মেদিনীপুর মেডিক্যাল
চার চিকিৎসকের হঠাৎ বদলির নির্দেশে আশঙ্কা
কই সঙ্গে এক বিভাগের ৪ চিকিৎসকের বদলির নির্দেশে বিপাকে পড়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ। বদলির এই নির্দেশ এসেছে আবার শিশুবিভাগের মতো জরুরি একটি বিভাগে। চার-চার জন শিশু চিকিৎসককে এক সঙ্গে ছেড়ে দিতে হলে গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগটিই অচল হয়ে পড়বে।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, এই সময়ে রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে এমসিআইয়ের (মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া) পরিদর্শন চলছে। সেই সব কলেজের অনেকগুলিতেই প্রয়োজনীয় সংখ্যায় চিকিৎসক নেই বলে অভিযোগ। এমসিআই-এর পরিদর্শনের সময়ে সেই সব কলেজকে ‘কনে সাজানো’ অবস্থায় দেখাতেই তড়িঘড়ি করে অন্য জায়গা থেকে চিকিৎসক তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। যার প্রভাব পড়ছে মেদিনীপুর মেডিক্যালেও। এর আগেও মেদিনীপুর মেডিক্যালের জেনারেল মেডিসিন, অর্থোপেডিক-সহ একাধিক বিভাগ থেকে চিকিৎসকদের অন্যত্র বদলি করা হয়েছিল। তাতেও সমস্যা দেখা দিয়েছিল। যদিও পরে তাঁদের মেদিনীপুরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ শুদ্ধধন বটব্যাল বলেন, “এমসিআই পরিদর্শনের জন্য আগে যাঁদের বদলি করা হয়েছিল তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সকলেই আবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজেই কাজে যোগ দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রেও (শিশু-বিভাগের ৪ চিকিৎসক) কিছু দিনের জন্যই বদলি করা হচ্ছে।”
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগে মোট ৯ জন চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে এক জন প্রোফেসর, দু’জন অ্যাসোসিয়েট প্রোফেসর, চার জন অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোফেসর এবং ২ জন আরএমও (রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার)। এর বাইরে ১২ জন হাউসস্টাফ রয়েছেন। এই পরিকাঠামোয় শিশু-বিভাগ চালাতে এমনিতেই হিমসিম খাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। কারণ, হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আউটডোরে গড় রোগীর সংখ্যা ১২০ জন। যে ওয়ার্ডে সদ্যোজাত থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত বয়সের বাচ্চাদের রাখা হয়, সেখানেও গড়ে ৩৫-৪০ জন ভর্তি থাকে। আর যে ওয়ার্ডে ১০-১২ বছরের বাচ্চাদের রাখা হয়, সেখানে গড়ে ভর্তি থাকে ৮০ জনের মতো। এর বাইরে হাসপাতালে প্রতি দিনই সিজার বা সাধারণ প্রসব হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে সিজারের সময়ে অপারেশন থিয়েটারেও শিশু-বিশেজ্ঞদের যেতে হয়। আবার প্রসবের পরেই মা ও ছেলেকে যে ওয়ার্ডে রাখা হয়, সেখানেও বাচ্চাদের দেখার জন্য ‘কল’ আসে। রয়েছে নিওনেটাল ইউনিট ও আইসোলেশন বিভাগ। যে দু’টি ওয়ার্ডেও বাচ্চারা ভর্তি থাকে। এই ওয়ার্ডগুলি বিভিন্ন জায়গায়। রোগী দেখার পাশাপাশি রয়েছে নানা ধরনের প্রশাসনিক কাজ। নানা রকম ব্যস্ততা। এরই মধ্যে চার-চার জন চিকিৎসককে অন্যত্র যেতে হলে (যদি সাময়িকও হয়), গুরুতর সমস্যা তৈরি হওয়ার আশঙ্কা। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভাগীয় প্রধান মৌসুমী নন্দীর বদলির নির্দেশ এসেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। অ্যাসোসিয়েট প্রোফেসর তারাপদ ঘোষ ও দুই অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোফেসর সায়ন চট্টোপাধ্যায় ও পি সি মণ্ডলকে বদলি করা হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। তার আগে এ ভাবেই মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় বদলি করা হয়েছিল বিভাগের আর এক অ্যাসোসিয়েট প্রোফেসরকে। নতুন করে চার জনকে বদলির নির্দেশের সঙ্গে বৃহস্পতিবার অবশ্য ওই অ্যাসোসিয়েট প্রোফেসরকে মেদিনীপুরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাইরেক্টর অব মেডিক্যাল এডুকেশনকে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে, যাতে এক সঙ্গে চার জনকে বদলি করা না হয়। সে ক্ষেত্রে কেবল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পরিষেবাই সঙ্কটে পড়বে এমন নয়, জেলা জুড়েই তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা। মেডিক্যাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার কলকাতায় স্বাস্থ্য দফতরের একটি বৈঠক ছিল। যে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষও। সেখানেও তিনি এক সঙ্গে চার চিকিৎসককে বদলি করলে বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। স্বাস্থ্য দফতরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অবশ্য এখনও জানা যায়নি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.