বাড়তি নম্বরে মেধার মূল্য কমারই আশঙ্কা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যের দুর্গম ও উপদ্রুত এলাকার হাসপাতালে যে-সব চিকিৎসক কাজ করেন, তাঁদের বাড়তি কিছু দেওয়ার পক্ষে কলকাতা হাইকোর্টও। কিন্তু তারা মনে করে, বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে স্নাতকোত্তর পাঠক্রমে ভর্তির পরীক্ষায় তাঁদের বাড়তি ৩০ নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা হলে মেধার মূল্যই কমবে। সেই সঙ্গেই হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, এই ব্যাপারে রাজ্য সরকার যে-রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে আদালতের কোনও প্রশ্নেরই জবাব মেলেনি। ‘দুর্গম ও উপদ্রুত’ এলাকার হাসপাতালে কাজ করায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের এমডি এবং এমএস পাঠ্যক্রমে ভর্তির ক্ষেত্রে বাড়তি ৩০ নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই নিয়ে চিকিৎসক শিবিরও দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে। হয়েছে মামলাও। শুক্রবার শুনানি চলছিল বিচারপতি প্রতাপ রায় ও বিচারপতি সুবল বৈদ্যের ডিভিশন বেঞ্চে। বিচারপতি রায় বলেন, দুর্গম এলাকার চিকিৎসকদের জন্য সরকার অতিরিক্ত বেতনের ব্যবস্থা করতে পারে। কিন্তু মেধার সঙ্গে সমঝোতা কখনওই মঙ্গলজনক হতে পারে না। ‘দুর্গম ও উপদ্রুত’ এলাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিপোর্ট তলব করেছিল ডিভিশন বেঞ্চ। স্বাস্থ্য দফতর ২০০ পাতার রিপোর্ট দেয়। বিচারপতি রায় বলেন, তিনি যা জানতে চেয়েছেন, ওই রিপোর্টে তার কিছুই নেই। বিচারপতি জানতে চান, কোন নির্দেশবলে এবং কোন সংজ্ঞা মেনে এবং কী রকম বাস্তব পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? রিপের্টে তার জবাব নেই। অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্রের কাছেও এই বিষয়গুলি জানতে চান বিচারপতি। অনিন্দ্যবাবু জানিয়ে দেন, তিনি বিষয়টি গভীর ভাবে জানেন না। ডিভিশন বেঞ্চ সোমবারের মধ্যে রিপোর্ট দিয়ে স্বাস্থ্য দফতরকে বিস্তারিত ভাবে সব জানানোর নির্দেশ দেয়।
কয়েক জন আবেদনকারীর আইনজীবী সপ্তাংশু বসু বলেন, সরকারি চিকিৎসকদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হচ্ছে। দুর্গম বা উপদ্রুত এলাকায় কে কাজ করবেন, তা সেই চিকিৎসক ঠিক করেন না। ঠিক করে স্বাস্থ্য দফতর। আইনজীবী রাজর্ষি হালদার বলেন, যে-সৈনিক সিয়াচেনে কাজ করছেন, দুর্গম এলাকায় কাজ করছেন বলে তাঁকে কম্যান্ডার করে দেওয়া যায় না। তাঁকে অতিরিক্ত বেতন বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। |