এ যেন শেষ থেকে শুরু।
যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল এ বছরের মার্চ মাসে, সরকারি ভাবে তা শুরুই হল মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহের শুরুতে! রবিবার বরাহনগরের বনহুগলিতে সেচ ও জলপথ দফতরের বাগজোলা খাল সংস্কার প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে এ নিয়ে কার্যত সংশ্লিষ্ট দফতরের ‘সমালোচনা’ করলেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা সৌগত রায়। মঞ্চে তখন উপস্থিত রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াও।
ওই প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় বরাদ্দ হয়েছে ৫৯.১৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৫১.১৩ কোটি টাকার অংশবিশেষ ‘জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আবার্ন রিনিউয়াল মিশন’ (জেএনএনইউআরএম) প্রকল্পে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ৩৫:৬৫ অনুপাতে ভাগ করা হয়েছে। সৌগতবাবু জানান, জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে কেন্দ্র ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ওই খাল সংস্কারের খরচের ৩৫ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ১৭ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা অনুদান হিসেবে মঞ্জুর করে। রাজ্যের হাতে প্রথম কিস্তির টাকা পৌঁছয় ওই বছরের মাঝামাঝি। |
বাগজোলা খালের হাল দেখছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও কেন্দ্রীয়
নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সৌগত রায়। রবিবার। নিজস্ব চিত্র |
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, “২০১২ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ওই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুরুই হল মে মাসে। টেন্ডার করে কাজ শুরু করতে এত দিন সময় গিয়েছে। কিন্তু এতটা সময় নেওয়া উচিত নয়।” জুন মাসে রাজ্যে বর্ষা আসার আগেই ওই খালের পলি কাটার কাজ শেষ করতে সেচমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান সৌগতবাবু। পাশাপাশি, কামারহাটি ও বরাহনগর পুর-এলাকার অন্য কয়েকটি প্রকল্পের কাজও দ্রুত শেষ করতে পুরসভাগুলিকে উদ্যোগী হওয়ার ‘অনুরোধ’ জানিয়েছেন তিনি।
বাগজোলা খাল সংস্কারের কাজে দেরির কারণ হিসেবে রাজ্য সরকারের আর্থিক সঙ্কটকেই দায়ী করেছেন সেচমন্ত্রী। মানসবাবু জানিয়েছেন, ২০১০-’১১ সালের রাজ্য বাজেটে এই কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান ছিল না। ২০১২-’১৩ সালের বাজেটে বাকি টাকা মিলেছে। মন্ত্রী আরও জানান, সেচ দফতরে সম্প্রতি ‘ই-টেন্ডার’ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ওই নতুন ব্যবস্থায় দফতরের ইঞ্জিনিয়ার এবং ঠিকাদারদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রক্রিয়াতেও তিন-চার মাস সময় লেগে গিয়েছে। এ সব কারণেই কাজ শুরু হতে কিছুটা দেরি হয়েছে বলে সেচমন্ত্রীর দাবি।
স্থানীয় বিধায়ক তাপস রায় জানান, বাগজোলা খালের একাংশে সল্টলেক-হাওড়া মেট্রো প্রকল্পের কয়েকটি স্তম্ভ তৈরি হবে। সে ক্ষেত্রে ওই খালের জল-পরিসর যাতে কোনও ভাবে আটকে না-যায়, সে দিকে নজর রাখতে হবে। তাপসবাবুর আশঙ্কা, জল যাওয়ার পথ বন্ধ হলে বর্ষায় কামারহাটি, বরাহনগর, রাজারহাটের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়তে পারে। তিনি জানান, এ বিষয়ে বিভিন্ন দফতরকে নিয়ে সোমবার মহাকরণে রোটান্ডায় একটি বৈঠক হবে। |