ফের ‘ভুয়ো সংঘর্ষের গল্প’ রটিয়ে ঠান্ডা মাথায় খুনের অভিযোগ উঠল আসাম রাইফেলসের বিরুদ্ধে। এ বার অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ‘তথাকথিত’ সংঘর্ষে নিহত তিন মণিপুরী যুবকের পরিবারের লোকজন। নিহত তিনজনই জঙ্গি জীবন থেকে বেরিয়ে এসে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চেয়েছিল বলে দাবি অভিযোগকারীদের।
আসাম রাইফেলসের বক্তব্য, গত বুধবার উখরুলের চাদোং টাংখুল গ্রামে মফৌ গ্রামের কাছে গুলির লড়াইয়ে মারা পড়ে কেওয়াইকেএল সংগঠনের তিন জঙ্গি নবীন, নিংথোথাম ইঙ্গবোমা ও ইরংবাম রোশন। তাদের কাছ থেকে মেলে কার্বাইন, পিস্তল ও গ্রেনেড । কিন্তু আসাম রাইফেলস আসল ঘটনাকে গোপন করে তিনজনকেই ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে বলে দাবি করেছেন গুলিতে নিহত অন্যতম জঙ্গি নবীনের বাবা লইসরাম শ্যামকিশোর। শ্যামকিশোরের অভিযোগ, যে ছেলেকে নিজের হাতে আসাম রাইফেলসের এক মেজরের হাতে আত্মসমর্পণ করিয়ে ফিরে এসেছিলেন তিনি, তাকেই হত্যা করে এখন জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংসের গল্প রটানো হচ্ছে।
রিমস্-এর মর্গে গত কাল ছেলে নবীন ও তার দুই বন্ধুর মৃতদেহ শণাক্ত করতে এসে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্যামকিশোর। হাসপাতাল চত্বরেই সাংবাদিকদের তিনি জানান, গত একমাস ধরে তাঁর ছেলে নবীন ও নবীনের দুই বন্ধু মূল স্রোতে ফিরতে চাইছিল। তারা কেওয়াইকেএল সংগঠনের দীর্ঘদিনের সদস্য। শ্যামকিশোর তাঁর পরিচিত এক মেজরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানিয়ে দেন যে তাঁর ছেলে-সহ তিন জঙ্গি আত্মসমর্পণ করতে চায়। শ্যামকিশোর দাবি করেন, মেজর হনুমান নামে একজন নিজে গত মঙ্গলবার তাঁদের বাড়ি এসে জানান, রাতেই ছেলেকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। কিন্তু আসাম রাইফেলসের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে ওই রাতে নবীনরা আসেনি। পরদিন বুধবার ভোরে নবীন ও তার দুই বন্ধু আত্মসমর্পণ করে। শ্যামকিশোর সেই সময় নিজে সেখানে হাজির ছিলেন।
শ্যামকিশোর বলেন, “মেজর হনুমান আমায় নিশ্চিন্তে বাড়ি চলে যেতে বলেছিলেন। আশ্বাস দিয়েছিলেন, দুই দিনের মধ্যে নবীন, নিংথোম্বাম ইংগবোমা ও ইরংবাম রোশনকে মূল স্রোতে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু গ্রামবাসীরা আমাকে খবর দেন, আত্মসমর্পণের পরে নবীনদের নিয়ে আসাম রাইফেলসের গাড়ি সদরের দিকে না গিয়ে চাদোং টাংখুলের দিকে চলে গিয়েছে। পরে, মফৌ বাঁধের কাছে জঙ্গি-জওয়ান গুলির লড়াইয়ের খবর রটানো হয়।” ভুয়ো সংঘর্ষে তিন যুবককে হত্যার প্রতিবাদে যৌথ মঞ্চ গড়ে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। আসাম রাইফেল্স অবশ্য এই ঘটনা নিয়ে এখনও কোনও পাল্টা বিবৃতি দেয়নি।
পৃথক ঘটনায় কেএনএফ সংগঠনের সেনাপ্রধান থোংগেইয়ের চূড়চাঁদপুরের বাড়িতে হানা দিয়ে তিনটি একে ৪৭ রাইফেল, আটটি ম্যাগাজিন, ৯৮ রাউন্ড কার্তুজ, চারটি গোলা, একটি ৯ মিলিমিটার পিস্তল ও গুলি ভরা দু’টি ম্যাগাজিন উদ্ধার করেছে আসাম রাইফেলস। |