|
|
|
|
|
মাদারস ডে-র দিন পিছন থেকে |
ঝাঁ চকচকে কেতাদুরস্ত কিচেন বানিয়েই আপনার দায়িত্ব শেষ, এটা ভাববেন না যেন।
ঠিক মতো জিনিসপত্র গুছিয়ে না রাখলে অত সাধের জায়গাটি তোলপাড় হতে দু’মিনিটও লাগবে না। |
নতুন বাড়ি বা ফ্ল্যাটে ঢোকার আগে প্রচুর খরচ করে আমরা ড্রইং রুম, বেডরুম সাজাই। কিচেন সাজাতেও অবশ্য খরচ কম করি না। কিন্তু বাড়ির প্রত্যেকটি ঘর প্রতি দিন যে রকম যত্ন নিয়ে গুছিয়ে রাখি, কিচেনের বেলায় কিছুটা হলেও যেন সেই উৎসাহে ভাঁটা পড়ে। কিচেনের ক্ষেত্রে কিন্তু দেখনদারি বিষয়টি তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিচেনের জানলায় কেমন সুন্দর পর্দা টাঙিয়েছেন, বা কিচেন কাউন্টারে কী সুন্দর একখানা ফুলদানি রেখেছেন এ সব এখানে অপ্রয়োজনীয়। যেটা প্রয়োজন, তা হল কিচেন কতটা সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছেন, যাতে কাজের সময় ঠিক জিনিসটা হাতের কাছেই মজুত থাকে, বেশি হাতড়ানোর দরকার না হয়। কারণ, যত বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করবেন, তত জিনিসপত্র আরও ছড়িয়ে যাবে, আর একটা সময় কিচেনে কাজ করাটাই দুঃসহ হয়ে উঠবে।
কিচেন গোছানোর সময় খুব ছোট ছোট বিষয়গুলোর দিকে নজর দিন। যে কৌটোগুলি প্রতি দিন ব্যবহার হয় না, তাদের যে উঁচু তাকে তুলে রাখতে হয়, এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু তাকের উচ্চতা বেশ অনেকটা হলে প্রয়োজনের সময় চট করে বুঝব কী করে, কোথায় কোন কৌটো আছে? তাকের বাইরে এক টুকরো কাগজে যে ভাবে কৌটোগুলি সাজানো আছে, ঠিক সেই ভাবে পর পর সুন্দর হাতের লেখায় লিখে রাখুন, কোন কৌটোয় কী আছে। এ বার লিস্ট দেখে জায়গা আন্দাজ করে চট করে প্রয়োজনীয় কৌটো পেড়ে নিন। ক্যাবিনেটের পাল্লায় চক দিয়ে লিখতে যাবেন না, দেখতে খারাপ লাগে। সংক্ষেপেও লিখতে যাবেন না, এতে তাড়াহুড়োর সময় বুঝতে পারবেন না। |
|
বাজার করতে গিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসের পাশাপাশি কিছু শৌখিন রান্নার উপকরণ প্রায়ই আমরা কিনে রেখে দিই। মাঝেমধ্যে যেগুলোর দরকার পড়ে। কিন্তু প্রতি দিন ব্যবহার হয় না বলে এগুলি অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের আড়ালে হারিয়ে যায়। তাই ক্যাবিনেট গোছানোর সময় গ্রুপিংয়ের বিষয়টি মাথায় রাখা ভাল। যেমন কেক তৈরির জন্য ভ্যানিলা এসেন্স, গুঁড়োনো চিনি, বেকিং পাউডার, সম্ভব হলে গুঁড়ো চকোলেট এক জায়গায় পর পর সাজিয়ে রাখলে কেক তৈরি সময় উপকরণ খুঁজতে একগাদা সময় নষ্ট হবে না। শুধু রান্নার উপকরণই নয়, অব্যবহৃত বাসনপত্রেরও একই হাল হয়। শৌখিন বাসনপত্র, রান্নার সরঞ্জাম যত্ন করে হয়তো এমন জায়গায় রেখে দিলেন, যা বছরের পর বছর আপনার দৃষ্টির আড়ালেই থেকে গেল। সমস্যা হল, এতে একই জিনিস দুই-তিন বার কিনে ফেলার সম্ভাবনা থাকে। আপনি দোকান থেকে বেছেবুছে একটা চমৎকার চিজ গ্রেটার কিনে আনলেন। কিন্তু দিনকয়েক পরেই আবিষ্কৃত হল যে, বিয়েতে পাওয়া অসংখ্য উপহারের মধ্যে কেউ একটা চিজ গ্রেটার আপনাকে দিয়ে রেখেছিলেন, যা আপনি বেমালুম ভুলে গিয়েছেন। তাই যে জায়গায় আপনি অতিরিক্ত বাসন, রান্নার সরঞ্জাম গুছিয়ে রাখেন, সেখানে মাঝেমধ্যেই খানাতল্লাশি করুন।
কিন্তু রান্নাঘরের উঁচু শেল্ফ-এ যে বাসনপত্র থাকে, তাদের তো আর নিয়মিত ঘাঁটাঘাঁটি করা যায় না। বিশেষ করে যদি কয়েকটি প্লেটের সেট ওপরের তাকে তুলে রেখে দেওয়া হয়, তা হলে পছন্দসই ডিজাইনের প্লেট নামানোর সময় ভীষণ সমস্যা হয়। কারণ, নীচ থেকে ওপরের তাকে রাখা প্লেটের ডিজাইন বোঝা সম্ভব নয়। তা হলে উপায়? প্রত্যেক প্লেটের সেট থেকে একটি করে প্লেট নিয়ে সেটিকে বরং সেটের পাশেই দাঁড় করিয়ে রাখুন। এ বার প্রয়োজনের সময় চট করে পছন্দসই ডিজাইনের প্লেটের সেট তুলে নিতে পারবেন।
রান্নাঘর পরিষ্কারের সময় যে মপ, ব্রাশ বা কিচেন সলিউশন ব্যবহার করছেন, তাদের কোথায় রাখবেন। ভেজা মপ আবার এক জায়গায় জড়ো করেও রাখা যায় না। বিশ্রি গন্ধ বের হয়। রান্নাঘরের সিঙ্কের নীচের অংশটার দিকে এক বার নজর দিন। বেশির ভাগ সময় এই জায়গাটি খালিই পড়ে থাকে। এখানকার দেওয়াল বরাবর একটা রড আটকে দিন। ভেজা মপ এখানে মেলে দিতে পারবেন, ব্রাশ, কিচেন সলিউশন সব কিছু গুছিয়ে রাখার পক্ষেও জায়গাটা আদর্শ। নোংরা কাউন্টার দেখতে মোটেও ভাল লাগে না, তাই না? তা ছাড়া এখান থেকে কিন্তু খাবারের মধ্যেও অনেক রকম জীবাণু মিশতে পারে। তাই, কিচেন কাউন্টার প্রতি দিন মোছা উচিত। কাউন্টার মোছার জন্য যে কাপড়ের টুকরোটি ব্যবহার করছেন, প্রত্যেক দিন সেটিকে গরম জলে, সাবান দিয়ে কেচে ভাল করে শুকিয়ে নিন। নয়তো কাউন্টারে পড়ে থাকা খাবারের টুকরো, তেল ইত্যাদি এই কাপড়ে লেগে থাকবে, আর কাপড়টির ভাঁজগুলি পোকামাকরের ভারী পছন্দের জায়গা হয়ে উঠবে। |
|
|
|
|
|