স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে একটি নির্মাণ কাজের দরপত্র বাতিলের নির্দেশ জারি করেছেন বিডিও। সে কারণে বারাবনির বিডিও ও ব্লকের দোমহানি পঞ্চায়েতের কয়েক জন কর্মীদের হেনস্থার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বর্ধমানের জেলাশাসক ও পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন বিডিও জুলফিকার হাসান। যদিও তৃণমূলের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।
বারাবনির বিডিও জুলফিকার হাসান জানান, প্রায় ২২ দিন আগে ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত দোমহানি পঞ্চায়েতের অধীনে একটি নির্মাণ কাজের জন্য দরপত্র ডাকা হয়। কয়েক জন ঠিকাদার তাতে যোগ দেন। বিডিও-র অভিযোগ, “দিন কয়েক আগে আমি একটি অভিযোগ পাই, কয়েক জন ঠিকাদারকে দরপত্রে যোগ দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা মেলে। তার পরেই শুক্রবার পুরোনো দরপত্র বাতিল করে নতুন দরপত্র ডাকার নির্দেশ দিই।” বারাবনির বিডিও আরও জানান, এই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আগেও এ রকম অভিযোগ উঠেছে। সরকারি টাকায় স্বজনপোষণ বন্ধ করতেই ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জুলফিকার হাসান বারাবনি থানার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, নতুন দরপত্র ডাকার নির্দেশ জারির কারণ জানতে দোমহানি পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্য সন্তোষ সিংহের নেতৃত্বে এক দল লোক তাঁর কার্যালয়ে যান। বিষয়টি বুঝিয়ে বললেও তাঁরা তা না শুনে কটূক্তি করতে শুরু করেন। শুধু তাই নয়, শনিবার দোমহানি পঞ্চায়েতের কয়েক জন কর্মীকে হেনস্থা এমনকী মারধরও করা হয় অভিযোগ বিডিও-র। এর পরেই তিনি বিষয়টি বর্ধমানের জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা ও পুলিশকে জানান। বিডিও-র দাবি, “এই অবস্থায় পঞ্চায়েত কর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন। এ রকম চলতে থাকলে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম বিঘ্নিত হবে। অসুবিধায় পড়বেন সাধারণ মানুষ।”
এ দিকে, অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য সন্তোষ সিংহের দাবি, “আমরা বিডিও-র সঙ্গে কোনও দুর্ব্যবহার করিনি। তাঁর কাছে দরপত্র বাতিলের কারণ জানতে গিয়েছিলাম। তিনি কার্যত আমাদের তাঁর দফতর থেকে বের করে দেন।” তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতকে কালিমালিপ্ত করতে বিডিও মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ব্লক তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, “ব্লকের সব সিদ্ধান্ত বিডিও একাই নেন। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনাই করেন না।”
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিডিও জুলফিকার হাসান। তিনি জানান, সব কাজ আলোচনা করেই করা হয়। কিন্তু সে রাস্তায় না হেঁটে অভিযুক্তেরা মারমুখী হয়েই তাঁর কাছে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। রবিবার জেলাশাসকের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। |