। সেই সঙ্গে নীতীশের ভাষ্যে কর্নাটক পুলিশের এই কাজ আইনের চোখেও কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। |