|
|
|
|
ভরসা কাঁথা স্টিচ |
নকশা বুনে দিন পাল্টেছে সাবিনাদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • সালার |
নুন আনতে পান্তা ফোরানো সংসারে ফুল ফুটিয়েছে কাঁথার নকশা।
এক দশক আগে দু’বেলা অন্ন সংস্থান করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হত তাঁদের। এখন ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ থেকে সংসারের যাবতীয় দায় তাঁদেরই। তাঁরা সালারের মালিহাটি অঞ্চলের রায়পুর গ্রামের সাবিনা বেগম, রেবা বেগমের মতন আটপৌরে মহিলা। ন’জন মহিলা ও তিন যুবক, বছর দশেক আগে ‘একান্ত আপন’ নামে একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়েছিলেন। প্রথম দিকে সংসার খরচ বাঁচিয়ে রোজ ২ টাকা দিয়ে মাসে ৬০ টাকায় জমিয়ে গোষ্ঠীর তহবিল তৈরি করা। সেই তহবিলেই তসর কিনে কাঁতা স্টিচের নকশা তুলে শাড়ি, কামিজ, পাঞ্জাবি এমনকী টেবিল-ক্লথ, বেডকভার তৈরি করছেন সাবিনারা।
এ ব্যাপারে অবশ্য জেলা প্রশাসনের দরাজ সাহায্য পেয়েছেন তাঁরা। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি প্রাথমিক বাবে তাঁদের তসর কিনতেও সাহায্য করেচিল প্রশাসন। এখন সেই কাঁথা বুনেই তাঁদের মাসিক আয় বেশ কয়েক হাজার টাকা। ‘একান্ত আপন’-এর হাত ধরে এখন ওই গ্রামে মোট ১৭টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ওই কাজ করছে। |
|
হাল ফিরেছে কাঁথা স্টিচে। সালারে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
মাধ্যমিক পাশ সাবিনা বেগমের দুই ছেলে ও স্বামীর সংসার। রেন্টু রাজ পেশায় দিনমজুর। দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতে হত এত দিন। সাবিনাই এখন সে সংসারে মূল উপার্জনকারী। মাটির দেওয়ালে ইট পড়েছে। টিনের ছাউনি, দু’কামরার ঘর তাঁর এখন। ফিরেছে অন্যদের অবস্থাও। গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতের কাজগুলি শুধু যে চার পাশের গ্রামে বা সালারেই বিক্রি হয়, এমন নয়। বহরমপুর, বোলপুর ঘুরে বিভিন্ন মেলা ছুঁয়ে তাঁদের নকশা এখন দেদার বিকোচ্ছে কলকাতা এমনকী দিল্লিতেও।
একই কাজ করেন ‘মহিলা প্রগতি’ নামে ওই গ্রামের অন্য একটি গোষ্ঠীর মহিলারাও। তাঁদেরও একই কাজ। তসে দলের রেহানা বেগম বলেন, “একান্ত আপনের মেয়েরা আমাদের নানা ভাবে উৎসাহিত করেছে। আর আমাদের মেয়েরাও তাই এখন হাতের কাজ করে আগের থেকে অনেক ভাল আছে।”
এলাকার মহিলাদের এই উন্নতিতে স্থানীয় মালিহাটি পঞ্চায়েতের প্রধান তহমিনা খাতুন বললেন, “একান্ত আপন গোষ্ঠী সত্যিই প্রশংসনীয় কাজ করেছে। ওরা শুধু নিজেদের মেয়েদেরই দেখেনি, অন্য গোষ্ঠীর মেয়েদেরও কাজ করতে দারুণ উৎসাহিত করেছে।” |
|
|
|
|
|