দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
বিলম্ব
ভাসার আশঙ্কা
প্রথম পর্যায়ের কাজ প্রায় শেষ। কিন্তু এখনও তিনটি পাম্প বসানোর কাজ শেষ হয়নি। ফলে বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এ বর্ষায়ও বেহালায় জল জমবে। এই অঞ্চলে নিকাশি সংস্কারের কাজ কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের (কেইআইপি) অন্তর্গত।
যে খালগুলিতে এই নিকাশির জল পড়বে সেখানে পলি তোলার কাজ চলছে। বেহালা এবং তার আশপাশের অঞ্চলের জল প্রধানত চৌভাগা, মনিখালি এবং কেওড়াপুকুর খালে পড়ে। তিনটি খালই গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত। ফলে জোয়ার-ভাটার সঙ্গে জল ওঠানামা করে।
এই প্রকল্পের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, জোয়ারের সময় তিনটি খালের জলতল বাড়ে। তার উপর প্রচুর বৃষ্টি হলে নিকাশি নালার মাধ্যমে যে জল খালে পড়ে তা বেরোতে পারে না। ফলে জল ব্যাক ফ্লো করে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত করে। কিন্তু ভাটার সময় খালের জলতল নেমে গেলেও ধীরে ধীরে জল বেরোয়।
কেইআইপি-র এক আধিকারিক জানান, সমীক্ষায় দেখা যায় তিনটি খালের মুখে উচ্চ ক্ষমতার পাম্প বসিয়ে বৃষ্টির জল তুলে খালের মাঝে ফেললে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। তাই চৌভাগা, কেওড়াপুকুর ও মনিখালের মুখে একটি করে পাম্প বসানোর সিদ্ধান্ত হয়। এর জন্য মোট খরচ ধরা হয় প্রায় ৯০ কোটি টাকা। কেওড়াপুকুর খালের মাধ্যমে বরো ১১ এবং বরো ১৩-র নিকাশির জল বেরোয়। মনিখালির মাধ্যমে বরো ১৪ ও মহেশতলা এলাকার একাংশের জল বেরোয়। চৌভাগা খালের মাধ্যমে বরো ১০, ১২, ৭ এবং বরো ১১-এর একাংশের জল বেরোয়।
কেইআইপি সিদ্ধান্ত নেয় প্রতি সেকেন্ডে ৭৫০ কিউবিক লিটার জল কেওড়াপুকুরের পাম্প দিয়ে বের হবে। অন্য দিকে, প্রতি সেকেন্ড ১১০০ এবং ৯০০ কিউবিক লিটার জল যথাক্রমে চৌভাগা ও মনিখালি দিয়ে নিগর্ত হবে। কিন্তু অভিযোগ, এর মধ্যে চৌভাগা পাম্পিং স্টেশনের কাজও শেষ হতে বর্ষা পেরিয়ে যাবে। অন্য দু’টি পাম্পের কাজ সময় মতো শেষ হবে কি না তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। যদিও কেইআইপি সূত্রে খবর, চৌভাগা ছাড়া অন্য দু’টি পাম্পিং স্টেশনের কাজ দ্রুত চলছে।
কেন দেরি?
কলকাতা পরিবেশ উন্নয়ন প্রকল্পের এক আধিকারিক জানান, পাম্প বসানোর জন্য ২০০৭-এ একটি সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাদের ২০০৯-এর মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়। কিন্তু সময়মতো কাজ শেষ করতে না পারায় কেইআইপি কর্তৃপক্ষ এই সংস্থাকে বাতিল করে নতুন সংস্থা নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রশাসনিক জটের কারণে নতুন সংস্থাকে দায়িত্ব দিতে কিছু সময় লাগে। ২০১০-এর অক্টোবরে আবার কাজ শুরু হয়।
কলকাতা পুরসভার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কাজ শুরু করতে দেরি হয়েছে ঠিকই। যে সংস্থা এই কাজ করছে তাদের আগামী বর্ষার আগেই এই কাজ শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছি। কাজ যাতে দ্রুত এগোয় তার জন্য কেইআইপি আধিকারিকদেরও দেখাশোনা করতে বলেছি। আশা করছি কাজ সময়মতোই শেষ হবে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.