নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
ভোরে বেরিয়ে পাহাড় দেখে রাতে বাড়ি ফেরা এই ছিল পরিকল্পনা।
কিন্তু পাহাড় দেখার শখ মিটল না চুঁচুড়ার কাপাসডাঙার লক্ষ্মীনারায়ণ পল্লির স্কুলছাত্র হৃদম দত্ত, কৌশিক দাস এবং আনন্দ বিশ্বাসের। বাড়ি থেকে পালিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে তারা ধরা পড়ল এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যদের হাতে। আপাতত তাদের ঠিকানা শিলিগুড়ির দক্ষিণ ভারত নগরের ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হোম।
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা তথা দার্জিলিং জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন মৃণাল ঘোষ বলেন, “তিন জনে যথেষ্ট ঝুঁকি নিয়েছিল। ওদের পরিবারের লোকেরা শনিবার শিলিগুড়িতে পৌঁছবেন আশা করছি। পুলিশের উপস্থিতিতে ওদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।” |
শিলিগুড়িতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হোমে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসা বালকেরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক |
বুধবার ভোরে ঘুম থেকে ওঠার পরে পরিবারের লোকজন যখন তিন জনের খোঁজ শুরু করেছেন, ততক্ষণে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আনন্দ, সপ্তম শ্রেণির হৃদম এবং দশম শ্রেণির কৌশিক ব্যান্ডেল থেকে চড়ে বসেছে নিউ জলপাইগুড়িগামী ট্রেনে। ভেবেছিল, সন্ধ্যার আগেই বাড়ি ফিরবে। তাদের জানাই ছিল না যে ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছতেই রাত হয়ে যায়। ট্রেন থেকে নিউ জলপাইগুড়িতে নেমে তাই তিন জনেই ঘাবড়ে যায়। স্থানীয় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করে ফের কলকাতাগামী দার্জিলিং মেলে উঠে বসে। তখনই তিন পড়ুয়া স্টেশনে কর্মরত ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যদের নজরে পড়ে যায়।
তিন পড়ুয়ার দাবি, এলাকার দশম শ্রেণির দুই ‘দাদা’র পরামর্শে তাঁরা পাহাড় দেখতে ট্রেনে চড়ে। যদিও ওই ‘দাদা’দের নামধাম জানাতে পারেনি। শুক্রবার ওই হোমে হৃদম বলে, “বুঝিনি যে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছতেই রাত হয়ে যাবে। স্টেশনে নেমে ফের শিয়ালদহের ট্রেনে চড়ে বসি। তখন এখানকার দাদারা আমাদের নামিয়ে আনে।” কৌশিক বলে, “এর আগে আমরা তিন জনেই গরফায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। রাতে ফিরেছিলাম। মনে হয়েছিল, এ বারও তেমনই কোথাও একটা যাচ্ছি। আর বাড়িতে না-জানিয়ে বেরোব না।”
শুক্রবার মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি ওই হোমে গিয়ে নিজেকে আনন্দের ‘কাকা’ বলে দাবি করেন। কিন্তু তাঁর হাতে পড়ুয়াদের তুলে দেওয়া হয়নি। মৃণালবাবু বলেন, “আমাদের পদ্ধতি অনুসারে অভিভাবকত্বের প্রমাণ দিতে হবে। চুঁচুড়া পুলিশের মাধ্যমে তিনটি পরিবারকেই খবর দেওয়া হয়েছে।” |