|
|
|
|
রবীন্দ্রজয়ন্তীর মঞ্চেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • পুড়শুড়া |
রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনের অনুষ্ঠানেও তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে এল পুড়শুড়ায়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সোদপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে রবীন্দ্রজয়ন্তীর আয়োজন করা হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। দর্শকাসনে বেশির ভাগই ছিলেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। মঞ্চে ছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জয়দেব জানা, স্থানীয় বিধায়ক পারভেজ রহমান প্রমুখ। জয়দেববাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি সম্বর্ধনা নেওয়ার পরেই পুস্পস্তবক টেবিলে ছুঁড়ে ফেলেন। মাইকে চিৎকার করে বলেন, “এই দল আবার কেউ করে নাকি! ব্লক সভাপতির পদ এবং দল থেকে ইস্তফা দিলাম।”
গোটা ঘটনার কার্য-কারণ কিছুই বুঝে উঠতে না পেরে হতবাক হয়ে যান অনেকেই। মঞ্চ থেকে গটগট করে নেমে বেরিয়ে যান জয়দেববাবু। তাঁর অনুগামীরাও নেতার পিছু পিছু অনুষ্ঠানস্থল থেকে উঠে পড়েন। দলের বিরুদ্ধে তাঁর কী অভিযোগ, তা অবশ্য মঞ্চে কিছুই খোলসা করেননি ওই তৃণমূল নেতা।
বিশৃঙ্খলার জেরে অনুষ্ঠান কিছু ক্ষণের জন্য থমকে যায়। পরে ‘কোনও রকমে’ অনুষ্ঠান সারা হয় বলে দলীয় একটি সূত্রে জানানো হয়েছে।
পারভেজ রহমান বলেন, “এ সব কথার কোনও গুরুত্ব দিচ্ছি না। এর আগেও বার কয়েক উনি দল ছাড়ার কথা বলেছেন।” রবীন্দ্রজয়ন্তীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চে এ ধরনের ‘ব্যবহার’ দল ‘বরদাস্ত’ করবে না বলে মন্তব্য করেছেন পারভেজ। তিনি জানান, ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। হুগলি জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “জয়দেববাবু টেলিফোনে বিষয়টি জানিয়েছেন। জেলায় দলীয় কার্যালয়ে ডেকে পুরো বিষয়টি সবিস্তার ওঁর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে।”
জয়দেববাবু পরে বলেন, “সুপরিকল্পিত ভাবে আমাকে হেনস্থা করার চেষ্টা চলছে। আমার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। প্রথম থেকে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে দল করছি। এখন আমার গ্রহণযোগ্যতা না থাকলে পদ আঁকড়ে পড়ে থাকব কেন?”
প্রসঙ্গত, পারভেজ রহমান এবং অষ্ট বেরার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বাদানুবাদ পুড়শুড়া তৃণমূলে কোনও নতুন ঘটনা নয়। কিছু দিন আগে দলের কর্মকাণ্ড থেকে ‘সরে দাঁড়িয়েছেন’ অষ্টবাবু। ইদানীং জয়দেববাবুর গোষ্ঠীর সঙ্গে পারভেজের গোষ্ঠীর মনোমালিন্য শুরু হয়েছে বলে দলেরই একটি সূত্র জানিয়েছে। জয়দেববাবুর নানা ‘বেআইনি কর্মকাণ্ড’ নিয়ে দলের উপর মহলেও অভিযোগ আছে।
সোমবারই পুড়শুড়ার হরিহর গ্রামে এক জমির মালিককে মারধরের অভিযোগ ওঠে জয়দেববাবু ও তাঁর কিছু অনুগামীর বিরুদ্ধে। ওই জমি-মালিকের পক্ষ নিয়ে তৃণমূলেরই একাংশ জয়দেববাবুকে মঙ্গলবার পুড়শুড়ার দলীয় অফিসে ঘেরাও করে। বিষয়টি মীমাংসার জন্য বৈঠক ডেকেছিলেন বিধায়ক। মঙ্গলবার সেখানেই জয়দেববাবু জানিয়ে দেন, তিনি দল ছাড়ছেন। এরপরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান মঞ্চেই দল সম্পর্কে তাঁর প্রতিক্রিয়া গোপন রাখেননি ওই তৃণমূল নেতা। এখন তাঁর বিরুদ্ধে দল কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাই দেখার। |
|
|
|
|
|