|
|
|
|
হিরো হতে অপহরণের গল্প |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুরদুয়ার |
সহপাঠীদের কাছে হিরো সাজার জন্য অপহরণের চেষ্টার ভুয়ো কাহিনি তৈরি করল ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র। বুধবার ঘটনাটি ঘটে আলিপুরদুয়ারের ম্যাকউইলিয়ম স্কুলে। ষষ্ঠ শ্রেণির ওই ছাত্র এদিন স্কুলের শ্রেণি শিক্ষকের কাছে দাবি করে, সকালে স্কুলে আসার সময়ে দুই দুষ্কৃতী তাকে অপহরণের চেষ্টা করে। দুষ্কৃতীদের হাত কামড়ে দিয়ে পালিয়ে স্কুলে ঢুকে পড়ে সে। ঘটনার সময়ে তার সঙ্গে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র সাগ্নিক সরকারও ছিল বলে জানায় কুনাল। শিক্ষকেরা জেরা করার সময়ে সাগ্নিকও ঘটনাটি ‘সত্যি’ বলে জানানোয় স্কুলে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। শিক্ষকেরা ওই ছাত্রের মুখে অপহরণের চেষ্টার কাহিনি শুনে তড়িঘড়ি ফোন করেন আলিপুরদুয়ার থানায়। শিক্ষকদের থেকে খবর পেয়ে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিশ্বচাঁদ ঠাকুর, আলিপুরদুয়ার থানার আইসি স্বপন ঘোষ-সহ পুলিশ অফিসাররা ছুটে যান। যে জায়গায় ওই ছাত্রকে অপহরণের চেষ্টা হয়, পুলিশ কর্তারা সেখানেও যান। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দফতরে দফায় দফায় জেরা শুরু হয় ভেঙে পড়ে সাগ্নিক। পুরো ঘটনাটিই যে ‘বানানো’ সেটা স্পষ্ট হয়ে যায় পুলিশ কর্তাদের কাছে। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনুপ জয়সোয়াল বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ ফোন করে জানানোয় আমরা তড়িঘড়ি পদক্ষেপ করি। সাগ্নিককে জেরা করার পরে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। ঘটনাটি যে সাজানো সেটা প্রমাণিত হয়েছে।” অপহরণের ভুয়ো কাহিনি ধরা পড়ার পরে কুনাল বলে, “আসলে পেটে ব্যাথা করছিল। বাড়ি যাব ভেবে অপহরণের গল্প বলি। শিক্ষকেরা জেরা করার সময়ে সাগ্নিকও ঘটনার সাক্ষী বলে বলে জানাই। পুলিশ জেরা করতে শুরু করায় সাগ্নিক সত্যিটা বলে দেয়। আর এমন করব না।” সাগ্নিক বলেন, “প্রধান শিক্ষক আমায় ডাকছে শুনে বাইরে বার হতেই কুনাল আমার সাহায্য চায়। বন্ধুকে বাঁচাতে কুনালের কথায় সায় দিই। পরে পুলিশ এলে স্কুলের কথা ভেবে সত্যিটা চেপে ছিলাম। কিন্তু পুলিশ অফিসারের ঘরে ডেকে একের পর এক প্রশ্ন শুরু হওয়ায় সত্যি কথা বলে দিই।” ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রের এমন আচরণে অবার স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুধাংশু বিশ্বাসও। তিনি বলেন, “কুনাল সাধারণ মানের ছেলে। স্কুলে শান্তই থাকে। আগে কখনও এমন করেনি। এ বার কেন এমন করল না আমিও বুঝতে পারলাম না।” ছেলের এমন আচরণে অবাক কুনালের বাবা দুলালবাবু। শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর বাড়ি। হাটখোলা এলাকায় ছোট একটি মিষ্টির দোকান চালান। তিনি বলেন, “আমার ছেলেকে কেউ, কেন অপহরণ করবে? স্কুল থেকে প্রথমে খবরটা পেয়ে তো ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। বাড়িতে ফিরে গিয়ে ছেলেকে ভাল ভাবে বোঝাব যাতে ও ফের এমন কাণ্ড আর না-করে।” |
|
|
|
|
|