হেঁশেল ঠেলা আটপৌরে দিনযাপনেও ওঁরা স্বপ্ন দেখেন অন্য রকম কিছু করে ফেলার।
ঘরে-বাইরে সমানতালে দৌড়তে দৌড়তেও ওঁদের ইচ্ছেগুলো সত্যি করার ইচ্ছে জাগে।
চেনা মুখের ভিড়ে মিশে থেকেও ওঁরা আলো ছড়ান নিজের মতো করে।
ওঁরাই ‘নারী নক্ষত্র’ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যাঁদের কৃতিত্বকে কুর্নিশ জানাতে শহরে এই প্রথম বার হাজির হয়েছিল ‘সানন্দা নীহার সম্মান’।
প্রাথমিক বাছাই পর্বে অসংখ্য কৃতীর ভিড় থেকে ছ’টি বিভাগে এমনই ছ’জনকে বেছে নেন শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, শর্বরী দত্ত, অলকানন্দা রায় এবং প্রিয়াঙ্কা সরকার। শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের এক হোটেলে সেই অনন্যাদেরই স্বীকৃতি জানাল শহর।
কারও বয়স কম, কেউ বা প্রবীণা। তবু এই স্বীকৃতির মঞ্চে ওঁরা ‘নবীনা’ই। এই বিভাগে ফাইন আর্টসে ‘সুললিতা’ অদিতি চক্রবর্তী ছবি এঁকেই পৌঁছে যেতে চান সকলের মনের কাছাকাছি। পারফর্মিং আর্টসে ‘সুচারু’ সত্তরোর্দ্ধা মীনাক্ষী সিংহ নানা নজির গড়েছেন নাট্যচর্চা ও রবীন্দ্রচর্চায়। |
‘সানন্দা নীহার সম্মান’-এর ছয় ‘নবীনা’। শহরের একটি হোটেলে। ছবি:সুমন বল্লভ |
শিক্ষায় ‘প্রজ্ঞা’, ক্যানসার বিজ্ঞানী তানিয়া দাস মারণরোগে লড়াইয়ের পথ খুঁজতে নিরলস গবেষণায় মগ্ন। ব্যবসায় ‘প্রয়াসী’ শুভ্রা পাল বিয়ের সব গয়নার বিনিময়ে টাকা জোগাড় করে তিল তিল করে দাঁড় করিয়েছেন বই বাঁধাইয়ের ব্যবসা।
খেলাধুলায় ‘কুশলী’, কলকাতা পুলিশের কর্মী শম্পা ভারোত্তোলনে দেশ-বিদেশে জিতে এসেছেন নানা পদক, নানা সম্মান। আর সমাজকল্যাণে ‘সুকৃতী’ কান্তা চক্রবর্তী ২০০৭ সাল থেকেই কাঁধে তুলে নিয়েছেন এলাকার পথশিশুদের পড়াশোনার ভার। ওঁদের পাশাপাশি প্রতিটি ক্ষেত্রেই সম্মানিত করা হয় আরও দু’জন কৃতীকেও।
শুধু ‘নবীনা’রাই নন, নারীত্বের এই উদ্যাপনে সম্মানিত হন ‘জনপ্রিয়া’রাও, নিজেদের কাজে প্রতিদিনই যাঁরা প্রেরণা জোগাচ্ছেন ওঁদের মতো হতে চাওয়া আরও অনেককে। এই বিভাগ তাই স্বীকৃতি জানাল ফাইন আর্টসে চিত্রশিল্পী ঈলিনা বণিক, পারফর্মিং আর্টসে সঙ্গীতশিল্পী কৌশিকী দেশিকান, শিক্ষায় অধ্যাপিকা সুপ্রিয়া চৌধুরী, ব্যবসায় কনফেকশনারি চেনের প্রতিষ্ঠাতা সুপ্রিয়া রায়, খেলাধুলোয় ক্রিকেটার ঝুলন গোস্বামী এবং সমাজসেবী শামলু দুদেজাকেও। পরমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঞ্চালনায় এ সন্ধ্যার বাড়তি পাওনা ছিল লোপামুদ্রা মিত্রের গান এবং মিতুল সেনগুপ্তের নৃত্যানুষ্ঠান। |