শিয়ালদহ স্টেশনে ট্রেন ধরতে যাওয়া যাত্রীরা আটকে গেলেন মৌলালির কাছে। কারণ, শিয়ালদহ উড়ালপুলের এক দিক দিয়ে ওঠা-নামা বন্ধ! তৃণমূলের মিছিলের জন্য এপিসি রোড-ক্রিক রো-র মোড়ে লোহার রেলিং (প্রিজম্যাটিক গার্ডরেল) বসিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। মিছিলে তখন হাঁটছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবিবার সন্ধ্যায় এ ভাবে আচমকা স্টেশনে যাওয়ার পথ আটকে যাওয়ায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের সাহায্য চাইছিলেন ট্রেন ধরতে যাওয়া যাত্রীরা। মল্লিকবাজার, সিআইটি রোড হয়ে মৌলালি মোড়ে আসা মানুষগুলিকে পুলিশকর্মীরা বলছিলেন, “সাহেব (অর্থাৎ উর্ধ্বতন অফিসার)-কে বলুন। ওঁদের ‘অর্ডার’ না-পেলে আমাদের কিছু করার নেই।” ‘সাহেব’-কে কোথায় খুঁজবেন? নিরুপায় যাত্রীরা অগত্যা গাড়ি থেকে নেমে ব্যাগ-বাক্স নিয়ে এপিসি রোড ধরে স্টেশনের দিকে হাঁটতে শুরু করলেন।
রাজ্যে জোট সরকারের ‘সাফল্যের’ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শনিবারের পরে রবিবারও কলকাতার পথে যত্রতত্র এ ভাবে নাকাল হতে হল আমজনতাকে। দক্ষিণ থেকে উত্তর ছুটির দিনেও বিস্তীর্ণ এলাকা যানজটে হাঁসফাঁস করল। পুলিশ জানায়, এ দিন বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ মিছিলের সূচনা হয়েছিল হাজরা মোড়ে। আশুতোষ মুখার্জি রোড হয়ে এক্সাইড মোড় পর্যন্ত এসে মিছিল ডান দিকে বেঁকে এজেসি বসু রোডে আসে। তার পরে সোজা মল্লিকবাজার-মৌলালি-শিয়ালদহ হয়ে রাজাবাজারে এসে শেষ হয়। দক্ষিণ থেকে উত্তরগামী মিছিল ধীর গতিতে বাঁ দিকের রাস্তা ধরে এগোতে থাকায় সে দিকের লেনে যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। উপরন্তু মিছিলের পুরো যাত্রাপথে গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলো পুলিশ দীর্ঘক্ষণ বন্ধ করে রাখায় উল্টো দিক থেকে (উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী) আসা গাড়িও নানা জায়গায় থমকে গিয়েছে। যে কারণে শিয়ালদহ উড়ালপুল পেরিয়ে মিছিল যখন রাজাবাজারের দিকে আগুয়ান, তখনও লম্বা গাড়ির লাইন চোখে পড়েছে উল্টো দিকের লেনে।
মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণ শুনতে আসা মানুষের ভিড়ে রাজাবাজার এলাকাও এ দিন ব্যাপক যানজটের কবলে পড়ে। শিয়ালদহ, ফুলবাগান, নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিট, শ্যামবাজার সব দিক থেকেই রাজাবাজারে আসা-যাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। সন্ধে সাতটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা শেষ হলে ধীরে ধীরে যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা শুরু করে পুলিশ। পুলিশকর্তারা পরে জানান, প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ ওই মিছিলে হেঁটেছেন। |