একশো দিনের কাজে পিছিয়ে জলপাইগুড়ি, উদ্বেগে প্রশাসন
কশো দিনের কাজ প্রকল্পে বছরে গড়ে কাজ হয়েছে মাত্র ২ দিন। কোথাও ৪ দিন। কোথাও মেরেকেটে কাজের দিন সংখ্যা ৬। জলপাইগুড়ি জেলার অন্তত ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বছরে গড়ে ১০ দিনও কাজ হয়নি। এই গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে প্রশাসনের তরফে চিহ্নিত করে, বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মহাত্মা গাঁধী জাতীয় কর্মসংস্থান তথা ১০০ দিনের প্রকল্পে গত তিন মাসে রাজ্য সরকার রেকর্ড করেছে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত তিন মাসে রাজ্যে গড়ে ৩২ দিন কাজ হয়েছে। অথচ জলপাইগুড়ি জেলায় এমনও গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে যেখানে বছরভর গড়ে কাজ হয়েছে মাত্র ২ দিন। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে জেলা প্রশাসনও। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতে গত আর্থিক বছরে গড়ে কাজ হয়েছে ২ দিন, কালচিনির চুয়াপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজ হয়েছে মাত্র ৪ দিন। এছাড়াও তুরতুরিখন্ড, ওদলাবাড়ি, চেংমারি, পদমতি ১ ও ২, ডাবগ্রাম ২, খারিজা বেরুবাড়ি-সহ দশটি গ্রাম পঞ্চায়েত একশো দিনের কাজ প্রকল্পের কাজের দিনের গড় ১০ দিনের কম রয়েছে। তবে জেলার সর্বত্রই এমন চিত্র নয়। গত আর্থিক বছরে জেলায় গড়ে কাজ হয়েছে ২৬ দিন। জেলার বেশ কিছু গ্রামপঞ্চায়েতে জেলার গড় কাজের দিন সংখ্যারও বেশি কাজ হয়েছে। যেমন সদর ব্লকেরই নন্দনপুর বোয়ালমারিতে গড়ে কাজ হয়েছে ৫৩ দিন। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, যে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে সবচেয়ে কম কাজ হয়েছে সেখানে বিশেষ কিছু সমস্যা রয়েছে। শহর লাগোয়া এলাকা হওয়ায় কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতে কম কাজ হয়েছে। তবে অভিযোগ, রাজনৈতিক সমস্যা ও গ্রামের গরীব মানুষদের ডেকে একশো দিনের কাজে সামিল করার উদ্যোগের অভাবেও কিছু এলাকায় কম কাজ হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলায় এই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা নোডাল আধিকারিক সমীরন মণ্ডল বলেন, “১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যেখানে কাজের সংখ্যা খুবই কম। বিশেষ সমস্যার কারনেই এই পরিস্থিতি হয়েছে। তবে আমরা গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ-সহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বৈঠক করে উদ্যোগ নিয়েছি। এই এলাকাগুলিতে যে কাজের প্রয়োজন রয়েছে। সেই কাজগুলিই বেশি করে একশো দিনের প্রকল্পে করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” জেলায় ভালো কাজের তালিকার শীর্ষে থাকা মালবাজার ব্লকের রাঙামাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গত বছরে একশো দিনের কাজে ৪ কোটি টাকার বেশি খরচ করা হয়েছে। জেলার ১৪৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে গত বছরে এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা। গ্রাম পঞ্চায়েতে টাকা খরচের গড় ১ কোটি ত্রিশ লক্ষ। সেখানে মালবাজার ব্লকেরই ক্রান্তি গ্রাম পঞ্চায়েতে খরচ হয়েছে মাত্র ২৩ লক্ষ টাকা, ময়নাগুড়ির পদমতি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে খরচ হয়েছে মাত্র ২ লক্ষ ৩৪ হাজার টাকা। এই পিছিয়ে পড়া গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে ডান-বাম সব দলেরই দখলে থাকা পঞ্চায়েতই রয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে সর্বদল বৈঠক করে আগামী বছরে যাতে ভালোভাবে কাজ করানো যায় তার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কাজের দিনের নিরিখে সর্বনিম্ন বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাহী আধিকারিক সন্দীপ সরকার বলেন, “কিছু কাজের হিসেব এখনও শেষ হয়নি। সবটা শেষ হলে কাজের দিনের সংখ্যা কিছু বাড়বে। কাজে কিছুটা আর্থিক সমস্যা ছিল। কিছু রাজনৈতিক সমস্যাও পোহাতে হয়েছে।” পদমতি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুশেন চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই প্রকল্পে তো সঠিক সরকারি গাইডলাইন পাইনি। রাজনৈতিক কারণেই প্রকল্পের কাজ করাতে গিয়ে বারবার বাধা পেয়েছি। ব্লক অফিসে সমস্যাটি জানিয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.