দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
বিপজ্জনক বাস
দুর্ভোগের আবাসন
দীর্ঘ দিন ধরে অধিকাংশ ঘরের দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। দরজা-জানালা ভেঙে গিয়েছে। অল্প ঝড়-বৃষ্টিতেই বিদ্যুৎ চলে যায়। রয়েছে জলের সমস্যাও। এমনই হাজারো সমস্যায় ভুগছে পিয়ালি টাউন সরকারি আবাসন। অভিযোগ, সমাধানের জন্য বার বার আবেদন জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি। ফলে অধিকাংশ আবাসিকই ক্ষুব্ধ।
পিয়ালি টাউন সরকারি আবাসনটি বারুইপুরের শিল্পতালুক এবং বিডিও অফিস সংলগ্ন এলাকায়। আবাসিকরা জানান, সাতের দশকের শেষের দিকে এই আবাসন তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এক সময়ে আবাসন প্রতিটি ফ্ল্যাটে আবাসিক থাকতেন। কিন্তু নানা সমস্যার জন্য এখন অনেকেই আবাসন ছেড়ে চলে গিয়েছেন।
এই আবাসনের পুরনো বাসিন্দা কণিকা ঘড়ুইয়ের কথায়: “এই আবাসনটির জায়গায় জায়গায় ফাটল ধরে রয়েছে। জানলা, দরজার কাঠে ঘুণ ধরে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে এখানে বাস করছি। নিম্ন মানের মালপত্র ব্যবহারের জন্য এমন হয়েছে।”
আবাসিকরা জানান, এক সময়ে এই আবাসনে আবাসিকদের কমিটি ছিল। সমস্যা হলে কমিটি সমাধানও করত। কিন্তু এখন কমিটি ভেঙে গিয়েছে। পুরনো কমিটির সহসভাপতি নির্মল এলিন বলেন, “এখন আমাদের কোনও কমিটি নেই। নানা ঘরের দরজা-জানলা ভাঙা। দীর্ঘ দিন বিদ্যুৎ এবং জলের সমস্যা রয়েছে। বর্ষায় খুব কষ্ট হয়।” পিয়ালি টাউন সরকারি আবাসনের অ্যালটমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান এবং বারুইপুরের এসডিও আরসাদ হাসান ওয়ার্সি বলেন, ‘‘এই আবাসনের আবাসিকদের বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে এরই মধ্যে আমরা উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
পিয়ালি টাউন সরকারি আবাসনের জায়গায় জায়গায় প্লাস্টার উঠে গিয়ে লোহার রড বেড়িয়ে এসেছে। অনেক ঘরেও প্লাস্টার খসে পড়েছে। অনেক জায়গায় জলের লাইনের পাইপগুলিতেও মরচে ধরে গিয়েছে। কোথাও ভেঙে গিয়েছে। মিটার বক্সে বিদ্যুৎ সংযোগ পলিথিন শিট দিয়ে আড়াল করে রাখা হয়েছে। কোথাও জানলা-দরজা ভেঙে রয়েছে। আবাসন চত্বরের বিভিন্ন জায়গা আগাছায় ভরে গিয়েছে। আবাসিকদের অভিযোগ, এই আবাসন চত্বরে নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা নেই। বর্ষায় আবাসনের রাস্তা দিয়ে চলা যায় না।
বারুইপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের রাহুল ঘোষ বলেন, “পিয়ালি টাউন সরকারি আবাসনের বর্তমানে যা অবস্থা তাতে শুধু মেরামতি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। এই আবাসনের ক্ষেত্রে যাদবপুরের গাঙ্গুলিবাগান আবাসনের মতো পরিকল্পনার প্রয়োজন।” বারুইপুর পশ্চিমের বিধায়ক এবং রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ তৃণমূলের বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই আবাসনের সমস্যা সম্পর্কে শীঘ্রই খোঁজ নেব।”
রাজ্যের আবাসন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “রাজ্য জুড়ে এই ধরনের সব আবাসনগুলি সারানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমাদের একটু সময় লাগবে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.