কালীঘাট মন্দিরের সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। আর সময় নষ্ট করা যাবে না। কলকাতা হাইকোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশের প্রেক্ষিতে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
কালীঘাট মন্দিরের সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের জন্য সাত বছর আগে পাঁচ কোটি টাকা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসে রাজ্য সরকার দেখে, এত দিনেও দেড় কোটি টাকার বেশি খরচ করা যায়নি! কিছু কাজ হলেও বেশ কিছু কাজ এখনও বাকি রয়ে গিয়েছে।
কিছু দিন আগে কালীঘাট মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে নানা অব্যবস্থা স্বচক্ষে দেখে আসেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল। পরে তিনি মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষা ও ভক্ত সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য কড়া দাওয়াই দিয়েছিলেন। আর তার পরেই নড়েচড়ে বসে রাজ্য প্রশাসন। কালীঘাট মন্দিরের সংস্কার নিয়ে গত ৩ মে মুখ্যসচিব সমর ঘোষের নেতৃত্বে যে বৈঠক হয়েছে, সেখানেই উঠে এসেছে সাত বছর ধরে ‘কাজ চলতে থাকা’র কাহিনি। |
রাজ্য সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রাচীন ওই মন্দিরের সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের জন্য ২০০৫ সালে পাঁচ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের পর্যটন দফতর সেই টাকা পেয়ে কাজের বরাত দেয় কলকাতা পুরসভাকে। তারা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে প্রকল্পের একটি নির্দেশিকা তৈরি করে। কাজ তদারকি করার জন্য পর্যটন দফতর একটি ‘মনিটরিং কমিটি’ও গড়ে দেয়। বিশেষজ্ঞ ও মনিটরিং কমিটি সৌন্দর্যায়নের বেশ কিছু প্রস্তাবও দিয়েছিল। কিন্তু, তার সব এখনও রূপায়িত হয়নি।
সরকার নিয়োজিত মনিটরিং কমিটির সদস্য হলেও মুখ্যসচিবের ডাকা বৈঠকে মন্দির কমিটির এক সদস্য অভিযোগ করেন, সংস্কারের কাজে তাঁদের সঙ্গে যথেষ্ট পরামর্শ করা হয়নি। ঠিক হয়েছে, মন্দিরের ভিতরের কাজের সময়ে গুরুত্ব সহকারে তাঁদের মতামত নেওয়া হবে।
মন্দিরের পাশে সদ্যনির্মিত দুধওয়ালা ধর্মশালা এবং তার নিকটবর্তী বাড়িকে নিয়ে একটি ম্যালেরিয়া হাসপাতাল তৈরি করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। সেখানে ঠিক হয়েছে, ধর্মশালার বাড়িটিকে দ্রুত ব্যবহারযোগ্য করার বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। পাশের বাড়িটির কী হবে, সরকার সেই ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাবে।
বৈঠকে কলকাতা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মন্দির চত্বরে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবন্দোবস্ত করার জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। কেমন ভাবে তা করা যায়, সমীক্ষা করে দেখতে হবে পুলিশকে। বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে ছিল কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশটিও। ঠিক হয়েছে, রাজ্যের আইন ও বিচার দফতর নির্দেশটি ভাল ভাবে খতিয়ে দেখে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।
|