শহরে পানীয় জল সরবরাহের সমস্যায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে দলেরই কাউন্সিলরদের একাংশ প্রশ্ন তোলায় দায়িত্ব থেকে ইস্তফা চেয়ে আবেদন করলেন সংশ্লিষ্ট মেয়র পারিষদ অরিন্দম মিত্র। সোমবার দুপুরে শিলিগুড়ি পুরসভার ‘রিসিভ অ্যান্ড ডেসপ্যাচ’ বিভাগে লিখিতভাবে মেয়রের কাছে ওই আবেদন জমা দিয়েছেন তৃণমূলের ওই কাউন্সিলর। ওই বিভাগ থেকে চিঠি অবশ্য এখনও মেয়রের হাতে পৌঁছয়নি। দলের কাউন্সিলরদের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় দলীয় নেতৃত্বকেও তিনি বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কিন্তু নেতৃত্বের তরফে কোনও সদুত্তর না মেলায় তিনি ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান। দলের কাউন্সিলরদের মধ্যে কোন্দল নিয়ে ওই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি কাউন্সিলরও এবং পুরসভার তৃণমূলের পরিষদীয় দলনেতা। বুধবার দলীয় কার্যালয়ে তৃণমূলের কাউন্সিলরদের নিয়ে তিনি বৈঠক ডেকেছেন। গৌতমবাবু বলেন, “দলের কাউন্সিলর অরিন্দমবাবু মেয়র পারিষদের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন বলে জেনেছি। এ ব্যাপারে দলের কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছি। অরিন্দমবাবুকেও সে ব্যাপারে আলোচনায় উপস্থিত থাকতে বলেছি।” মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত অবশ্য জানিয়েছেন, অরিন্দমবাবু ইস্তফা চেয়ে আবেদন করলেও তাঁর হাতে সেই চিঠি এখনও এসে পৌঁছয়নি। মঙ্গলবার রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে অফিস বন্ধ ছিল। সে কারণে বুধবারের আগে এ ব্যাপারে তিনিও স্পষ্ট কিছু বলতে পারছেন না। সম্প্রতি ঝড়ে হাইটেনশনের পোল উল্টে, তার ছিঁড়ে শহরে ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তার জেরে পানীয় জল পরিষেবা প্রায় ২ দিন বন্ধ থাকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ওই বিভাগের দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ অরিন্দম মিত্রের ভূমিকা নিয়ে দলের একাংশ কাউন্সিলররাও প্রশ্ন তোলেন। তাতে অরিন্দমবাবু হতাশ বলে তাঁর ঘনিষ্টমহল জানিয়েছে। পুরসভার পানীয় জল পরিষেবা ছাড়াও, পরিকল্পনা এবং উন্নয়ন, বিদ্যুৎ বিভাগ, সেল্ফ এমপ্লয়মেন্ট, ভেইকেলস্ এবং ক্রীড়া বিভাগের দায়িত্ব তাঁর উপর। এক সঙ্গে এতগুলি বিভাগ দেখে ওঠা তাঁর পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না বলেও অনেকে মনে করেন। অরিন্দমবাবু বলেন, “যে সমস্ত দায়িত্ব আমার উপর দেওয়া হয়েছিল সে সব পরিষেবা ঠিক মতো দিতে আমি ব্যর্থ হয়েছি বলে মনে হয়েছে। দলের কাউন্সিলরদের একাংশও এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন। দলীয় নেতৃত্বকে তা জানিয়েছি। তাঁরাও বিষয়টি নিয়ে কিছু বলেননি। দলের কাউন্সিলরদের যে বা যাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন তাদের প্রতি দলীয় নেতৃত্বের সমর্থন রয়েছে বলেই মনে হয়। এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের সমস্যার মধ্য ফেলতে চাই না বলেই ইস্তফা দিয়েছি।” দলের জেলা নেতৃত্বের অন্যতম তথা পুরসভার পূর্ত বিভাগের দায়িত্বে থাকা মেয়র পারিষদ কৃষ্ণ পাল জানান, কাউন্সিলরদের কেউ প্রকাশ্যে অরিন্দমবাবুর কাজ নিয়ে কিছু বলেননি বলেই তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন। অরিন্দমবাবু মেয়র পারিষদ হিসাবেও ভাল কাজ করছেন। বিষয়টি নিয়ে দলীয় কাউন্সিলরদের বৈঠকে আলোচনা হবে। |