পায়ে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে দুই সপ্তাহের বেশি ঘুরছেন কৃষ্ণ গোপাল অগ্রবাল। গত সোমবার মেডিসিন বিভাগ বন্ধ থাকায় ফিরে গিয়েছেন। তারও এক সপ্তাহ আগে চিকিৎসক নেই বলে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বুধবার মেডিসিন বিভাগ খোলা থাকলেও চিকিৎসক না থাকায় ২ ঘন্টারও বেশি দাঁড়িয়েছিলেন।
বুকে ব্যথা নিয়ে ওই বিভাগে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাড়িভাসার বাসিন্দা নিখিল সিকদার, ঘোড়ারমোড়ের বাসিন্দা শ্বাসকষ্টে অসুস্থ উত্তম রায়রা। কর্তব্যরত নার্সকে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি জানিয়ে দেন চিকিৎসক অন্তর্বিভাগে রোগী দেখতে গিয়েছেন। অনেক রোগী থাকায় দেরি হচ্ছে। দাঁড়িয়ে রয়েছেন লতা ঘোষ, মিহিরলাল দাসদের মতো অন্তত ২৫ জন পুরুষ, মহিলা। চিকিৎসক অনেকক্ষণ আগে অন্তর্বিভাগে রোগী দেখতে গিয়ে ফিরছেন না দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা।
এ দিন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে মেডিসিনের বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েন অনেকেই। চিকিৎসক কয়েকজন রোগী দেখে অন্তর্বিভাগে চলে যাওয়ায় এ দিন চিকিৎসা করাতে এসে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে তাঁদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক পরে চিকিৎসক ফিরে এসে তাঁদের দেখেন।
হাসপাতালের সুপার প্রদীপ সরকার বলেন, “মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসক কম থাকায় সমস্যা হচ্ছে। বহির্বিভাগের সঙ্গে তাদের অন্তর্বিভাগও দেখতে হয়। মেডিসিনে দুই জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। একজন স্বেচ্ছাবসর চেয়ে আবেদন করেছিলেন। এবং কাজে ছিলেন না। স্বাস্থ্য দফতর থেকে তাঁকে যোগ দিতে বলা হয়। তিনি এ দিন ফের কাজে যোগ দিয়েছেন। রোগীর চাপ অনুসারে চিকিৎসক না থাকায় জন্য কিছুটা সমস্যা তো হচ্ছেই।”
হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ২ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন তাঁদের পক্ষে বহির্বিভাগ এবং অন্তর্বিভাগের পরিষেবা সুষ্ঠুভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান কর্তৃপক্ষ। এক জন ‘জেনারেল ফিজিশিয়ান’ এবং একজন ‘হাউস স্টাফ’ তাঁদের সাহায্য করেন। তবে ওই জেনারেল ফিজিশিয়ান ছুটিতে থাকায় সমস্যা বেড়েছে।
লতা ঘোষ, সরস্বতী সরকার, নিখিল সিকদারদের মতো এ দিন মেডিসিন বিভাগে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্তত ১০ জন রোগী জানান গত সোমবার বহির্বিভাগ বন্ধ থাকায় তাঁরা ফিরে গিয়েছেন। দাঁড়িয়ে থেকে ক্ষুব্ধ কৃষ্ণবাবু বলেন, “চিকিৎসকরা কখন আসবেন তার জন্য এ দিন ১০টা থেকে অপেক্ষা করছি। বেলা ১২ টার সমও চিকিৎসক দেখেননি।” লতা ঘোষ, প্রধাননগরের বাসিন্দা তন্দ্রা বিশ্বাসদের অভিযোগ, “হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসা করাতে এসে এ ভাবে হেনস্থা হতে হবে কেন বুঝতে পারছি না।” |