তুন ওষুধকে বাজারে বিক্রির ছাড়পত্র দিতে কী ধরনের দুর্নীতি হয়, তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের নির্দেশ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ। ওই তদন্তের জন্য শুক্রবার একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। মন্ত্রক সূত্রের খবর, ওষুধের ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ওষুধ মান নিয়ন্ত্রক সংস্থার (সিডিএসসিও) ভূমিকা খতিয়ে দেখবে তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি।
বাজারে যে সব ওষুধ ছাড়া হয়, তাদের গুণমান বিচারের দায়িত্ব সিডিএসসিও-র। কিন্তু এই সরকারি সংস্থাটির ভূমিকা নিয়েই সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে প্রশ্ন তুলেছে খোদ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সিডিএসসিও-র ‘কড়া নজরদারির’ মধ্যেও যে তাদেরই কিছু কর্মী-অফিসার এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একাংশের সঙ্গে ওষুধ সংস্থাগুলি মিলে ‘অবৈধ চক্র’ তৈরি করেছে, রিপোর্টে এই মন্তব্যও করে স্থায়ী কমিটি। যে সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দিকে তারা আঙুল তুলেছে, তাঁদের অধিকাংশই দেশের বিভিন্ন নামী হাসপাতালের অধ্যাপক কিংবা বিভাগীয় প্রধান। এই দলে কলকাতার তিনটি মেডিক্যাল কলেজের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও রয়েছেন। এঁদের সকলের বিরুদ্ধে মেডিক্যাল কাউন্সিলে অভিযোগ জানানো এবং তদন্তের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
কমিটির রিপোর্ট যে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিচার করছে, তা বোঝাতে এ দিন গুলাম নবি আজাদ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছেন। তাতে রয়েছেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর অধিকর্তা ভি এম কাটোচ, ন্যাশনাল ব্রেন রিসার্চ সেন্টারের প্রধান পি এন টন্ডন এবং লখনউয়ের সঞ্জয় গাঁধী পোস্ট গ্রাজুয়েট ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এর অধিকর্তা এস এস অগ্রবাল। তাঁদের দু’মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকে জমা দিতে বলা হয়েছে।
কী দেখবে
ওষুধের গুণাগুণ পরীক্ষার পদ্ধতি কতটা বিজ্ঞানসম্মত
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ছাড়া নতুন ওষুধ ছাড়পত্র পায় কি না
সিডিএসসিও, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, ওষুধ কোম্পানি কার দায় কতটা
ওষুধের গুণাগুণ পরীক্ষার মান বাড়াতে পরামর্শ
সিডিএসসিও-র কাজের উন্নতির পথ নির্ধারণ
সংসদীয় কমিটি কয়েক জন চিকিৎসকের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁদের বিরুদ্ধে মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই), সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিয়েছে। তার ভিত্তিতে আইএমএ তাদের সদস্য সব চিকিৎসককে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সংসদীয় কমিটি যে সব চিকিৎসকের নাম উল্লেখ করেছে, তাঁদের মতো চিঠি যাতে ভবিষ্যতে কেউ না লেখেন, সে কথাই সকলকে জানিয়ে দেবে আইএমএ।
সংসগঠনের সভাপতি রামদয়াল দুবে পুরো দায়টাই চাপিয়েছেন সিডিএসসিও-র ঘাড়ে। বলেছেন, “যাঁদের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করার কথা (সিডিএসসিও), তাঁরা নিজেদের দায় এড়াতে চিকিৎসকদের হাড়িকাঠে তুলছেন। তৃতীয় দফার ট্রায়াল ছাড়া শুধু কয়েক জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের চিঠির ভিত্তিতে তো ওষুধ বাজারে আসতে পারে না। বিষয়টির সিবিআই তদন্ত প্রয়োজন।” এ ব্যাপারে এমসিআই কী করছে? সংস্থার এথিকাল কমিটির সদস্য অরুণ বল শুক্রবার বলেন, অভিযুক্ত চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন যে রাজ্য থেকে হয়েছে, সেখানকার মেডিক্যাল কাউন্সিল বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। ছ’মাসের মধ্যে যদি তারা কোনও ব্যবস্থা না নেয় এবং তার পরে যদি কেউ দিল্লিতে এমসিআই-এর কাছে অভিযোগ করে, তা হলে এমসিআই হস্তক্ষেপ করতে পারে।
এমসিআইয়ের রাজ্য শাখার চেয়ারম্যান ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কিছু করা সম্ভব নয়। আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করলে নিশ্চয়ই তদন্ত করে দেখব।”
রাজ্য সরকার এ বিষয়ে কী করছে? রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেন্দ্র যদি আমাদের বিষয়টি জানায়, তা হলে অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। তা না হলে এ বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.