|
|
|
|
অভিযোগ, হইচই বিডিও অফিসে |
ত্রাণ বরাদ্দে পান ভোজন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
ত্রাণ দফতরের বরাদ্দ টাকায় ধাবায় পানভোজনের বিল মেটানোর অভিযোগ নিয়ে ব্যাপক হইচই হল ময়নাগুড়ি বিডিও অফিসে। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। ময়নাগুড়ি বিডিও অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আর্থিক বছরে ব্লক ত্রাণ দফতরের জন্য সরকারি কোষাগার থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। অথচ খরচ দেখানো হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা। তার মধ্যে বিধি মেনে দফতরের সামগ্রী কেনা হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকার। বাকি টাকা হোটেল, ধাবায় পানভোজনে খরচ হয়েছে বলে অভিযোগ। মাসখানেক আগে বিষয়টি ধরতে পেরে ত্রাণ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী গৌতম চক্রবর্তী-সহ একাংশ কর্মী পানভোজনের খরচের বিল কেন অনুমোদন করা হবে সেই প্রশ্ন তোলেন। শীর্ষ কর্তাদের অনুমোদন ছাড়া ওই টাকা খরচ হল তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কী ভাবে আধিকারিকদের সই ছাড়া তা অনুমোদন হল তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। গৌতমবাবু বিষয়টি নিয়ে মাসখানেক ধরে বিডিও সম্রাট চক্রবর্তীকে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানান বলে দাবি করেছেন। এতদ্সত্ত্বেও তদন্ত হয়নি। উপরন্তু, এদিন গৌতমবাবু-সহ একাংশ কর্মী বিডিও-র বিষয়টি জানতে যান। তখনই গৌতমবাবুকে অফিসের মধ্যে একজন অফিসার ও হিসেব বিভাগের এক কর্মী হেনস্থা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কয়েকজন ঠিকদারও সেই সময় ছিলেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনার খবর পৌঁছেছে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্রের কাছেও। জেলাশাসক বলেন, “ত্রাণের টাকায় পানভোজনের খরচ মেটানোর অভিযোগ শুনেছি। বিস্তারিত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বহুবার বলা সত্ত্বেও বিডিও এবং যুগ্ম বিডিও কেন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করিয়ে ব্যবস্থা নেননি তাও জেলা প্রশাসন খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। এই ব্যাপারে বিডিও সম্রাটবাবু বলেন, ‘‘এখনই কিছু বলতে চাই না। সব খোঁজ নিয়ে বলব।” বিডিও গোটা বিষয়টি দফতরের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে দাবি করেছেন। গৌতমবাবু বলেছেন, “আমার যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। হেনস্থার বিষয়ে কিছু বলতে চাইছি না” ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক ত্রাণ দফতর থেকে বৈধ ভাবে ২০ হাজার টাকা খরচের হিসাব থাকলেও বাকি টাকা ব্যয়ের যথাযথ নথি নেই। এমনকী, বিডিও কিংবা দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মীর সই নেই। তা সত্বেও ওই ১ লক্ষ ৫৬ হাজার টাকার বিল ট্রেজারি অফিস থেকে ছাড়া হয়েছে গত ৩১ মার্চ। বিধি ভেঙে ওই টাকার যে খরচ দেখানে হয়েছে তাতে ময়নাগুড়ির দুটি হোটেলে পানভোজনের খরচ দেখানো হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। দু’জন ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে আরও ৩০ হাজার টাকা। কেন ওই দুই ঠিকাদারকে টাকা দিতে হল বিলে তার কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি। বিধি বহির্ভূত ওই ব্যয়কে বৈধতা দিতে এদিন গৌতমবাবুকে দফতরের এক কর্মী সই করার জন্য গত এক মাস ধরে চাপ দিচ্ছেন। গৌতমবাবু বিষয়টি বিডিওকে জানিয়ে দিলেও কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। বরং এদিন ফের গৌতমবাবুকে সই করার জন্য চাপ দেওয়া হলে বিডিও অভিযুক্তদের পক্ষে সওয়াল করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গৌতমবাবু বলেন, “জেলা প্রশাসন অভিযোগ খতিয়ে দেখলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।” |
|
|
|
|
|