উত্তর কলকাতা
দুর্ভোগ
অনিয়ন্ত্রিত মোড়
কাল সাড়ে দশটা। উল্টোডাঙা থেকে অটোয় শোভাবাজার মেট্রোয় আসছিলেন সল্টলেকের বাসিন্দা শ্রেয়স মিত্র। কিন্তু হাতিবাগান মোড় পার হয়ে হরি ঘোষ স্ট্রিটের মুখে এসে অটোটি হঠাৎ করে ব্রেক কষল। দুরন্ত গতিতে একটি মোটরসাইকেল হরি ঘোষ স্ট্রিট থেকে বেরিয়ে অটোর সামনে চলে এল। চালকের উপস্থিত বুদ্ধিতে অটোটি কোনও রকমে বেঁচে গেল। কিন্তু সমস্যা মিটল না। গাড়ি ও পথচারী সেই ফাঁকে রাস্তা পার হতে থাকে। শুরু হল যানজট। শেষে বিরক্ত হয়ে তিনি হাঁটা শুরু করলেন। শুধু শ্রেয়সবাবুই নন ব্যস্ত সময় এই জায়গায় অনেকেরই এ রকম অভিজ্ঞতা হয়। অভিযোগ, অধিকাংশ সময় চার মাথার এই সংযোগস্থলে ট্রাফিককর্মীর দেখা মেলে না। নেই সিগন্যালও। ফলে ব্যস্ত সময়ে যানজট লেগেই থাকে।
আবার ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ের মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সামনে জোর ব্রেক কষল অভিজিৎ বসুর গাড়ি। কারণ, উল্টো দিকের লেন দিয়ে এই জায়গায় হঠাৎই একটি গাড়ি ইউ-টার্ন নিল। কোনও রকমে দুর্ঘটনা এড়ানো গেল। অভিযোগ, এখানেও অধিকাংশ সময় ট্রাফিককর্মীর দেখা মেলে না। নেই সিগন্যালও। অভিযোগ, এখানে কোনও রকম নিয়মের তোয়াক্কা না করেই বিভিন্ন গাড়ি হঠাৎ ইউ টার্ন নেয়। ফলে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয় থেকে শ্যামবাজারমুখী গাড়ির মুখে পড়ে যায় গাড়িগুলি।
একই অবস্থা রাজবল্লভপাড়া মোড় এবং গিরিশ মঞ্চের কাছের মোড়ে। দু’টি মোড়েই সিগন্যাল রয়েছে। অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, রাজবল্লভপাড়া থেকে শ্যামবাজারমুখী গাড়িগুলি এমন ভাবে ঘুরে দাঁড়ায় যে, সোজা বাগবাজার হয়ে কাশীপুর, বরাহনগর যাওয়ার গাড়িগুলি সিগন্যাল চালু থাকলেও আটকে থাকতে হয়। শুরু হয় যানজট।
এ রকম নানা নিয়ম ভাঙার ছবি উত্তর কলকাতার কয়েকটি রাস্তার মোড়ে প্রায়ই দেখা যায় বলে অভিযোগ। কোথাও তিন মাথার, কোথাও চারমাথার মোড়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ট্রাফিক সিগন্যাল নেই। ট্রাফিক পুলিশেরও দেখা মেলা ভার। ফলে, গাড়ি চলাচলে নিয়ন্ত্রণ থাকে না। পথচারীরাও নিয়ম ভাঙেন। যার ফলে যানজট শুরু হয়। ঘটে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও। স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের অভিযোগ, অধিকাংশ সময়ে ট্রাফিককর্মী থাকে না। প্রাণ হাতে করে মোড় পার হতে হয়। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ট্রাফিক পুলিশ বা সিগন্যাল বসানো দরকার। না হলে যানজট বা দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে না।
অভিযোগ, হাতিবাগান মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যাল থাকলেও নিয়মের তোয়াক্কা না করেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে অটোগুলি লাইন ভেঙে বিপজ্জনক ভাবে ওভারটেক করে। মোড়টি এমনিতেই সঙ্কীর্ণ। ওভারটেকের জন্য যানজট লেগে যায়। ঘটে দুর্ঘটনাও। পথচারী সুচরিতা নন্দী বলেন, “অটো মাঝেমধ্যেই লাইন ভাঙে। ফলে উল্টো দিক থেকে আসা গাড়ি আটকে যায়। যানজট লেগে যায়। রাস্তা পার করতেও সমস্যা হয়। ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটে।”
ডিসি ট্রাফিক দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সব মোড়ে সিগন্যাল বসানো বা ট্রাফিক পুলিশ দেওয়া সম্ভব হয় না। যদি কোথাও সাধারণ মানুষ দাবি জানান, তখন আমরা স্থানীয় স্তরে পরিদর্শন ও আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিই।”


ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.