|
|
|
|
|
আর টাক টাক গুড় গুড় নয় |
চুল ওঠার কারণ অনেক। বংশগত কারণ ছাড়াও থাকে আধুনিক স্টাইলিং প্রডাক্টের ক্ষতিকর প্রভাব।
হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন পদ্ধতিতে আবার এক মাথা সুন্দর রেশমি চুল ফিরে
পাওয়া সম্ভব। জানালেন কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
আমরা প্রায়ই টিভিতে দেখি এক জন মানুষ এসে কথা বলছেন, তাঁর মাথায় চকচকে ইডেন গার্ডেনস। কিন্তু বেশ কিছু দিন পর তিনি যখন রিয়েলিটি শোয়ের বিচারকের ভূমিকায় এলেন, তখন দেখা গেল তাঁর মাথায় ঢেউ খেলছে। আমরা হা হা হো হো করলাম। অনেকে রহস্যটা জানেন, অনেকেই আবার গূঢ় তথ্যটি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন।
এই সত্যটি মৃতসঞ্জীবনী সুধার মতো সাধারণ মানুষের জীবনে প্রায়ই বর্ষিত হচ্ছে। কেশবিরল পাত্রের বিয়ের চিন্তা নেই। ইন্দ্রলুপ্তে প্রেম নিয়েও শঙ্কা নেই। কিছু কড়ি ফেললেই আপনি বাহারি চুলের অধিকারী হতে পারবেন। হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টেশন পদ্ধতিতে আপনার এই স্বপ্ন পূরণ হতে পারে।
হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টেশন কাকে বলে
প্রথমে মাথার পিছন থেকে চুল সমেত ত্রিকোণ আকৃতির চামড়া কাটা হয়। এই ত্রিকোণ আকৃতির ত্বকটিকে আবার ছোট অংশে কাটা হয়। এমন ভাবে কাটা হয়, যাতে প্রতিটি অংশে দু’তিনটে মাত্র চুল থাকে। এর বেশি নয় কিন্তু। এই বার যেখানে টাক, সেইখানে প্রতিটি অংশ বসিয়ে দেওয়া হয়। এই বসানো বা পুনঃস্থাপন খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি স্থায়ী। অর্থাৎ ওটি সারা জীবনের মতো স্থায়ী ঠিকানা করে নিল। এক বার হয়ে গেলেই আর দ্বিতীয় বার সম্ভব নয়। ঠিক দিকে এবং ভাল ভাবে বসানো নির্ভর করে ডাক্তারের দক্ষতার ওপর। এই কারণে এক জন দক্ষ ও অভিজ্ঞ ডাক্তারের প্রয়োজন। প্রথমে কয়েক দিনের জন্য সমস্ত মাথা জুড়ে একটি হেয়ার ব্যান্ড পরানো হয়। ব্যান্ড খুলে দেবার সাত দিন পর থেকে শ্যাম্পু করা যায়। |
|
পদ্ধতি
হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টেশন সাময়িক ভাবে অজ্ঞান করে করা হয়, খুব অল্প ব্যথা হয়। এক দিনে পাঁচশো থেকে দু’হাজার পর্যন্ত চুল বসানো সম্ভব হয়। এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়। সাধারণত কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না। চুলের নিজস্ব রং বজায় থাকে। সাধারণ চুল যে ভাবে বৃদ্ধি পায়, এই প্রতিস্থাপিত চুলও একই ভাবে বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ, মাসে এক বার আপনার নাপিত-দর্শন অটুট থাকবে।
মাথায় সম্পূর্ণ টাক হলে এই পদ্ধতিটি আপনার জন্য সম্ভব হবে না। পাশে বা মাথার পিছন দিকে অল্প পরিমাণ চুল থাকতে হবে। কারণ, আপনার চুল নিয়েই পুরো মাথায় বসানো হবে। সুতরাং পুরো টাকের জন্য অপেক্ষা না করে অল্প চুল থাকতেই লাইন দিন। অল্প বয়স থেকে বয়স্ক সিটের দিকে এগিয়ে যাবেন, এটা ভাল কথা নয়।
যাঁদের অল্প পাকা চুল আছে, তাঁদের চুল প্রতিস্থাপিত হবে, কিন্তু পাকা চুল বেরোবে। আপনি যদি ভাবেন, এত টাকা খরচ করলাম, সুতরাং নতুন চুলটি কুচকুচে কালো হবে, তা হলে ভুল ভাবছেন। যাঁদের মাথায় শুধুমাত্র হালকা সিঁথি আছে, তাঁরাও করাতে পারবেন। মাথার যে কোনও অংশে অল্প চুল থাকলেই এটি সম্ভব হবে। অনেক মেয়েদের অনেক সময় পুরো মাথায় টাক হয়ে যায়। সিঁথির কাছ থেকে পুরো ফাঁকা হয়ে সম্পূর্ণ টাক হয়ে যায়। তাঁদের জন্য এটি ভাল খবর। অল্প বয়সে টাক হয়ে যাওয়াটি জেনেটিক, অর্থাৎ বংশগত সমস্যা। এখন পূর্বপুরুষদের ওপর রাগ আর থাকবে না।
কয়েকটি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে
• বিজ্ঞাপন দেখে যে কোনও জায়গা থেকে করাবেন না। কোনও প্রতিষ্ঠিত জায়গা থেকেই করাবেন।
• আগে থেকে রক্তের কিছু পরীক্ষা করাতে হবে।
• কোনও দক্ষ ডাক্তারের সাহায্যেই করাবেন। কারণ, এই পদ্ধতিটিতে ডাক্তারের দক্ষতার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
অপারেশনের পর করণীয়
• ওই অংশে একদম সূর্যের আলো লাগাবেন না। সাধারণত অপারেশনের দু’দিন পর থেকেই শ্যাম্পু করা শুরু করা উচিত। নচেৎ ওই অংশে সংক্রমণ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নতুন হেয়ার ফলিক্লগুলো ৭-১০ দিনের মধ্যে ঝরে পড়ে যাবে। কোনও লাভই হবে না। সাধারণত ডাক্তাররাই একটি মেডিকেটেড শ্যাম্পু ব্যবহার করতে বলে দেন।
• দু’তিন মাস পর থেকে নতুন চুলগুলো স্বাভাবিক ভাবে বাড়বে। ছয় থেকে নয় মাস পরে আবার এক মাথা ঘন চুল ফিরে পাবেন। |
|
|
|
|
|