প্রাক্তন সভাপতি বঙ্গারু লক্ষ্মণের কারাদণ্ডের পরে আদালতের আর একটি রায়ে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ল বিজেপি। বেআইনি খনন মামলায় কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে আজ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেই
আগাম জামিনের আবেদন
জানিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা।
বহু দিন ধরেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব ফিরে পাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন ইয়েদুরাপ্পা। দলের একাংশ তাঁকে ফেরাতে সক্রিয় হলেও সুষমা স্বরাজ-অনন্ত কুমাররা গোড়া থেকেই বিরোধিতা করছেন। ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় লালকৃষ্ণ আডবাণীরও অভিমত অনেকটা সুষমাদের মতোই। যাঁরা ইয়েদুরাপ্পাকে ফের মুখ্যমন্ত্রীর গদি ফিরিয়ে দিতে চাইছিলেন, আজকের ঘটনার পর তাঁদের প্রচেষ্টা কিছুটা ধাক্কা খেল।
ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে বেআইনি খননে জড়িত বিভিন্ন সংস্থাকে সুবিধে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ওই সুবিধার পরিবর্তে ইয়েদুরাপ্পা তাঁর আত্মীয়ের সংস্থার জন্য অনুদানও পেতেন বলে অভিযোগ। এই সংক্রান্ত তিনটি মামলার তদন্ত করবে সিবিআই। আগামী ৩ অগস্টের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিবিআইকে। ইয়েদুরাপ্পা যাতে কোনও রাজনৈতিক প্রভাব খাটাতে না পারেন, সে দিকেও লক্ষ রাখতে বলেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এইচ কপাডিয়া। এই রায়ের পর ইয়েদুরাপ্পার বক্তব্য, “সিবিআই তদন্তের পরে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হব।” দিল্লিতে বিজেপির মুখপাত্র শাহনওয়াজ হোসেনও বলেন, “ইয়েদুরাপ্পার বিরুদ্ধে এ যাবৎ যা অভিযোগ উঠেছে, আদালতই তাঁকে রেহাই দিয়েছে। ফলে সিবিআই যদি নিরপেক্ষ তদন্ত করে, দলের আপত্তি নেই।” তবে বিজেপি নেতারা স্বীকার করছেন, ইয়েদুরাপ্পার উপর যত আঘাত আসবে, অনুগামীদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে বই কমবে না। আর যদি সিবিআই তদন্তের পরেও ইয়েদুরাপ্পা নিষ্কৃতি পান, তা হলে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর দর কষাকষি করার ক্ষমতাও আরও বাড়বে। আজই আবার বেআইনি খনন মামলায় সুষমা স্বরাজের ‘একদা’ ঘনিষ্ঠ জনার্দন রেড্ডি জামিন পেয়েছেন। তাতে বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের অস্বস্তি বেড়েছে।
কর্নাটকের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে উসকে দিতে তৈরি কংগ্রেসও। আর ইয়েদুরাপ্পাসংক্রান্ত নির্দেশে রক্তের স্বাদ পাচ্ছে তারা। কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচনের দেরি নেই। এক সময় রাজ্যের চিকমাগালুর কেন্দ্র থেকে ইন্দিরা গাঁধী জেতার পরে দেশে কংগ্রেসের দাপট বেড়েছিল। সম্প্রতি এই কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে জয়ের পর সনিয়া সেই ধারা অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। সম্প্রতি কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকেও তিনি বলেছেন, দুর্নীতি নিয়ে বিজেপির মুখোশ খুলে দিতে হবে। সেই সূত্র ধরেই সলমন খুরশিদরা আজ বিজেপির ‘দ্বিচারিতা’ নিয়ে মুখর হন। |