|
|
|
|
সদ্যোজাতের সুরক্ষায় উদ্যোগী স্বাস্থ্য দফতর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রায়গঞ্জ |
সদ্যোজাতদের উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ) চালু করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে ওই ইউনিট চালু করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ইউনিট তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। হাসপাতালের দোতালায় পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডের পাশে ওই ইউনিট গড়ে তোলা হচ্ছে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেন, “হাসপাতালের শিশু বিভাগের পরিকাঠামো ভাল নয়। সেই কারণেই প্রায় দু’বছর আগে হাসপাতালের তরফে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে এসএনসিইউ চালু করার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। প্রশাসনিক কিছু জটিলতার কারণে ইউনিটটি চালু করতে সাময়িক দেরি হল। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের উপস্থিতিতে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে ইউনিট চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ০ থেকে ২৮ দিন বয়সী অসুস্থ সদ্যোজাতদের এসএনসিইউ ইউনিটে ভর্তি রেখে সদ্যোজাতদের সেপটিসিমিয়া, লো বার্থ ওয়েট, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া-সহ অন্তত ৩০টি জটিল রোগের চিকিৎসা করা হবে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই ওই ইউনিটে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রায় ৩০টি বৈদ্যুতিন চিকিৎসার যন্ত্রসামগ্রী বরাদ্দ করেছে। তার মধ্যে রয়েছে রেডিয়েন ওয়ার্মার, ওয়াল মাউন্টেন ফোটোথেরাপি, পালস অক্সিমিটাস, ইনফিউশন পাম্প ও অক্সিজেন কনসেনট্রেটর। প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে ওই কাজ চলছে। |
|
সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট। নিজস্ব চিত্র। |
বাতানুকুল ওই ইউনিটে সদ্যোজাতদের জন্য ১২ টি শয্যা থাকবে। ওই ইউনিটে পৃথক ভাবে ৯ জন চিকিৎসক ও ১২ জন নার্সকে নিয়োগ করা হয়েছে। হাসপাতালের সাধারণ স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ওই ইউনিটের বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ইউনিটের দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত ৫ জন চিকিৎসককে নিয়োগপত্র দিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি চিকিৎসক ও নার্সদের নিয়োগপত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম দাসের দাবি, “যে কোনও মেডিক্যাল কলেজ কিংবা হাসপাতালের মতোই আধুনিক মানের এসএনসিইউ গড়ে তোলা হচ্ছে। আশা করছি, ঠিকাদার সংস্থা কয়েকদিনের মধ্যেই ইউনিটটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করবে। তারপরই ওই ইউনিটে শয্যা ও চিকিৎসার যন্ত্রসামগ্রী বসানো হবে।” বর্তমানে হাসপাতালের নিচতলায় ৩০ শয্যার সাধারণ শিশু বিভাগ রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত সুপার জানান, চিকিৎসক ও উন্নত চিকিৎসার সামগ্রীর অভাবে এতদিন শিশু বিভাগে সদ্যোজাতদের পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছিল। সেখানে ৩০ শয্যা থাকলেও প্রতিদিন গড়ে ৯০ জন শিশুকে ভর্তি রেখে পরিষেবা দিতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। সদ্যোজাতদের আলাদা ভাবে চিকিৎসা পরিকাঠামো ছিল না। এ বার সেই অভাব ঘুচতে চলেছে। গত কয়েক মাস আগে চিকিৎসক ও পরিকাঠামোর অভাবে এক সদ্যোজাতের মৃত্যুর অভিযোগে হাসপাতালে ব্যাপক হইচই হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একসঙ্গে ২৩ জন শিশুকে অন্যত্র রেফার করেন। সমস্যার সমাধানে সেই সময় কংগ্রেস ও তৃণমূলের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এসএনসিইউ ইউনিটের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানানো হয়। উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ পৃথক ভাবে বলেন, “নির্মীয়মান এসএনসিইউ পরিদর্শন করেছি। কাজ শেষ পর্যায়ে। সেটি চালু হলে সদ্যোজাতদের উন্নত চিকিৎসা মিলবে।” |
|
|
|
|
|