এক শীর্ষ নেতা-সহ চার সন্দেহভাজন মাওবাদীকে গুলি করে মারল অসম পুলিশ। আজ সকালে তিনসুকিয়া জেলার সদিয়াতে ঘটনাটি ঘটে। গুলির লড়াইয়ে জখম হয়েছেন এক পুলিশকর্মীও। অন্য দিকে, আজ সকালে গুয়াহাটি স্টেশনে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র-সহ সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে রেল পুলিশ। প্রদীপ কুমার নামে ধৃত ওই ব্যক্তি কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত কি না টানা জেরা করে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গোপন সূত্রে খবর মেলে, নেতা সিদ্ধার্থ বুঢ়াগোহাঁই-সহ মাওবাদীদের ছ’জনের একটি দল সদিয়ার দেওপানি বড়গুড়া মিসিং বাঁশকাটি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে। সদিয়া থানার ওসি উৎপল বরা দলবল নিয়ে গ্রাম ঘিরে ফেলেন। পুলিশ দেখেই মাওবাদীরা গ্রেনেড ছোড়ে ও গুলিও চালায়। গুলিতে জখম হনঅচিন্ত্য দাস নামে এক পুলিশ কম্যান্ডো। পুলিশের পাল্টা গুলিতেমারা পড়ে সিদ্ধার্থ-সহ চার মাওবাদী। দুইজন পালায়। পলাতক মাওবাদীদের খোঁজে আশপাশের গ্রামে তল্লাশি চলছে। |
ঘটনাস্থল থেকে দু’টি এ কে-৪৭, একটি এ কে-৫৬ রাইফেল ও তিনটি হাত গ্রেনেড উদ্ধার করেছে পুলিশ। মিলেছে পাঁচটি মোবাইন, কয়েকটি সিমকার্ড ও প্রচুর তাজা কার্তুজ। পুলিশের দাবি, নিহত সিদ্ধার্থ সিপিআই (মাওবাদী) বাহিনীর ‘সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড’। অপর নিহত মাওবাদীর নাম রাজীব গগৈ। বাকিদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। দেহগুলি ময়না তদন্তের জন্য চাপাখোয়া হাসপাতালে আনা হয়। জখম কম্যান্ডোকে অসম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ডিআইডি (পূর্ব) অনুরাগ টংখা বলেন, অসম পুলিশ তথা দেশের নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে এ দিনের ঘটনা এক বড় সাফল্য। উদ্ধার হওয়া রাইফেল দু’টি গত বছর ডিব্রুগড়ের রাজগড় ফাঁড়ি থেকে লুঠ করা হয়েছিল। কনস্টেবলদের চোখে লঙ্কাগুঁড়ো ছিটিয়ে রাইফেল লুঠ করেছিল মাওবাদীরা।
পৃথক ঘটনায় কাল বিকেলে মেঘালয় ও অসম পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তিন অপহরণকারীকে হত্যা করে ১৪ বছরের এক অপহৃত কিশোরকে উদ্ধার করেছে। গত সোমবার, পশ্চিম জয়ন্তিয়া পাহাড়ে ক্লেরিয়েট এলাকায় কয়লা ব্যবসায়ী বনিফাস্ট সিলার ছেলে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ফরচুনেট রিম্বাইকে অপহরণ করা হয়েছিল। অপহরণকারীরা ফরচুনেটের মুক্তির বিনিময়ে এক কোটি টাকা দাবি করেছিল। পুলিশ, সিলার গাড়ির চালককে গ্রেফতার করে অপহরণকারীদের হদিশ জানতে পারে। এরপর, কাল, অসম ও মেঘালয় পুলিশ ফাঁদ পাতে। অপহরণকারীদের জানানো হয়, কার্বি আংলং জেলার গরমপানিতে ফরচুনেটের বাবা টাকা নিয়ে আসবেন। ফাঁদে পা দেয় অপহরণকারীরা। টাকা নিতে এলে পুলিশ তাদের ঘিরে ফেলে। দুই পক্ষে গুলির লড়াইয়ে তিন অপহরণকারী মারা যায়। বাকিরা পালায়। জঙ্গলের ভিতরের ঘাঁটি থেকে ফরচুনেটকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া জয়ন্তিয়া পাহাড়ের ল্যাটিরকে গ্রাম থেকে, কয়লা খনির দুই ম্যানেজারকে অপহরণ করেছে জঙ্গিরা। মনোজ সিংহ ও বিজেন্দ্র পান্ডে নামে ওই দুইজনকে উদ্ধারে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
অন্য দিকে, দিল্লিগামী সম্পর্ক ক্রান্তি এক্সপ্রেস ধরতে এসে আজ গুয়াহাটি স্টেশনে রেলপুলিশের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধরা পড়ল এক ব্যক্তি। জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম প্রদীপ কুমার। সে নিজেকে নাগাল্যান্ড পুলিশের কর্মী বলে দাবি করে। তার কাছ থেকে মিলেছে একটি চিনা পিস্তল, একটি এয়ার গান ও ৯০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ। ধৃত প্রদীপকে জেরা করছে পুলিশ। |