দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট কলেজের নথিভুক্ত ৫ শতক জমি বিভাগীয় নথি থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠায় বিতর্কের মুখে ভূমি রাজস্ব দফতর। ওই জমি এক মহিলার নামে নথিভুক্ত হয়েছে। এই নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ বহু বার জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের কাছে দরবার করলেও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ বালুরঘাটের এসডিজেএম আদালতের দ্বারস্থ হন। বালুরঘাট কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা পুরসভার চেয়ারপার্সন সুচেতা বিশ্বাস বলেন, “নথিপত্র অনুযায়ী ওই জায়গা কলেজের বলেই আমরা জানি। ব্লক ভূমিরাজস্ব দফতর থেকে তা অন্যের নামে রেকর্ড হয়েছে বলে শুনেছি। আদালতে মামলা হয়েছে।” জেলার প্রাচীন ও প্রথম এই কলেজের পেছনের দিকে শৌচালয় ও বাথরুম-সহ ৫ শতক রায়তি জমি ১৯৫৪ সালে বালুরঘাট হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ কলেজকে দান করেন। ১৯৬২ সালে ভূমি সংস্কার দফতর থেকে ওই জায়গা কলেজের নামে নথিভুক্ত হয়। ২০০২ সাল নাগাদ এলআর রেকর্ডে ৫ শতক জায়গায় কলেজের কোনও নামই নেই বলে অভিযোগ। তার বদলে ওই জায়গাটি রেকর্ড হয়েছে স্থানীয় এক মহিলার নামে। কলেজের পক্ষে প্রাক্তন ভূমি অধিগ্রহণ পরিমাপক দয়ানিধান রাম বলেন, “এর পর বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন ব্লক ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের কাছে দরবার করা হয়। তিনি জেলা ভূমিরাজস্ব আধিকারিকের কাছে চিঠি পাঠান। সেখান থেকে ব্লক ভূমি রাজস্ব আধিকারিককে তদন্ত ও সমীক্ষা করে বিষয়টি সমাধান করতে নির্দেশ দেন জেলা ভূমিরাজস্ব আধিকারিক। অভিযোগ, তৎকালীন ব্লক ভূমি রাজস্ব আধিকারিক তদন্ত না করেই ৫ শতক জায়গার মধ্যে সওয়া তিন শতক ওই মহিলার নামে ও পৌনে দু’শতক কলেজের বলে রায় দেন। রায়ের বিরুদ্ধে কলেজ থেকে নথি দিয়ে ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের কাছে দরবার করলেও বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতর মৌন ভূমিকা পালন করে চলেছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে এদিন জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের বক্তব্য জানা যায়নি। জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “শীঘ্রই এ ব্যাপারে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মহিলার পক্ষে তাঁর দলিল লেখক ছেলে গৌতম চৌধুরী বলেন, “জায়গাটি কলেজের কি না জানা নেই। তবে ওই ৫ শতক জায়গা আমরা কিনেছি। আমাদের কাছে নথি আছে। বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে বসতে চাইলে আপত্তি নেই।” শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, বাম আমলে কর্তৃপক্ষ জায়গা দখলের চেষ্টার অভিযোগ জেনে কিছু করেননি। কলেজের নামে নথিভূক্ত ওই জমি কী করে ভূমিরাজস্ব দফতর থেকে মালিকানার নথি বদলে অন্যের নামে হল? এই প্রশ্নে সরব শহরের শিক্ষানুরাগী নাগরিকদের একাংশ। |