|
|
|
|
দালাল চক্র থেকে রেহাই পেতে প্রচার হাসপাতালের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কাটোয়া |
দালাল চক্রের ব্যাপারে রোগী ও তাঁদের পরিজনদের সতর্ক করতে উদ্যোগী হলেন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের তরফে ওষুধ কেনার ক্ষেত্রে কারও দ্বারা বিভ্রান্ত না হওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে প্রচারপত্র বিলি করে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য কর্মসূচির নিয়ম অনুসারে, প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের ক্ষেত্রে সমস্ত ওষুধপত্র ও অন্য নানা জিনিসপত্র রোগীকে হাসপাতাল থেকেই দেওয়া হবে। সেই সব ওষুধ হাসপাতালে পাওয়া না গেলে নির্দিষ্ট দোকান থেকে তা আনতে বলে দেবেন কর্তৃপক্ষই। তার দাম মিটিয়ে দেবে হাসপাতাল। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের ক্ষেত্রে প্রসূতি ও সদ্যোজাতের চিকিৎসার কোনও খরচ লাগে না। কিন্তু দালালদের খপ্পরে পড়ে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা সর্বস্বান্ত হন। সে কারণে প্রচারপত্র ছড়িয়ে সচেতন করা হচ্ছে।” |
|
নিজস্ব চিত্র। |
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে রোগীদের হাতে ওষুধের নাম লেখা ‘রিক্যুইজেশন স্লিপ’ দেওয়া হয়। নিয়ম অনুযায়ী, ওই ‘স্লিপ’ নিয়ে গিয়ে নির্দিষ্ট দোকান থেকে ওষুধ নেবেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাস্তবে অনেক সময়েই দেখা যায় অন্য চিত্র। হাসপাতালের মূল গেট দিয়ে বেরোনোর পরেই রোগীরা আত্মীয়-পরিজনেরা পড়ে যান দালালদের কবলে। হাত থেকে ওই ‘রিক্যুইজেশন স্লিপ’ কেড়ে নিয়ে অন্য দোকান থেকে ওষুধ কিনে দেয় দালালেরা। ওষুধের দাম আত্মীয়দের থেকেই নিয়ে নেয় তারা।
স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসা মঙ্গলকোটের নিগন এলাকার বাসিন্দা মেহবুব হোসেন বলছিলেন, “হাসপাতাল থেকে কাগজ দেওয়ার পরে ভেবেছিলাম, ওষুধ কিনে আনতে হবে। হাসপাতালের বাইরে যেতেই কয়েক জন মিলে কাগজটা কেড়ে নিল। তারাই ওষুধ কিনে দিয়ে টাকা নিয়ে গেল।” কাটোয়ার বাগানেপাড়ার বাসিন্দা সাইফুল শেখ বলছিলেন, “ওষুধ কিনে আনার পরে নার্সদের কাছ থেকে জানতে পারলাম, নির্দিষ্ট দোকানে গেলে ওষুধগুলি বিনা পয়সায় পাওয়া যেত।”
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘জনসাধারণের প্রতি আবেদন’ শীর্ষক প্রচারপত্রে জানিয়েছেন, ‘যে সমস্ত ওষুধ ও জিনিসপত্র হাসপাতালে পাওয়া যায় না, সেগুলি নির্ধারিত ‘রিক্যুইজেশন স্লিপ’ নিয়ে নির্দিষ্ট দোকানে গেলে বিনা পয়সায় পাওয়া যাবে।’ একই সঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘যে কোনও লোকের দ্বারা বিভ্রান্ত হবেন না। নির্দিষ্ট দোকান ছাড়া ‘রিক্যুইজেশন স্লিপ’ নিয়ে অন্য দোকান থেকে ওষুধ কিনবেন না।”
হাসপাতালের সুপার বলেন, “রোগীর আত্মীয়-স্বজন কিংবা জন সাধারণ এই সুবিধার কথা জানেন না। সে কারণে তাঁরা দালালদের কবলে পড়েন। আশা করি, এই প্রচারপত্র পাওয়ার পরে সচেতনতা বাড়বে।” সুপার জানান, রোগী সহায়তা কেন্দ্রের মহিলারা ছাড়াও সংবাদপত্র বিক্রেতাদের দিয়ে প্রচারপত্র বিলির ব্যবস্থা করা হবে। প্রসূতিরা ছাড়াও জননী সুরক্ষা যোজনা ও জননী শিশু সুরক্ষা কার্ড যাঁদের রয়েছে তাঁরাও বিনামূল্যে ওষুধপত্র পাবেন বলে জানিয়েছেন সুপার। |
|
|
|
|
|