আঁধার হলেই... পাটিকাবাড়ি |
সন্ধ্যা নামলেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের
দখল নেয় সমাজবিরোধীরা
নিজস্ব সংবাদদাতা • নওদা |
|
|
নামেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সন্ধে গড়িয়ে গেলে একান্ত প্রয়োজন না হলে সেখানে যাওয়ার কথা অবশ্য ভাবেন না স্থানীয় গ্রামবাসীরা কেনই বা ভাববেন, আশপাশের শিবনগর, নওদা, চণ্ডীপুরের মতো গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, ‘সন্ধে থেকেই তো ওই এলাকা সমাজবিরোধীদের মুক্তাঞ্চল। ও পথ আর কে মাড়ায়!’ মাস খানেক আগে স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরেই এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ মেলার পরে সে জায়গা আরও যেন ‘অগম্য’ হয়ে পড়েছে স্থানীয়দের কাছে।
তা ছাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা বলতেও তো ‘নেই রাজ্য’। সকাল থেকে লম্বা লাইন অবশ্য নিত্য ঘটনা। তবে হাসপাতালে মেলে না প্রায় কোনও ওষুধই। ফার্মাসিস্ট নেই। ঝাড়ুদারের খোঁজ নেই দীর্ঘ দিন। আর যাঁদের ভরসায় সেখানে যাওয়া সেই চিকিৎসকেরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন কালেভদ্রে। এটাই বাস্তব চেহারা নওদার পাটিকাবাড়ি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাত বাড়লেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংলগ্ন ফাঁকা মাঠে ভিড় জমায় সমাজবিরোধীরা। মদ-গাঁজা তো রয়েছেই। সঙ্গে বিভিন্ন অসামাজিক কাজকর্মও চলে বলে অভিযোগ। মার্চে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পিছনের একটি কলা বাগান থেকে জাকির হুসেন (৩৬) নামে এক ব্যক্তির দগ্ধ দেহও উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
সদর মহকুমাশাসক অধীর বিশ্বাসও এ ব্যাপারে ওয়াকিবহাল। তিনি বলেন, “দুষ্কৃতীদের আনাগোনা ওই এলাকায় একটা বড় সমস্যা। পুলিশের ব্যাপারটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার।”
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক মেহেবুব হুসেন বলেন, “ফার্মাসিস্ট নেই। সুইপারও নেই। ওষুধ মিলছে না। রাতে এখানে কেউ থাকে না। পাশে ১০ শয্যার একটি ভবন তৈরি হচ্ছে। জানি না তখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চেহারা ফিরবে কিনা!” তাঁর কথাতেও অনিশ্চয়তা।
নওদার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাদিত্য বক্সি বলেন, “কর্মীর সমস্যা আছে। ওষুধ সরবরাহ নেই ঠিকই। এতে তো আমাদের কিছু করার নেই। ওষুধের পেলেই আমরা ওই কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিই।” আর নিরাপত্তা? “স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিরাপত্তা বাড়ানোর ব্যাপারে প্রাশাসনকে জানিয়েছি” সংক্ষিপ্ত জবাবে দায় সারছেন তিনি। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ‘হাল’ মেনে নিয়েছেন পাটিকাবাড়ি পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান সুমারি দাস। বলেন, “এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। আগে এখানে কোনও দেওয়াল ছিল না। আপাতত সেটা খাড়া করা হচ্ছে। দেখি তাতে ফল মেলে কিনা।” |