কোথাও ৫০ লক্ষ, কোথাও বা ৪০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন। তবে তৈরি হওয়াই সার। স্বাস্থ্য দফতর প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্সের সংস্থান করতে না পারায় বছরখানেক ধরে অব্যবহৃতই রয়েছে ভবনগুলি।
এই অবস্থা কেতুগ্রাম ২ ব্লকের শিবুলন ও পান্ডুগ্রাম এবং কাটোয়া ১ ব্লকের চন্দ্রপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সম্প্রতি শিবুলন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী ভর্তির দাবি জানিয়ে বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটে।
জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য কর্মসূচির নির্দেশে কাটোয়া মহকুমার ৫টি ব্লকের ৫টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে চিহ্নিত করে ‘উন্নীত’ করার কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য দফতর। সিদ্ধান্ত হয়, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে ১০ শয্যার ইন্ডোর পরিষেবা শুরু করা হবে। কাটোয়া ১ ব্লকে চন্দ্রপুর, কাটোয়া ২ ব্লকে অগ্রদ্বীপ, কেতুগ্রাম ১ ও ২ ব্লকে পান্ডুগ্রাম এবং শিবলুন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে উন্নীত করা হচ্ছে। মঙ্গলকোটের লাঘুরিয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রও ওই তালিকায় রয়েছে। এই কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল প্রসূতিদের হাসপাতালমুখী করে প্রসব করানো, যাতে প্রসূতি ও সদ্যোজাত উভয়েই সুস্থ থাকেন। এ ছাড়াও জলবাহিত রোগের চিকিৎসাও যাতে হাসপাতালে করা যায় তার সুবন্দোবস্ত করা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, যে কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী ভর্তির ব্যবস্থা করতে হলে অন্তত ৪ জন করে চিকিৎসক ও নার্সের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়াও দরকার চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। সেখানে চন্দ্রপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রয়েছেন ১ জন চিকিৎসক, ১ জন ফার্মাসিস্ট ও ১ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। কোনও নার্স নেই। শিবুলনে নার্স আছে, প্রতিদিন চিকিৎসক থাকেন না। একই অবস্থা পান্ডুগ্রামে। অন্য দিকে, চন্দ্রপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বহির্বিভাগকে নতুন ভবনে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয় ব্লক স্বাস্থ্য দফতর। সে জন্য টাকা জমা দিয়ে আবেদন করা হয় বিদ্যুৎ দফতরে। কিন্তু কয়েক মাস পেরনোর পরেও মেলেনি সংযোগ। তাই বর্হির্বিভাগের স্থানান্তরও শিকেয়।
ইতিমধ্যে লাঘুরিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবনে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। কাজ চলছে অগ্রদ্বীপে। বাকি তিনটি তৈরির কাজ এক বছর আগে শেষ হলেও রোগী ভর্তি শুরু হয়নি। ওই সব ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, চিকিৎসক, নার্স ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী চেয়ে স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বর্ধমানের সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পরিকাঠামো তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে। চিকিৎসক, নার্সের অভাবে রোগী ভর্তি করানো যাচ্ছে না। চিকিৎসকের সমস্যা মিটে যাবে। নার্সের জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়েছে।” চিকিৎসকদের আশঙ্কা, চালু হওয়ার আগেই না ভেঙে পড়ে নতুন ভবনগুলি। |