|
|
|
|
মমতাদের অভিযোগ খণ্ডনে সরব সনিয়া |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় রাজ্যের অধিকারে কেন্দ্র হস্তক্ষেপ করছে বলে এত দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমাররা যে অভিযোগ তুলছিলেন, আজ তা খণ্ডন করতে মুখ খুললেন স্বয়ং সনিয়া গাঁধী। রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগেরও জবাব দিলেন তিনি। ‘গত আট বছরে ইউপিএ সরকার যে অভূতপূর্ব হারে রাজ্যগুলিকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে’, উদাহরণ হিসেবে সনিয়া উল্লেখ করলেন সেই প্রসঙ্গও।
সম্প্রতি একাধিক ক্ষেত্রে রাজ্যের অধিকারে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের অভিযোগ এসেছে ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেই অভিযোগে মূল কণ্ঠস্বরটি শরিক নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই পরিস্থিতিতে কোন যুক্তিতে দলীয় সাংসদরা অভিযোগের মোকাবিলা করবেন, সেটাই আজ স্পষ্ট করে দিলেন সনিয়া গাঁধী। কংগ্রেস সংসদীয় দলের বৈঠকে তিনি বলেন, “ইদানীং কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে খুব কথা হচ্ছে। কিন্তু আমি আর এক বার জানিয়ে দিতে চাই, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মজবুত করা ইউপিএ তথা কংগ্রেসের মূল মন্ত্র।” এই প্রসঙ্গেই রাজ্যগুলিকে ‘অভূতপূর্ব’ অর্থ সাহায্যের কথা তুলে ধরেন সনিয়া।
একই সঙ্গে ওঠে এনসিটিসি প্রসঙ্গও। সনিয়া এ ক্ষেত্রেও ইউপিএ সরকারের নীতির পাশে দাঁড়িয়ে বুঝিয়ে দেন, এ ব্যাপারে কেন্দ্রের উদ্দেশ্য ছিল মহৎ। তাঁর কথায়, “কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের আরও দিক রয়েছে। যেমন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই বা উগ্র বামপন্থা দমন। এ সব ব্যাপারে কেন্দ্র তার দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে পারে না। বরং এ বিষয়ে কেন্দ্রের মূল প্রয়াসই হল, রাজ্যগুলির সঙ্গে নিবিড় বোঝাপড়া ও সমন্বয় রেখে জাতীয় স্বার্থকে সুরক্ষিত রাখা।” তাঁর কথায়, “আস্থা ও সহযোগিতাই কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের মূল সূত্র হওয়া উচিত।” এনসিটিসি-র ক্ষেত্রে যে নিজের সেই দায়িত্বের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্র সহযোগিতার পথে এগোতে চেয়েছিল, তা-ই বুঝিয়ে দেন সনিয়া। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক নিয়ে সাম্প্রতিক বিতর্কের শুরু লোকপাল বিলে লোকায়ুক্ত নিয়োগের প্রয়াস থেকে। প্রথমে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, পরে মমতা এর বিরোধিতা করেন। পরে রাজ্যের অধিকারে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে এনসিটিসি গঠনের উদ্যোগেও বাধা দেন মমতা। সুর মেলান নরেন্দ্র মোদী, জয়ললিতা-সহ দশ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে আর্থিক সহায়তার প্রশ্নে কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে তীব্র অসন্তোষ জানাতে শুরু করে তৃণমূল। কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, এমন নয় যে মুখ্যমন্ত্রীদের এ ভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পিছনে কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ আছে। এর মূল উদ্দেশ্য, কেন্দ্র থেকে আরও বেশি কিছু আদায় করা। কিন্তু এই ঐক্যবদ্ধ সমালোচনায় কংগ্রেস সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে। বিশেষ করে মমতা যখন সেই ‘দলে’ রয়েছেন। তাই আজ অভিযোগ খণ্ডন করে মমতা-নীতীশদের পাল্টা বার্তা দিতে চেয়েছেন সনিয়া। কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, সাংবিধানিক এক্তিয়ারের মধ্যে থেকে রাজ্যকে যতটা সাহায্য করা সম্ভব, কেন্দ্র তা করছে। কিন্তু সেই ‘সীমাবদ্ধতা’কেই অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাজ্যের প্রতি বঞ্চনা বলে তুলে ধরা হচ্ছে। সনিয়া আজ এই অভিযোগ মোকাবিলার পথই দলীয় সাংসদদের বাতলে দিয়েছেন। |
|
|
|
|
|