সম্প্রতি নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের শিলিগুড়ি শাখার ব্যবস্থাপনায় কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম হলঘরে সাহিত্যিক রতন বিশ্বাসের ‘পাহাড়ের রবীন্দ্রনাথ’ বই প্রকাশ করেন মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। প্রথমেই রতনবাবু বই লেখার উদ্দেশ্য ও বিষয়বস্তুর অবতারণা করেন। পাহাড়, প্রকৃতি কবিকে কী ভাবে প্রভাবিত করেছে সে কথা শুধু নয়, পাহাড়ের মানুষদের উপর কবির প্রভাবও লেখক তুলে ধরেছেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন আনন্দগোপাল ঘোষ। বিশেষ অতিথি রেজাউল করিম পাহাড়ে রবীন্দ্রনাথ নতুন তথ্যের সমাহারও নতুন সৃষ্টির কথা বলেন। সঞ্জীবন দত্ত রায়ের পর্যবেক্ষণ, “লেখকের চোখে মূলত নির্জনতার দিকগুলি ধরা পড়েছে।” তাঁর প্রকাশভঙ্গির অনন্যতা ও ভাষার ভিন্নতার কথা তিনি উল্লেখ করেন।ওই অনুষ্ঠানের সভাপতি গৌরমোহন রায় তাঁর বক্তব্যে লেখকের কাব্যিক ছোট বাক্য ব্যবহার, জীবনবোধের প্রয়াস স্বতন্ত্র ও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন। আরও একটি জমজমাট সাহিত্যের আড্ডা সকলের মন স্পর্শ করল। ইসলামপুর, জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ির নবীন ও প্রবীণ কবিরা কবিতা পাঠ করেন। স্বরচিত কবিতা পাঠ করলেন প্রবীর শীল, নিশিকান্ত সিংহ, শ্যামলী সেনগুপ্ত, প্রকাশ অধিকারী, নির্মল চক্রবর্তী, সুকুমার দাশগুপ্ত, অরুণ লাহিড়ী, সুশ্বেতা বসু, নির্মলেন্দু দাস, মধুমিতা বসুচৌধুরী, প্রণয় দাশ প্রমুখ। আশি ছুঁই ছুঁই ছড়াকার বিমলেন্দু দাম ছড়া পাঠ করেন। গান শোনান গোপা দাস, শীলা দত্ত ঘটক ও শিখিল সরকার।
|
২৫ এবং ২৬ এপ্রিল দীনবন্ধু মঞ্চে শিলিগুড়ির ঋত্বিক নাট্য সংস্থা দুদিন ব্যাপী নাট্য প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছিল। বিভিন্ন নাট্যদলের কর্মীরা এই কর্মশালায় যোগদান করেন। পার্থ চৌধুরী, পলক চক্রবর্তী, কুন্তল ঘোষ, পার্থ প্রতিম মিত্র এবং মলয় ঘোষের নেতৃত্বে নাটকের বিভিন্ন বিষয় যেমন সংগঠন গড়া, অভিনয়, বাচিক আঙ্গিক, নাট্য মুহুর্ত, প্রযোজনা থেকে মঞ্চায়ন এবং নাটকের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হয়। ঋত্বিকের কর্ণধার মলয় ঘোষ জানান, দুই দিনের এই কর্মশালা শিলিগুড়ির নাট্যমহলে সাড়া ফেলে।
|
২১ এবং ২২ এপ্রিল দীনবন্ধু মঞ্চে কথা ও কবিতা উচ্চাঙ্গ আবৃত্তি সন্ধ্যার আয়োজন করে। প্রথম দিন আবৃত্তি কর্মশালারও আয়োজন করা হয়। আবৃত্তিকার এবং আবৃত্তি গবেষক উৎপল কুণ্ডু নেতৃত্বে কর্মশালাটি হয়। তিনি আবৃত্তিতে ছন্দের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করেন। সহযোগিতায় ছিলেন আবৃত্তি শিল্পী সোমনাথ নাথ। সন্ধ্যায় উৎপল কুণ্ডুর আবৃত্তি মুগ্ধ করে। সোমনাথ নাথও আবৃত্তি পরিবেশন করেন। শিশু শিল্পী অনন্যা চক্রবর্তীর আবৃত্তি দর্শকদের মন ছুঁয়ে যায়। আবৃত্তি করেন পার্থপ্রতিম পাল, অরুময় চক্রবর্তী এবং মিতালি বিশ্বাস। দ্বিতীয় দিন শ্রুতি নাটকগুলির মধ্যে ছিল অরুময় চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘স্বপ্ন নয়’, ‘আমি মদন বলছি’, সমীর মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘দুর্ঘটনা’। অমিতাভ কাঞ্জিলালের পরিচালনায় ‘সারভাইভ্যাল’ এবং কাজল শূরের ‘অধরা মাধুরী’। সঞ্চালনায় ছিলেন সুমিতা দত্ত এবং অমিতাভ ঘোষ।
|
গত ৭ মে স্থানীয় হকার্স কর্ণারে গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ ২৫’শে বৈশাখ উপলক্ষে রবীন্দ্র ভাবনায় আয়োজন করেছিল কবি প্রণাম। শিলিগুড়ির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রবীন্দ্রনাথের চিন্তাভাবনা এবং বিভিন্ন আঙ্গিক নিয়ে আলোচনা করেন। স্থানীয় শিল্পীরা রবীন্দ্র সঙ্গীত, আবৃত্তি, নৃত্য পরিবেশন করে। একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করেন সঞ্জীবন দত্তরায়, হরেন ঘোষ, শ্যামাপ্রসাদ ভট্টাচার্য, ও অশোক রায়।
|
১৩ মে দীনবন্ধু মঞ্চে সৃজনসেনা রবীন্দ্রনাথের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় আয়োজন করেছে। পার্থপ্রতিম মিত্র জানান, সৃজনসেনার পরিচালনায় নতুনপাতা নাট্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রযোজনা রবীন্দ্র সূত্রে ‘নীহিকাতাতো’ এবং সৃজনসেনার প্রযোজনা রবীন্দ্র আশ্রয়ে ‘অমৃত’ পরিবেশিত হবে। সন্ধ্যায় টেগোর অ্যাপ্রিসিয়েশন সোসাইটি আয়োজন করেছে একটি নান্দনিক নির্মাণ রবীন্দ্র বাউল ভাবনায় ‘অচিনপাখি’।
|
৩০ তম প্রতিযোগিতামূলক মেচেনি উৎসব অনুষ্ঠিত হল ১ মে ময়নাগুড়ির জল্পেশ মন্দির চত্বরে। অনুষ্ঠানের আয়োজক জল্পেশ মন্দির কমিটি। ঝড়বৃষ্টিতে যেন ক্ষতি না হয় সেই কামনায় এ বারের উৎসবে অংশ নিয়ে গান শোনালেন জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকার সাতটি দল। দিনভর ওই প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছেন টেকাটুলির পক্ষিনাথপুরের বুধেশ্বরী রায় এবং তাঁর সম্প্রদায়। মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরীন্দ্রনাথ দেব বলেন, “উত্তরবঙ্গের অবলুপ্তির পথে বিভিন্ন সংস্কৃতির অন্যতম মেচেনি। ওই সংস্কৃতি রক্ষার জন্য প্রতিবছর উৎসব চলছে।” উৎসবে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক দীপক রায়। ছবিটি তুলেছেন দীপঙ্কর ঘটক। |