কথা রাখেননি কেউ, ক্ষোভ বাসিন্দাদের
ক দিকে নলহাটি-আজিমগঞ্জ রেললাইন। অন্য দিকে, নলহাটি থেকে রাজগ্রাম যাওয়ার পাকা রাস্তা। রেললাইনের পূর্বপাড়ে সাহেববাগান এলাকার মাঠে ঝাড়খণ্ড, বিহার, ব্যান্ডেল, বর্ধমান-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের নামকরা ফুটবল দলগুলির খেলা দেখতে পেতেন এলাকার মানুষজন। সাহেববাগান মাঠ তার জৌলুস হারিয়েছে। ওই মাঠে এখন আর খেলা হয় না। মাঠটি রেলের হলেও ‘অসামাজিক’ কার্যকলাপ ঠেকাতে কোনও পক্ষই উদ্যোগী হচ্ছে না।
এলাকাবাসীর এই অভিযোগের কথা শুনতে শুনতে রেল কলোনি সংলগ্ন কলট্যাঙ্কি পাড়ায় পৌঁছে দেখা গেল, পুরসভার উদ্যোগে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে সদ্য শেষ হয়েছে পাইপ লাইনের কাজ। সেই কাজ করতে গিয়ে রাস্তার অধিকাংশ জায়গা ভেঙে ফেলা হলেও ঠিক মতো মেরামত করা হয়নি। শুধু তাই নয়, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পরিশ্রুত পানীয় জল পেতেও সমস্যা হচ্ছে। এলাকাবাসী রাজু শেখের ক্ষোভ, “মন্ত্রী এসে ঘোষণা করে গেলেন কাল থেকেই জল পাবেন। কিন্তু কবে যে ঠিকমতো জল পাব তার উত্তর নেই। তার উপরে রাস্তায় চলা দায়। পাইপ বসাতে গিয়ে রাস্তা কেটে একাকার করে দিয়েছে।”
জলের অপেক্ষায়। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
ওয়ার্ডের আর এক এলাকা বিধুপাড়া। সেখানেও পানীয় জল নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন এলাকাবাসী। ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর (কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন, পরে তৃণমূলে যোগ দেন) তৃণমূলের প্রার্থী রাজেন্দ্রপ্রসাদ সিংহের অবশ্য দাবি, “বিধুপাড়ায় জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের অনুমোদন নিয়ে তিনটি জলের স্ট্যান্ড পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। এলাকায় পানীয় জলের তেমন একটা সমস্যা নেই।” কিন্তু ওয়ার্ডের মসজিদ পাড়া, বিধুপাড়া, রাইস মিল পাড়া, মালগুদাম পাড়া, সাহেববাগান, কলট্যাঙ্কি পাড়া ঘুরলে অন্য ছবি নজরে পড়ে। বাসিন্দা শ্যামচাঁদ রজক, রমেশচন্দ্র সরকাররা জানান, এলাকায় পানীয় জলের যথেষ্ট সমস্যা রয়েছে। জলের জন্য এলাকায় মাঝে মাঝেই মারামারি হয় বলে তাঁদের দাবি।
৩ নম্বর ওয়ার্ডের এ বারের সিপিএম প্রার্থী বাবুজান আনসারি এবং কংগ্রেস প্রার্থী কামাল আনসারি দু’জনেরই অভিযোগ, ওয়ার্ডে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনও উন্নয়নই হয়নি। আদিবাসী এলাকা এবং রাইসমিল পাড়ার অনুন্নয়নের কথা তুলে ধরলেন তাঁরা। দু’জনেই এর জন্য দায়ী করছেন ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর রাজেন্দ্রবাবুকে। দুই প্রার্থীর দাবি, “জঞ্জাল সাফাইয়ের দিকে কাউন্সিলরের নজরদারির অভাব আছে। জমে থাকা জঞ্জাল পুরসভায় খবর দিয়ে পরিষ্কার করাতে হয়।”
যদিও রাজেন্দ্রবাবুর দাবি, “ওয়ার্ডে প্রতিদিন চার জন সুইপার কাজ করেন।” জঞ্জাল সাফাইয়ের বিষয়ে রাজেন্দ্রবাবু অবশ্য খানিকটা দায় এলাকাবাসীর উপর চাপিয়েছেন। তাঁর দাবি, “নলহাটি-রাজগ্রাম সড়কের ধারে এবং অন্যান্য কয়েকটি জায়গাতেও ময়লা ফেলার গাড়ি রাখা ছিল। কিন্তু ওয়ার্ডবাসীর একাংশের বাধায় ময়লা ফেলা গাড়িগুলি সরিয়ে নিয়ে যেতে বাধ্য হই।” বসতিপূর্ণ এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়ানোর অভিযোগে কিছু বাসিন্দা অবশ্য ওগুলি সরিয়ে ফেলার দাবি তুলেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। রাজেন্দ্রবাবু অবশ্য আশ্বাস দেন, “আগামী দিনে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা বা গাড়ি রাখা হবে।”
সাফাই ও পানীয় জল নিয়ে অভাব অভিযোগ থাকলেও আর একটি বিষয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে ওয়ার্ডে। ওয়ার্ডবাসীর একাংশ অভিযোগ করেছেন, বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে গৃহ নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে। নিজস্ব ঘর থাকতেও অনেকেই এই প্রকল্পের সাহায্যে আরও একটি ঘর বানিয়ে নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে তৈরি হওয়া ওই ঘরগুলি ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। কাউন্সিলর রাজেন্দ্রবাবু অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “এ ধরনের কোনও খবর আমার জানা নেই।” তাঁর আত্মপ্রত্যয়ী জবাব, “বিপদে সব সময় মানুষের পাশে থাকি। সব অভিযোগের উত্তর মানুষ নির্বাচনে দেবেন।”

ওয়ার্ড ৩
• প্রাথমিক স্কুল নেই। পানীয় জলের সমস্যা মেটেনি।
• ৭-৮ দিন ধরে জঞ্জাল জমে থাকে।
• সব জায়গায় ফুট ওভারব্রিজের দাবি জানিয়েও হয়নি।

রাজেন্দ্রপ্রাসদ সিংহ

কী কাজ করেছি ওয়ার্ডবাসী ভাল ভাবেই
জানেন। কাউকে নিরাশ করিনি। তবে
জঞ্জাল ফেলার জায়গা নিয়ে সমস্যা আছে।

কামাল আনসারি

জলের তো সমস্যা মেটেনি। মালগুদামপাড়ায়
নিকাশি নালা, জলের ব্যবস্থা নেই। পুরসভাকে
বলে বলে সাফাইয়ের কাজ করাতে হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.