|
|
|
|
টেন্ডার না ডেকেই কাজ |
খড়্গপুর পুরসভায় দুর্নীতির অভিযোগে সরব সিপিএম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
কংগ্রেসের পর সিপিএম। তৃণমূল পরিচালিত খড়্গপুর পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে এ বার সরব হলেন পুরসভার বিরোধী দলনেতা, সিপিএম কাউন্সিলর অনিতবরণ মন্ডল। তাঁর অভিযোগ, “কাজের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নেই। টেন্ডার ছাড়াই পুরসভায় একের পর এক কাজ হয়ে যাচ্ছে।” গ্রীষ্মে জলকষ্ট দূর করতে খড়্গপুর পুরসভাকে বিশেষ তহবিল থেকে ১ কোটি ৮৪ লক্ষ ৩ হাজার ২৯৮ টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। বরাদ্দ অর্থে শহরে ১৬টি গভীর নলকূপ তৈরির কথা। ইতিমধ্যে কাজ শুরুও হয়েছে। বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, “কাজ শুরু হয়েছে। অথচ এ ক্ষেত্রে টেন্ডার ডাকাই হয়নি। বিষয়টি নিয়ে পুরবোর্ডের মিটিংয়েও কোনও আলোচনা হয়নি।” এই অভিযোগের মুখে খড়্গপুরের পুরপ্রধান জহরলাল পালের সাফাই, “জরুরি বলে একটা কথা আছে! কাজ শুরুর আগে যা যা পদ্ধতি মেনে চলা উচিত, এ ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।” তাঁর ‘যুক্তি’, “জরুরি বলেই স্পেশাল ফান্ডে টাকা এসেছে। এ ক্ষেত্রে কাজ শুরু করতে দেরি হলে শহরবাসীরই সমস্যা। যিনি অভিযোগ করছেন, তাঁর ওয়ার্ডেও একটি গভীর নলকূপ তৈরির কাজ চলছে। আগে প্রতিবাদ করলেন না কেন?”
পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সিপিএম সরব হওয়ায় রেলশহরের রাজনৈতিক মহলেও শোরগোল পড়েছে। কারণ, গত ক’মাস ধরে পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে মূলত দুর্নীতির অভিযোগ তুলছিল কংগ্রেস। বামেরা অপেক্ষাকৃত নীরবই ছিল এত দিন। কংগ্রেস এমনকী বোর্ডের উপর থেকে সমর্থনও প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এমনকী পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে চেয়ে প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন কংগ্রেসের ১৪ জন কাউন্সিলর। যদিও অনাস্থা আনার ক্ষেত্রে প্রদেশ থেকে এখনও ‘সবুজ সংকেত’ আসেনি। এ ব্যাপারে ‘ধীরে চলো’ নীতিই নিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে সিপিএমের তোপ নানা জল্পনা উসকে দিয়েছে। আগামী দিনে কংগ্রেস অনাস্থা আনলে কী বাম-কাউন্সিলররা সেই প্রস্তাবও সমর্থন করবে? সরাসরি জবাব এড়িয়ে বিরোধী দলনেতা অনিতবরণবাবুর বক্তব্য, “গত দু’বছরে পুর-পরিষেবার কী হাল হয়েছে তা শহরবাসী দেখছেন। আমরা চাই এই বোর্ড ক্ষমতাচ্যুত হোক। শহরে উন্নয়নে গতি আসুক।”
শুক্রবার পুরভবনেই সাংবাদিক বৈঠক করেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর কথায়, “আমরা দেখছি, কিছু কিছু কাজ হচ্ছে। কিন্তু, টেন্ডার ডাকা হচ্ছে না। আলো, জল সরবরাহের কিছু সরঞ্জামও কেনা হয়েছে। টেন্ডার হয়নি। বোর্ড মিটিংয়েও এ সব কেনার অনুমতি নেওয়া হয়নি।” সিপিএম কাউন্সিলরের অভিযোগ, দলের ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতেই ‘তৎপর’ তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই এ ক্ষেত্রে কোনও নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। অনিতবরণবাবু বলেন, “সময় মতো পুরবোর্ডের মিটিং পর্যন্ত হয় না। পুরপ্রধান-পারিষদের (সিআইসি) মিটিংও হয় না বললেই চলে। কাজ করার ক্ষেত্রে উদ্যোগ নেই। পদাধিকারীদের মধ্যে সমন্বয় নেই। এ ভাবে কি পুরসভা চলে!” প্রতিবাদে এ বার পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামেরা। সিপিএম দলীয় সূত্রে খবর, ১৩ মে, আগামী রবিবার, খড়্গপুরে বামপন্থী কর্মীদের এক সভা হবে। ওই সভা থেকেই আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি হবে। এর পর প্রতিটি ওয়ার্ডে পথসভা, পদযাত্রা, অবস্থান-বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে বিরোধীদের। আগামী ৪ জুন পুরসভার সামনে জমায়েত করেও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাম-নেতৃত্ব। |
|
|
|
|
|