কাজমা, কুয়েত ২ (ইসমাইল, আজমি)
ইস্টবেঙ্গল ১ (এডমিলসন) |
ছয় ম্যাচে ১৪ গোল হজম। কোনও জয় নেই। নেই ড্র-ও। গ্রুপে সবার শেষে অবস্থান।
নেই রাজ্যের বাসিন্দা হয়ে, আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট এ এফ সি কাপে শূন্য পেয়েই শেষ করল ইস্টবেঙ্গল। তা সত্ত্বেও ম্যাচের পর ট্রেভর মর্গ্যান যুক্তি হাতড়ালেন। “চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও ছোট দলগুলো বড় দলের সামনে পড়লে শুরুতেই বিদায় নেয়। যাদের সঙ্গে এই টুর্নামেন্টে খেললাম তারা সবাই ভারতের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে।” হেরে গেলে সব
|
গোলের পর এডমিলসন।
ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
দলের সব কোচই নানা অজুহাত দেন, লাল-হলুদের ব্রিটিশ কোচ অন্য পথে হাঁটবেন কেন?
বুধবার ম্যাচের পর যে সদস্য-সমথর্করা নত মস্তকে যুবভারতী ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন তাঁদেরই হয়তো ১৪ মে ঊর্ধ্ববাহু হয়ে নাচতে দেখা যাবে এই স্টেডিয়ামেই। কলকাতার লিগ জয়ের আনন্দে। কলকাতার মধ্যেই এ বারও বন্দি রয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। সর্বভারতীয় বা আন্তর্জাতিক হতে পারল না। ফেড কাপ নেই, আই লিগ নেই, এ এফ সি-তে একটা ম্যাচ জেতার ক্ষমতা নেই, তাতে কীআই এফ এ শিল্ড, লিগ তো পাওয়া গিয়েছে! ব্রিটিশ কোচ, অস্ট্রেলিয়া, নাইজিরিয়া-- নানা দেশের নানা ফুটবলার টিমে। তা হলে কেন আন্তর্জাতিক সাফল্য পাবে না মর্গ্যান ব্রিগেড? তা হলে ভারতীয় কোচ থাকলেও যা হয়, বিদেশি কোচ থাকলেও তাই।
কাজমার বিরুদ্ধে এক পয়েন্ট অবশ্য পেতেই পারত ইস্টবেঙ্গল। নাকের বদলে নরুন টোলগে-রবিনরা পেলেন না তিনটি কারণে।
এক) শেষ মিনিটে রক্ষণের ব্যর্থতায় গোল হজম।
দুই) কোরিয়ান রেফারির ইস্টবেঙ্গলকে নিশ্চিত পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত করা।
তিন) প্রথমার্ধের ৩৫ মিনিটে সৈকত সাহা রায়ের লালকার্ড দেখে বেরিয়ে যাওয়া। যাতে টিমের ছন্দটাই হারিয়ে ফেলেছিল ইস্টবেঙ্গল। সাংবাদিক সম্মেলনে এসে ক্ষোভ জানাচ্ছিলেন কাজমার চেক কোচ মিলান মাকালা। “ইস্টবেঙ্গল পরের বার আমাদের দেশে খেলতে গেলে দুপুর সাড়ে বারোটায় নামিয়ে দেব। এত গরমে সিন্থেটিক টার্ফে খেলা সম্ভব নাকি?” ইস্টবেঙ্গলের এতে অবশ্য কোনও দোষ নেই। ম্যাচটা এই সময় দিয়েছে এ এফ সি। বলতে দ্বিধা নেই কাঠফাটা রোদ, তীব্র আর্দ্রতা, গরম এবং অ্যাস্ট্রোটার্ফের সুবিধা নিয়ে এডমিলসন, বলজিৎ, লেন, সঞ্জুরা চমকে দিলেন। কলকাতা লিগের শেষ ম্যাচের কথা ভেবে অনেক ফুটবলারকে শুরুতে নামাননি মর্গ্যান। তা সত্ত্বেও ০-১ পিছিয়ে পড়া ম্যাচ এডমিলসন ১-১ করে দিলেন প্রথমার্ধেই। অপ্রত্যাশিত ভাবে ইস্টবেঙ্গল চেপেও ধরল সুলেমান-ইউসুফ নাসেরদের। কিন্তু আকাশে হঠাৎ দেখা দেওয়া মেঘ আর পড়ন্ত বিকেলের কম তাপমাত্রা কাজমাকে ম্যাচে ফেরাল। দশ জন মিলে লাল-হলুদের ৫৫ মিনিটের অসাধারণ লড়াই শেষ পর্যন্ত তাই জলেই গেল।
এ এফ সি কাপে দুটো গোল করেছে ইস্টবেঙ্গল। দু’টোই এডমিলসনের। এ দিনই শেষ হয়ে গেল ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারের লাল-হলুদের স্বল্পমেয়াদি জীবন। তাঁকে এবং অন্য আরও কয়েক জনকে পরে আর পাওয়া যাবে না বলে এ দিন রাতেই পার্টির ব্যবস্থা করেছিলেন মর্গ্যান। দু’হাত তুলে মাঠ ছাড়লেন এডু। টোলগেকেও দেখা গেল নিজের জার্সি ছুঁড়ে দিয়ে যেতে। অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকারও কি মর্গ্যানের শেষ পার্টিতে যোগ দিলেন? এ এফ সি কাপের বিশ্রী ফলের তীব্র যন্ত্রণা নয়, সমর্থকরা মনে হল বেশি যন্ত্রণাবিদ্ধ টোলগের আচরণেই। কলকাতার দর্শক এখনও এ এফ সি কাপ নিয়ে মাথা ঘামান না! |