খুকু যখন
স্বপনকুমার বিজলী
খুকু যখন হাসে
ফাগুন চলে আসে
নানা ফুলের গন্ধ মেলে
আকাশে বাতাসে।
খুকু যখন ছোটে
আকাশে চাঁদ ওঠে
ঘর উঠানে আলোয় আলো
আলোর ফুলকি ফোটে।
খুকু যখন বলে
কোকিল গেয়ে চলে
স্বরলিপির নতুন সে গান
শোনে দলে দলে।
খুকু যখন কাঁদে
সবাই পড়ে ফাঁদে
খাওয়া নাওয়া ভুলে গিয়ে
চেঁচায় আর্তনাদে। |
স্বপ্নে বাঘ
প্রণবকুমার পাল
ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখে
লেপের নীচে বাঘ
বলছে শুয়ে সোনামণি
করছ নাকি রাগ?
ঠান্ডা ঠান্ডা মাঘ মাসেতে
চুপ করে তো আছি
লক্ষ্মী আমার চেঁচিয়ে না
আজ রাতটা বাঁচি।
কাঁপছে সোনা ঘামে ভিজে
রাত ফুরোতে বাকি
যেই না ভাবা কিচিমিচি
ডাকল ভোরে পাখি।
তড়াক করে উঠে দেখে
সত্যি লেপের নীচে
প্লাস্টিকের বাঘবাবা যে
ভয় পেয়েছি মিছে। |
|
ফেরা
জয়নাল আবেদিন
নানা ঝামেলায়, প্রাণ যায় যায়
মগজেতে হইচই,
ছেড়ে ঘোরাঘুরি, বসে বসে পড়ি
উড়ো গল্পের বই।
পড়তে পড়তে, চাঁদকে ধরতে
যেই না বাড়াই হাত,
দেখা মিলে যায়, আগুন ছাড়াই
আকাশে ফুটছে ভাত।
ভেঙে ফেলি স্রোত, দেখি পর্বত
সবার চাইতে বেস্ট,
ইচ্ছের খুশি, তাই উঠে বসি
হে মাউন্ট এভারেস্ট।
ঘুরি নদী বন, সবই তো আপন
আমি আর নীল পরী,
ফিরে ফিরে আসি, যাকে ভালবাসি
সে আমার বেনেখড়ি। |
রাজপাট
শান্তিগোপাল পাণ্ডে
তোর গায়ে চাকা-চাকা দাগ।
তাই তুই বাঘ!
তার পরে রাজা!
তাই দিস অকারণে
সব্বারে সাজা!
কেমন সে সাজা দিস বল
হরিণের দল
তোর ভয়ে ছোটে;
ছাগেরাও থাকে নাকো
সামনেতে মোটে!
কিন্তু রে শোন এক কথা,
কাউকে অযথা
জ্বালাস নে আর,
না হলে সে রাজপাট
হবে ছারখার! |
|
সবুজ গন্ধ
চৈতন্য দাশ
কে পারো গো সবুজ, সবুজ গন্ধ আমায় দিতে?
বলছে মাটি আমিই পারি, চাও যদি ভাই নিতে।
ইট-পাথরে বন্দি খাঁচায় জীবন-গাছটা ফিকে,
হাউই বাজির গন্ধমাখা বাতাস চতুর্দিকে।
এক-দুই নয়, চার ফসলের ঝক্কি তোমার বুকে,
এ সার ও সার, বোমাবারুদ নিচ্ছে গন্ধ শুঁকে।
এর পরেতেও গন্ধ দেবে, বলতে পারো ডেকে?
গন্ধ আমি উধার নেব, বন্ধু ফুলের থেকে।
ফুল যদি ভাই গন্ধ হারায়, সেঁকো-বিষের ধারায়,
অঙ্কুরেতে লাগলে মড়ক বিষ-বাষ্প পারায়?
তখন আমি খোলস ছেড়ে নতুন সাজে আসব,
নতুন ফুলের সবুজ গন্ধে মন ভিজিয়ে হাসব। |
|