বিয়েতে অমত, মেয়ের বাড়ির ‘হুমকি’তে আতঙ্কে নবদম্পতি
বিয়েতে মত ছিল না মেয়ের বাড়ির। বারবার ‘হুমকি’ দেওয়া হচ্ছিল নবদম্পতিকে। ভয়ে বাড়ি ছেড়ে বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা। পুলিশ-প্রশাসন উদ্যোগী হয়ে ঘরে ফেরালেও আতঙ্ক কাটছে না বর্ধমানের পানাগড়ের দম্পতি সুভাষ ও মেঘা সাহার।
পানাগড়ের রনডিহায় কাছে বাড়ি বছর পঁচিশের সুভাষের। পেশায় ঠিকাদার সুভাষ জানান, স্থানীয় গুরদুয়ারা গলির বাসিন্দা, বস্ত্র ব্যবসায়ী বিজয় অগ্রবালের মেয়ে মেঘার সঙ্গে তাঁর বছর তিনেকের প্রেমের সম্পর্ক। গত বছর নভেম্বরে মেঘা জানান, বাড়িতে তাঁর বিয়ের দেখাশোনা চলছে। এর পরেই মেঘার বাড়িতে কিছু না জানিয়ে গত ২ ডিসেম্বর বর্ধমানে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে বিয়ে করেন তাঁরা। সুভাষ বলেন, “সামনে উচ্চ মাধ্যমিক থাকায় বিয়ের পরে মেঘা নিজের বাড়িতেই থাকছিল। পরীক্ষার পরে গত ২৮ এপ্রিল আমার বাড়িতে চলে আসে।”
পানাগড়ে বাড়িতে সুভাষ ও মেঘা। ছবি: বিশ্বনাথ মশান
সুভাষের বাবা গুরুপদবাবু জানান, মেঘা তাঁদের বাড়িতে আসার পরেই লোকজন নিয়ে পৌঁছন বিজয়বাবু। এই বিয়ে মানেন না জানিয়ে মেয়েকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান তিনি। খবর পেয়ে পৌঁছয় কাঁকসা থানার পুলিশ। রেজিস্ট্রির কাগজ পরীক্ষা করে পুলিশ জানায়, এই বিয়ে আইনত সিদ্ধ। এ ভাবে বাধা দেওয়া আইনবিরুদ্ধ জানিয়ে বিজয়বাবুকে ফিরে যেতে বলে পুলিশ। অভিযোগ, ‘ছেলে-মেয়ে কাউকেই বাঁচতে দেব না’, এই হুমকি দিয়ে তিনি ফিরে যান। কিন্তু সন্ধ্যায় আবার এসে হুমকি দিতে থাকেন বিজয়বাবু। ফের পুলিশ পৌঁছয়। বিজয়বাবু পুলিশের কাছে মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ করতে চান। কিন্তু ইতিমধ্যে মেঘার বয়ান নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে।
সুভাষের দাবি, “পর দিন রাস্তায় বেরিয়ে বুঝতে পারি, কয়েক জন পিছু নিয়েছে। ভয়ে বাড়ি চলে আসি। এর পরে বাড়িতে এসে ও টেলিফোনে দফায় দফায় হুমকি দেওয়া হয়। ভয় পেয়ে বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই।” ৩ মে ভোরে বোলপুরে সুভাষের এক বন্ধুর বাড়িতে চলে যান দু’জনে। কিন্তু আতঙ্ক কাটছিল না। শেষমেশ গত সোমবার তাঁরা বীরভূমের পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনার দ্বারস্থ হন। মঙ্গলবার ওই দম্পতিকে বর্ধমানের পুলিশ সুপারের কাছে পাঠায় বীরভূমের পুলিশ। সেখানে ওই দম্পতি তাঁদের ঘরে ফেরানোর আবেদন জানান। পুলিশ তাঁদের কাঁকসা থানায় পাঠায়। দুই পরিবারকেও থানায় ডাকে পুলিশ। আর কোনও সমস্যা হবে না, এই প্রতিশ্রুতি আদায়ের পরেই দু’পক্ষকে বাড়ি পাঠানো হয়।
বুধবার বাড়িতে বসে সুভাষের অভিযোগ, “থানায় বিয়ে মেনে নেওয়ার কথা বললেও বাইরে এসেই ওরা শুনিয়েছে, ‘এই সম্পর্ক কত দিন থাকবে জানি না’। তাই পুলিশের আশ্বাসেও ভয় কাটছে না।” তিনি বলেন, “টানা হুমকিতে আমি বিধ্বস্ত। এ ভাবে কত দিন বাঁচব, জানি না।” হতাশ গলায় মেঘাও বলেন, “নিজের পছন্দ মতো বিয়ে করে কী অন্যায় করেছি জানি না! বাবা কী চাইছে, বুঝতে পারছি না।” বুধবার বিজয়বাবুর বাড়ি গিয়ে কারও দেখা মেলেনি। বারবার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার আশ্বাস, “প্রাপ্তবয়স্ক কোনও দম্পতিকে কেউ এ ভাবে হুমকি দিতে পারেন না। পুলিশ তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। এলাকাতেও নজর রাখা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.