|
|
|
|
সূত্র মোবাইলের ‘কল লিস্ট’ |
তরুণীকে খুনে গ্রেফতার যুবক |
সৌমিত্র সিকদার • রানাঘাট |
মোবাইলের ‘কল-লিস্ট’-ই শেষ পযর্ন্ত নারকেলডাঙা এলাকার এক তরুণী খুনের তদন্তে আলো দেখাল পুলিশকে।
গত ১৮ এপ্রিল নদিয়ার কালীনারায়ণপুরে রূপা দে (২০) নামে ওই তরুণী খুনের তিন সপ্তাহ পরে, বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুর থেকে গণেশ রায় নামে মধ্য কুড়ির ওই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের কাছে গণেশের নাম-পরিচয় স্পষ্ট ছিল না। সূত্র বলতে ছিল, রূপার মোবাইলে ‘সেভ’ করে রাখা ওই নম্বরটি। গত তিন সপ্তাহে, অধিকাংশ সময়েই যা সুইচ অফ ছিল। কখনও কেমনে চালু হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই মোবাইল বন্ধ করে দিয়ে ক্রমেই পুলিশের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছিলেন গণেশ। কিন্তু ধৈর্য ধরে ছিল নদিয়া জেলা পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, “আমরা তক্কে তক্কে ছিলাম। মোবাইল অন করলেই ওই যুবকের ‘লোকেশন’ বা কোথায় সে রয়েছে তার হদিস করার চেষ্টা করতাম। এ ভাবেই শেষ পর্যন্ত সোদপুর এলাকায় তার বাড়ির খোঁজ মেলে। বুধবার সেখান থেকেই গণেশকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় সে খুনের কথা কবুলও করেছে।” |
ধৃত গণেশ রায়। |
রূপা দে। |
|
গত ১৮ এপ্রিল সকালে তাহেরপুরের সার্কুলার রোডের কাছে একটি কলাবাগান থেকে রূপার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু মেয়েটির পরিচয় জানা যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত ২১ এপ্রিল তাঁর বাড়ির লোকজন ছবি ও পোশাক মিলিয়ে রূপাকে শনাক্ত করেন। কিন্তু কলকাতার নারকেলডাঙা থেকে তাহেরপুরে গেল কী করে সে? সে উত্তর মিলেছে গণেশের কাছে।
পুলিশের জেরায় ওই যুবক জানায়, গত বছর জগদ্ধাত্রী পুজোর দিন একটি ‘মিসড কলের’ সূত্র ধরে তাদের আলাপ। ক্রমে তাদের মধ্যে ‘সম্পর্ক’ গড়ে ওঠে বলেও গণেশের দাবি। রূপার বাড়ির লোক অবশ্য তা ভাল চোখে দেখেননি। গণেশের সঙ্গে তাঁর মেলামেশা নিয়ে বাড়িতে অশান্তি লেগে থাকত প্রায়ই বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। গত ১৭ এপ্রিল রূপার বাড়ি ফিরতে রাত হয়। বাড়ির লোক তা নিয়ে বকাঝকা করতে বেরিয়ে আসে মেয়েটি। গণেশকে ফোন করে।
জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে রূপা ফোন করে গণেশকে। সে ভরসা দেয়, ফুলিয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে দিন কয়েকের জন্য ‘আশ্রয়ের ব্যবস্থা’ করে দেবে। সেই ভরসাতেই সদ্য তরুণী মেয়েটি রাতেই গণেশের সঙ্গে পাড়ি দেয়। শিয়ালদহ থেকে তারা এসে নামে কালীনারায়ণপুরে। সেখান থেকেই ফুলিয়া যাওয়ার কথা ছিল তাদের। গণেশ পুলিশকে জানায়, ট্রেনের অপেক্ষায় প্ল্যাটফর্মে বসে গল্প করার সময়ে রূপাই গল্পচ্ছলে তাকে জানায়, তার ‘অন্য প্রেমিক’ রয়েছে। গণেশের দাবি, অন্য কারও সঙ্গে রূপার ‘সম্পর্ক’ মেনে নিতে না পেরে স্টেশন লাগোয়া একটি কলা বাগানে নিয়ে গিয়ে গলায় কলা গাছের ছাল জড়িয়ে সে রাতেই রূপাকে খুন করে সে। |
|
|
|
|
|