গাড়ি কারখানায় দক্ষ কর্মীর জোগানদার হওয়ার পথে পা বাড়াল রাজ্য। হাওড়ার এমসিকেভি ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে সেখানে আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ল বাণিজ্যিক গাড়ি নির্মাতা ভলভো-আইশার। কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের পরামর্শ, রাজ্যে নতুন গাড়ি কারখানা না -হলেও, এ ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পড়ুয়ারা ছড়িয়ে পড়ুক গুজরাতের মতো রাজ্যে। যেখানে লগ্নির ঝাঁপি নিয়ে হাজির বহু গাড়ি সংস্থাই।
দেশে গাড়ি শিল্পের উত্থানের প্রসঙ্গ তুলে রবিরঞ্জনবাবু আশা প্রকাশ করেন, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি রাজ্যে দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে সাহায্য করবে। কিন্তু সিঙ্গুরের ঘটনার পরে এই রাজ্য তার কতটা সুযোগ নিতে পারবে? মন্ত্রী বলেন, “সিঙ্গুরের বিষয়টি আলাদা। এর সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।” তাঁর প্রশ্ন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের শুধু এ রাজ্যেই কেন চাকরি করতে হবে? প্রশিক্ষণ নিয়ে পড়ুয়ারা মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, গুজরাত, ওড়িশায় যাবেন! এটাই তো লক্ষ্য হওয়া উচিত।”
গাড়ি শিল্পে এখন দেশে প্রায় ১.৩০ কোটি কর্মী রয়েছেন। ২০১৬ সালের মধ্যে আরও ২.৫০ কোটি কর্মীর প্রয়োজন হবে, যাঁদের ৬৫ শতাংশের ন্যূনতম যোগ্যতা থাকলেই চলবে। কিন্তু তাঁদের অভাবই সবচেয়ে বেশি, দাবি গাড়ি শিল্পের। তাই ভলভো-আইশার, টাটা মোটরস, টয়োটা কির্লোস্করের মতো সংস্থা এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসছে। এর আগে ভলভো-আইশার দেশে তিনটি একই ধরনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়তে এক কোটি টাকা করে খরচ করেছে। কলেজের পড়ুয়ারা ছাড়াও ভলভো-আইশারের কর্মীরা এই সব কেন্দ্রে প্রশিক্ষণের সুযোগ পান। পূর্বাঞ্চলে প্রথম এমসিকেভি ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেই অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পাঠ্যক্রম চালু হয়েছিল। এবং সিঙ্গুরে কারখানা নির্মাণের সময়ে টাটা মোটরসও এখানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়তে চেয়েছিল।
বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি-র (বেসু) উপাচার্য অজয় রায়ের বক্তব্য, বরাবরই এই রাজ্যে গাড়ি শিল্পের সম্ভাবনার দিকটি উপেক্ষিত। এই ধরনের উদ্যোগ সে ক্ষেত্রে নয়া দিশা দেবে। রবিরঞ্জনবাবু জানান, দক্ষ মানবসম্পদ গড়তে বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে পুরুলিয়া ও কালিম্পঙের পরে আরও চারটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলছে রাজ্য। যেখানে মধ্য ও নিম্ন মেধার, বিশেষ করে স্কুল-ছুটদের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থানের উপযোগী করা হবে। জোর দেওয়া হচ্ছে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণেও। এ ব্যাপারে ১৫ মে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসবেন তাঁরা। |