কালীতলা বিশ্ববন্ধু শিক্ষা নিকেতন |
|
সুকুমার দেবনাথ
প্রধান শিক্ষক |
|
উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্তবর্তী বনগাঁ শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে ইছামতী নদীর ১৯৬৭ সালে জন্ম হয়েছিল এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। জন্মের ক্ষণে অষ্টম শ্রেণি পর্যম্ত পঠনপাঠন দিয়েই শুরু হয়েছিল পথচলা। ক্রমে ত্রমে তার কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯৮ সালে কালীতলা বিশ্ববন্ধু শিক্ষা নিকেতন মাধ্যমিক এবং ২০০৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হয়। ২০০৯ সালে চালু হয় কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা। বর্তমানে শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ২৯ জন। ছাত্রচাত্রীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। গুরু ও শিষ্যের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের সনাতনী পরম্পরা এই স্কুলের গর্ব। পঠনপাঠনে শুধু পুথিগত শিক্ষা নয়, তার বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সর্বদাই সচেষ্ট এখানকার শিক্ষর-শিক্ষিকারা। স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলা, শরীরচর্চা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পড়ুয়াদের শারীরিক গঠনের দিকে নজর দেওয়া হয়। পড়াশোনার বাইরে ছাত্রছাত্রীদের মৌলিক চিন্তার বিকাশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনের পাশাপাশি প্রকাশ করা হয় দেওয়াল পত্রিকা। আয়োজন করা হয় শিক্ষামূলক ভ্রমণের। |
বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক প্রকল্পে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সক্রিয় অংশ নেয়। গত ফেব্রুয়ারিতে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক প্রদর্শনী মহকুমায় প্রশংসিত হয়। তবে বিদ্যলয়ের প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ এতগুলি বছর কেটে গেলেও সামগ্রিক পরিকাঠামো এখনও অনেক অনুন্নত। প্রধাম সমস্যা ছাত্রছাত্রীর তুলনায় শিক্ষির-শিক্ষিকার সংখ্যার অপ্রতুলতা। এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা সুষ্ঠপ পঠনপাঠনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যদিও স্কুলের শিক্ষিক-শিক্ষিকারা সেই ঘাটতি পূরণে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। রয়েছে শ্রেণিকক্ষের এবং অশিক্ষক কর্মীর অপর্যাপ্ততা। স্কুলের চারপাশে কোনও প্রাচীর না থাকায় পঠনপাঠনে অসুবিধা হয়। তবে অনেক সমস্যার মধ্যেও এ বছর বিদ্যালয়ের নিজস্ব ‘ইছামতী’ গ্রন্থাগারের বইয়ের সংখ্যা তিন হাজার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। |
আমার চোখে
পূজা ঢালী
ক্লাস টেন-এর ফার্স্ট গার্ল |
|
|
স্কুলের এক পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ইছামতী। প্রকৃতির অকৃপণ দানের চৌহদ্দির মধ্যে এই স্কুল আমাদের কাছে গর্বের। এলাকার অধিকাংশ পরিবার দরিদ্র। শিক্ষার সুযোগ তাদের কাছে বিলাসিতা। কিন্তু সেই প্রতিকূলতাকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাঁদের ঐকান্তিক চেষ্টায় দূর করার প্রয়াস চালাচ্ছেন। যে কোনও সমস্যায় তাঁরা ছাত্রছাত্রীদের কাছে মুশকিল আসান। পরিবারে যেমন পিতা-মাতা তাঁদের সম্তানদের আগলে রাখেন। আমাদের প্রতিও শিক্ষক-শিক্ষিকারা তেমনই আচরণ করেন। পড়ুয়া ও শিক্ষকদের এমন সুসম্পর্কের কারণেই স্কুলের মানের উন্নতি হচ্ছে। স্কুলের অনের সমস্যা রয়েছে। কিন্তু সমস্ত বাধা সত্ত্বেও এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা, উৎসাহ নিরন্তর তাঁরা আমাদের দিয়ে চলেছেন।
|