গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামানোর নির্দেশ
উত্তরপ্রদেশ ভোট নিয়ে রাহুলের পাশেই সনিয়া
ত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ফল নিয়ে কার্যত রাহুল গাঁধীর পক্ষে সওয়াল করলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী।
হিন্দি বলয়ের অন্যতম প্রধান রাজ্যে কেন কংগ্রেসের ফল খারাপ হল, তা খতিয়ে দেখতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনির নেতৃত্বে কমিটি গড়েছিলেন সনিয়া। খোদ রাহুল উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকলেও তাঁকে দায়ী করেনি অ্যান্টনি কমিটি। যদিও ভোটের ফল প্রকাশের পরেই দায় নিজের ঘাড়ে নেন রাহুল নিজেই। ফলে অ্যান্টনি কমিটির রিপোর্ট নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। এই অবস্থায় আজ কংগ্রেস সংসদীয় দলের বৈঠকে উত্তরপ্রদেশে দলের নির্বাচনী ফলকে ‘বিপর্যয়’ বলে মানলেন না সনিয়া। তাঁর কথায়, “যদিও সেখানে দলের ফলাফল আশানুরূপ হয়নি, কিন্তু কংগ্রেসের ভোট শতাংশ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। শুধু তাই নয়, গত ২২ বছরে এই প্রথম উত্তরপ্রদেশের ভোটে অন্যতম ‘সিরিয়াস প্লেয়ার’ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে কংগ্রেস।”
রাহুলের হয়ে কেন এ ভাবে এগিয়ে এলেন সনিয়া?
কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, উত্তরপ্রদেশে খারাপ ফলের পরে রাহুল ‘ব্যর্থ’ বলে সমালোচনা করতে শুরু করে বিজেপি। তার পর অ্যান্টনি কমিটির রিপোর্টে কেন তাঁকে দায়ী করা হয়নি, সেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। সেই আক্রমণ ঠেকানোর প্রয়োজন ছিল। দশ জনপথের ঘনিষ্ঠ এক কংগ্রেস নেতা আজ বলেন, আসলে রাহুল যে ব্যর্থ হননি, তা বিজেপি নেতারাও জানেন। তাঁরা এটাও জানেন যে, রাহুলের আগ্রাসী প্রচারই উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসকে ফের প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে। কিন্তু সব জেনেবুঝেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে যখন রাহুল-বিরোধী প্রচার চালানো হচ্ছে, তখন কৌশলে উত্তরপ্রদেশের ফল নিয়ে মন্তব্য করেছেন সনিয়া। বুঝিয়ে দিয়েছেন যে রাহুলের প্রচেষ্টাতেই উত্তরপ্রদেশে দীর্ঘদিন পর ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে কংগ্রেস।
সনিয়া অবশ্য আজ দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই একমাত্র বিষয়, যা ঠিক করে দেবে আমরা জিতব না হারব। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছেড়ে আরও শৃঙ্খলাপরায়ণ হলেই ভাল ফল হবে কংগ্রেসের।” গোয়া, পঞ্জাবের বিপর্যয় থেকে শিক্ষা নিয়ে দলের ভাবমূর্তি উদ্ধারের লড়াইয়ে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপানোর নির্দেশও দিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। কেন্দ্রের ইতিবাচক পদক্ষেপগুলি নিয়ে আরও বেশি প্রচার এবং বিরোধী দলগুলির দুর্নীতি ও বিরোধী-শাসিত রাজ্যগুলির অরাজক পরিস্থিতি নিয়ে আরও আগ্রাসী প্রচারে নামার কথা বলেছেন তিনি।
দলের অভ্যন্তরীণ বৈঠকে সনিয়ার এ ধরনের ‘ভোকাল টনিক’ নতুন নয়। তবে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড সূত্রে বলা হচ্ছে, আজ তিনি যে বার্তা দিলেন তার সুনির্দিষ্ট প্রেক্ষাপট ও উদ্দেশ্য আছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে অশোক চহ্বাণের অপসারণ থেকে শুরু করে কংগ্রেস সংসদীয় দলের সচিবের পদ থেকে সুরেশ কলমডিকে সরানো পর্যন্ত দুর্নীতি দমনে কঠোর বার্তা দিতে চেষ্টার কোনও কসুর করেননি সনিয়া। অথচ সাম্প্রতিক বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের ময়নাতদন্তে বসে অ্যান্টনি কমিটি জানিয়েছে, ভাবমূর্তি উদ্ধারের লড়াইতে এখনও পিছিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। দুর্নীতি দমন ও মূল্যবৃদ্ধি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র ব্যবস্থা নিলেও কংগ্রেস সম্পর্কে জনমানসে নেতিবাচক ধারণা কাটানো যায়নি। এবং সেটা কংগ্রেসের প্রচার ব্যবস্থারই ব্যর্থতা।
সেই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতেই সনিয়া আজ বলেন, “ইদানীং সরকারের সমালোচনা করা একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এ ধরনের সমালোচনাকে আমল দিলে চলবে না। বরং সরকারের সাফল্য আরও জোরালো ভাবে তুলে ধরতে হবে। কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সত্ত্বেও সরকার যে সব ইতিবাচক কাজ করেছে তা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মানুষকে জানাতে হবে। পাশাপাশি বিরোধীদের দ্বিচারিতাও তুলে ধরতে আম-আদমির সামনে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.