কিছু ডাক্তারের সাহায্যেই বাজারে নিষিদ্ধ ওষুধ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
অর্থ এবং অন্য সুযোগ-সুবিধার ভিত্তিতে এক শ্রেণির চিকিৎসক এবং ড্রাগ কন্ট্রোলের এক শ্রেণির কর্তার সঙ্গে যোগসাজস করে বিভিন্ন ওষুধ সংস্থা বাজারে নিষিদ্ধ ওষুধ ছড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল ড্রাগ অ্যাকশন ফোরাম। ফোরামের তরফে চিকিৎসক দীপঙ্কর সেনগুপ্ত শুক্রবার বলেন, নিষিদ্ধ ওষুধ বিক্রির বিরুদ্ধে ড্রাগ কন্ট্রোল কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আবার ওই সব ওষুধের নাম প্রেসক্রিপশনে লিখতে হাত কাঁপছে না চিকিৎসকদের অনেকেরই। দীপঙ্করবাবুর আক্ষেপ, “নিষিদ্ধ ওষুধের তালিকা থাকা সত্ত্বেও তাদের ব্যবহার বন্ধ করছেন না অনেক চিকিৎসকই। অনেক চিকিৎসককে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি চাকরের মতো ব্যবহার করছে।”
দীপঙ্করবাবুর দাবি, যখনই নিষিদ্ধ ওষুধ নিয়ে ড্রাগ অ্যাকশন ফোরাম কোনও আন্দোলন করেছে, চিকিৎসকরা সচেতন হয়েছেন। সতর্ক হয়েছে ওষুধ সংস্থাগুলিও। এক সময়ে বিভিন্ন ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন খতিয়ে দেখা শুরু করেছিল ফোরাম। ফোরামের সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকরা বিশেষজ্ঞ নন এবং কোনও ওষুধকে নিষিদ্ধ বলে চিহ্নিত করার এক্তিয়ার তাঁদের নেই এই দাবি তুলে ওষুধ সংস্থাগুলি আদালতের দ্বারস্থ হয়। নানা কারণে এখন ফোরামের আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন দীপঙ্করবাবু।
এ দেশে নিষিদ্ধ ওষুধের রমরমা তো চলছেই। এ ছাড়াও রোগীদের না জানিয়ে চিকিৎসকদের একাংশের মাধ্যমে ওষুধ সংস্থাগুলি নতুন ওষুধের নমুনা পরীক্ষা চালায় বলেও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করেছেন একটি নামী ওষুধ সংস্থার প্রাক্তন কর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। দেবাশিসবাবু বলেন, “গত ১৩ মার্চ রাজ্যসভায় একটি প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক জানায়, ২০০৯ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে এই নমুনা পরীক্ষার জেরে ১ হাজার ৭৪৩ জন রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। এই ‘ট্রায়াল’ বা নমুনা পরীক্ষা যাদের উপর করা হয়, তাদের মধ্যে শিশু, বৃদ্ধ এমনকী মানসিক রোগীও আছে।” ওষুধের গুণাগুণ নিয়ে যাঁরা আন্দোলন করেন, তাঁরা গোটা বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি করেছেন। এমনই এক ফার্মাকোলজির অধ্যাপক স্বপন জানা বলেন, “চিকিৎসকদের একাংশ এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়াটা খুবই দুর্ভাগ্যের। অবিলম্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হওয়া জরুরি।” |