নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর ও বনগাঁ |
উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায় কংগ্রেস নেতা বাপি চৌধুরীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত দুষ্কৃতী নটনারায়ণ ঘোষ ওরফে যিশুকে গ্রেফতার করল শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে শ্রীরামপুরের গোস্বামীপাড়া এলাকা থেকে ১৪ কেজি গাঁজা-সহ তাকে ধরা হয়। শুক্রবার চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই পুলিশ ওই দুষ্কৃতীকে খুঁজছিল। তার নামে তিনটি ঘটনায় আদালতের ওয়ারেন্ট ছিল।”
বিভিন্ন ধরনের সমাজবিরোধীমূলক কাজের সঙ্গে যিশু জড়িত বলে তদন্তকারী অফিসারদের দাবি। পুলিশের খাতায় তার নামে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে লাল রঙের একটি মোটর বাইকে চেপে শ্রীরামপুর স্টেশনের অদূরে গোস্বামীপাড়ায় আসে যিশু। গাঁজা বিক্রির উদ্দেশ্য ছিল তার। |
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাকে ধরে ফেলে। আটক করা হয়েছে বাইকটি। বাপি চৌধুরী খুনের পাশাপাশি শ্রীরামপুরে দু’টি ডাকাতির মামলায় আদালত যিশুর নামে ওয়ারেন্ট জারি করে।
২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসে হাবড়ায় একটি রক্তদান শিবিরে বোমা-গুলি নিয়ে হামলা চালায় এক দল দুষ্কৃতী। ঘটনাস্থলেই মারা যান বাপিবাবু। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে খুন হন টিএমসিপি কর্মী রঞ্জিত দাস। এই ঘটনায় সে সময়ে রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল শোরগোল দেখা দেয়। মূল অভিযুক্ত রাজু দাম ‘তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত। কংগ্রেস ও তৃণমূলের দূরত্ব বাড়ে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে। পুলিশের দাবি, ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক কারণ নয় তোলাবাজি, জুয়া-সাট্টার ঠেকের বখরাই ছিল মূল ইন্ধন।
যিশুই টাকার বিনিময়ে দলবল নিয়ে গিয়ে তাঁকে খুন করে বলে অভিযোগ। তার একাধিক সাগরেদকে এর আগে গ্রেফতার করা হলেও যিশুকে এত দিন বাগে আনতে পারেনি পুলিশ। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের দাবি, ওই ঘটনার পর থেকে তারকেশ্বরে গা-ঢাকা দিয়েছিল ওই দুষ্কৃতী। মাঝেমধ্যে সে শ্রীরামপুরে আসত তোলা তুলতে। কিন্তু বারেবারেই সে পুলিশের জাল কেটে বেরিয়ে যায়। এ দিন থানা থেকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় যিশু অবশ্য সংবাদমাধ্যামের সামনে দাবি করে, হাবড়ার খুনের ঘটনায় সে জড়িত নয়।
হাবরায় জোড়া খুনের ঘটনায় আরও এক জন ধরা পড়া নিয়ে বারাসতের তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, “আরও এক জন গ্রেফতার হল, এটা ভাল। কিন্তু মূল অভিযুক্ত রাজু দাম এখনও অধরা। যা উদ্বেগের।” |