দাবাড়ু শঙ্কর রায়ের আত্মহত্যা
কালে চলে গেলেন বাংলার দাবার এক সময়ের অন্যতম সেরা প্রতিভা শঙ্কর রায়। মাত্র ৩৬ বছর বয়সে। রেখে গেলেন মা ও স্ত্রীকে। সোমবার গভীর রাতে নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন শঙ্কর। মৃত্যুর কারণ রহস্যাবৃত।
দাবাড়ু হিসেবে শঙ্করের প্রতিভা প্রশ্নাতীত। দিব্যেন্দু বড়ুয়ার পরে এক সময় তাঁকেই সম্ভাব্য গ্র্যান্ডমাস্টার মনে করা হচ্ছিল। প্রথম সবার নজরে পড়েন টেলিগ্রাফ দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে। আরও এক বার এই টুর্নামেন্টে সেরা হয়েছেন শঙ্কর। সাব-জুনিয়র জাতীয় খেতাবও জিতেছেন। জাতীয় ব্লিৎজ দাবায় সেরা হন। সাব-জুনিয়র এশীয় খেতাব পান। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টেও সাফল্য আছে শঙ্করের। খুব ছোটবেলায় ব্রাজিলে খেলেন বিশ্ব সাব-জুনিয়র প্রতিযোগিতায়। রাজ্য স্তরে শঙ্করের বড় সাফল্য টানা চার বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সব মিলিয়ে পাঁচ বার রাজ্যসেরা হয়েছেন তিনি। বাংলাদেশে দাবা লিগ খেলেছেন। প্রতিযোগিতামূলক দাবা থেকে সরে আসার পর প্রশিক্ষক হিসেবেও সফল। গুডরিক চেস অ্যাকাডেমির প্রধান কোচ ছিলেন। খুদে দাবাড়ুদের অত্যন্ত প্রিয় কোচ ছিলেন শঙ্কর। তাঁর কৃতী ছাত্রদের মধ্যে রয়েছেন দীপ্তায়ন ঘোষ, সায়ন্তন দাসেরা। চাকরি করতেন রেলে।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাতে স্ত্রীর সঙ্গে দোতলায় ঘুমিয়েছিলেন তিনি। ভোর রাতে ঘুম ভেঙে স্ত্রী দেখেন, শঙ্কর পাশে নেই। তাঁকে খুঁজতে খুঁজতে নীচে নামেন। একটি ঘরের দরজা বন্ধ দেখে সন্দেহ হয় স্ত্রী অনসূয়ার। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। সেখানেই দেখা যায় সিলিং ফ্যানে গলায় ওড়না ঝোলানো অবস্থায় ঝুলছে নিথর দেহটি। প্রসঙ্গত সাড়ে তিন বছর আগেও গায়ে আগুন দিয়ে শঙ্কর আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর ঘর থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোট থেকে পুলিশ জেনেছে, মাঝেমধ্যেই পোড়া চামড়ায় টান লেগে কষ্ট পেতেন শঙ্করবাবু। তবে নোটে তাঁর মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করে যাননি।
শঙ্করের মৃত্যুতে বাংলার দাবা মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দুঃসংবাদ পেয়েই মঙ্গলবার তাঁর টালা পার্কের ওলাইচণ্ডীতলা রোডের বাড়িতে ছুটে যান দিব্যেন্দু বড়ুয়া, অতনু লাহিড়ী, সপ্তর্ষি রায়রা। দৃশ্যত ভেঙে পড়া দিব্যেন্দু বলছিলেন, “আমি ভাবতেই পারছি না। এ রকম প্রতিভা খুব কম আসে। আমার পর ওরই গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার কথা। দাবায় গভীরতম জ্ঞান বলতে যেটা বোঝায় সেটাই ওর ছিল। সব অর্থেই সহজাত প্রতিভা। কোচ হিসাবেও অসম্ভব ভাল। শেষ দু’বছর আমাদের সে ভাবে দেখা হয়নি। কিন্তু ওকে ভুলতে পারব না। ভোলা সম্ভব নয়। বাংলার দাবার বড় ক্ষতি হয়ে গেল। বিশেষ করে ছোটদের। যাদের কোচিং করাতে শঙ্কর ভীষণ ভালবাসত।”
প্রসঙ্গত, মাত্র ১২ দিন আগে শঙ্করের বাবা সমীর রায়ও আত্মহত্যা করেন। বাংলার অন্যতম সেরা এই দাবাড়ুর উঠে আসার মূলে সমীরবাবুই। তিনি ছেলের প্রতিভা বুঝতে পেরে দাবার বই কেনা থেকে শুরু করে কোচিং করানো সবই কার্যত নিজে করেছিলেন।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.