উত্তর কলকাতা: পাইকপাড়া, ব্যারাকপুর
বিটি রোড
বেহাল পথ
বিটা বদলায়নি। বরং আরও খারাপ হচ্ছে বলেই অভিযোগ পথচলতি মানুষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের। অভিযোগ বেহাল রাস্তা ও দখলদারদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাস্থল বিটি রোড।
ব্যারাকপুর পর্যন্ত বিটি রোডের দু’ধারে দখলদারি, আবর্জনার স্তূপ নিয়ে সমস্যায় জেরবার সকলেই। উপরন্তু বিটি রোডে বেশ কিছু জায়গায় বেহাল দশার জেরে বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হয়েছে। অথচ প্রশাসন নির্বিকার বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এ দিকে, মেরামতের কাজ কে করবে তা নিয়েও তৈরি হয়েছে জটিলতা। এক দিকে পূর্ত দফতরের বক্তব্য, মেট্রো প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ চলায় রাস্তা বেশ কিছু জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে বিষয়ে রেল বিকাশ নিগমকে বলা হয়েছে। রেল বিকাশ নিগমের দাবি, জায়গাটি পূর্ত দফতরের অধীন। হস্তান্তর না করা পর্যন্ত পূর্ত দফতরই রাস্তা মেরামতের কাজ করবে।
গোটা বিটি রোড জুড়েই দখলদারির সমস্যা দীর্ঘ দিনের। কোথাও লরি-ম্যাটাডর বা ট্যাক্সির স্ট্যান্ড। কোথাও আবার ইমারতি দ্রব্যের স্তূপ থেকে রকমারি ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি জায়গায় আবর্জনার স্তূপ চলে এসেছে রাস্তার উপরেও। রাস্তার ধার দিয়ে হাঁটাচলার জায়গাও কার্যত দখল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এর উপর আবার রথতলা মোড়, ২৩০ বাসস্ট্যান্ড-সহ পানিহাটি, টিটাগড়, খড়দহের বেশ কিছু জায়গায় রাস্তা ভেঙে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কামারহাটির বাসিন্দা রামপ্রকাশ সাউ বলেন, “মেট্রোর কাজ চলছে। রাস্তা ঘিরে কাজ চলছে। এর উপর খারাপ রাস্তা। যানজট হচ্ছে, পাশাপাশি দুর্ঘটনাও ঘটছে। কিন্তু মেরামত হচ্ছে না।”
ওই রাস্তা দিয়ে রোজ গাড়ি চালিয়ে কর্মস্থলে যান বরাহনগরের বাসিন্দা সিদ্ধার্থ ঘোষ। তিনি বলেন, “যে ভাবে বেশ কয়েকটি জায়গায় রাস্তা ভেঙে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে তাতে গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। সামান্য অসতর্ক হলে দুর্ঘটনার মধ্যে পড়তে হবে।”
পূর্ত দফতরে বিটি রোডের ভারপ্রাপ্ত এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সিদ্ধার্থ মণ্ডল বলেন, “মেট্রো প্রকল্পের প্রাথমিক স্তরের কাজ চলছে। ফলে বেশ কিছু জায়গায় রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। পূর্ত দফতরের তরফে জানানো হয়েছে যে, রেল বিকাশ নিগমই ওই মেরামতের কাজ করুক।”
যদিও রেল বিকাশ নিগমের এক কর্তা দিব্যেন্দু পাল বলেন, “বিটি রোড পূর্ত দফতরের অধীনে। হস্তান্তর না করা পর্যন্ত রেলবিকাশ নিগম সেখানে মেরামতের কাজ করতে পারবে না। ফলে তার আগে মেরামতির কাজ করার কথা পূর্ত দফতরেরই।
কিন্তু দখলদারির সমস্যার কী হবে?
ইতিমধ্যে মেট্রো প্রকল্পের জন্য বিটি রোড সম্প্রসারণের কাজ চলছে। সে কাজ করতে গিয়েও এই দখলদারির জন্য ইতিমধ্যেই সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে মেট্রো-সূত্রে খবর। বাম আমলেও দীর্ঘ দিনের এই সমস্যার সমাধান হয়নি। নতুন সরকারের আমলেও সমাধানের আপাতত কোনও সম্ভাবনা দেখছেন না বাসিন্দারা।
বেলঘরিয়ার বাসিন্দা মনোজ সেনশর্মা বলেন, “রাস্তার অর্ধেক দখল করে নানা কাজ চলছে। দখলমুক্ত করতে পারলে ব্যারাকপুর থেকে শ্যামবাজার আরও কম সময়ে যাতায়াত করা যায়। কিন্তু প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবে তা আজও করা গেল না। ফলে ভোগান্তি সাধারণ মানুষের।”
অভিযোগের জবাবে ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক অজয় পাল বলেন, “মেট্রোর জন্য রাস্তার যে অংশের ক্ষতি হয়েছে তা মেট্রো কর্তৃপক্ষই সারিয়ে দেবে। বাকি অংশের কাজ পূর্ত দফতর করবে।” দখলদারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দখলদারি মুক্ত করা হবে। কিছু দখলদারের সঙ্গে আলোচনা চলেছে।”


ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.