পানীয় জল প্রকল্পের জল ব্যবহার করেই জলের ট্যাঙ্ক নির্মাণ করার অভিযোগ উঠল ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। পুরুলিয়ার কাশীপুরে জল প্রকল্পের সম্প্রসারণের কাজ নিয়ে প্রশাসনের কাছে এই মর্মে লিখিত অভিযোগও করেছেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের ক্ষোভ, এর ফলে এলাকায় পানীয় জলের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এই ‘জলচুরি’ বন্ধ করার জন্য তাঁরা প্রশাসনিক উদ্যোগের দাবিও তুলেছেন। রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক প্রণব বিশ্বাস বলেন, “অভিযোগ পেয়েই বিষয়টি কাশীপুরের বিডিওকে খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।” ট্যাঙ্ক নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সাধন গড়াই অবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি।
কাশীপুরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পানীয় জল প্রকল্পটি প্রায় ৪০ বছর আগে তৈরি হয়। কাশীপুর পঞ্চায়েত এলাকায় জল সরবরাহের জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল ৩০ হাজার গ্যালন জলধারণের ক্ষমতা বিশিষ্ট একটি ট্যাঙ্ক। কাশীপুর ব্লক সদর এলাকায় ওই প্রকল্প থেকে আগে জল সরবরাহ করা হত। বর্তমানে কাশীপুর ব্লক সদর-সহ সংলগ্ন ন’পাড়া, বাথানট্যাড়, কল্লোলী রামবনী, বেলডাঙ্গার মতো ৮-৯টি গ্রামে ওই প্রকল্প থেকে জল সরবরাহ করা হয়। ফলে এখন জলের চাহিদাও বেড়ে গিয়েছে। তাই জল প্রকল্পের সম্প্রসারণ করা জরুরি হয়ে পড়ে। সেই প্রেক্ষিতেই ৫০ হাজার গ্যালনের নতুন ট্যাঙ্ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, ওই ট্যাঙ্ক নির্মাণের কাজেই জল প্রকল্পের ‘জল চুরি’ করা হচ্ছে।
কাশীপুরের কংগ্রেস নেতা স্বপন চৌধুরীর অভিযোগ, “কাশীপুরের কাছে ন’পাড়া মৌজায় ৫০ হাজার জলধারণ ক্ষমতা বিশিষ্ট ওই ট্যাঙ্ক নিমাণ করা হচ্ছে। সেই নির্মাণ কাজে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে পানীয় জল প্রকল্পের জল ব্যবহার করছেন ঠিকাদার।” কংগ্রেসের দাবি, এর ফলে এলাকায় জল সরবরাহের মাত্রা কমে গিয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় কম জল পাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্বপনবাবু বলেন, “একে গরমের জন্য জলের চাহিদা বেড়েছে। তার উপর ‘জল চুরি’ হওয়ায় জলের তীব্র সঙ্কট শুরু হয়েছে। প্রশাসন পদক্ষেপ না করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে।”
যদিও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সাধনবাবুর দাবি, “২-৩ মাস আগে ট্যাঙ্ক নির্মাণের সময় প্রকল্পের জল ব্যবহার করতাম। পরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকেরা ওই জল নিতে বারণ করায় এখন পাশের পুকুর ও কুয়োর জল ব্যবহার করছি।” মহকুমাশাসক জানান, অভিযোগ পেয়ে তিনি জনস্বাস্থ্য করিগরি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তাঁরা জানান, আগেই ওই ঠিকাদারকে প্রকল্পের জল নির্মাণ কাজে ব্যবহার না করার জন্য মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছিল। এ বার লিখিত নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। |