সময়ে হয়নি লোধাদের বাড়ি, অর্থ ফেরত দিল জেলা পরিষদ
ময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারায় সিপিএম পরিচালিত জেলা পরিষদের কাছ থেকে অর্থ ফেরত নিল অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর। সম্প্রতি এক নির্দেশের প্রেক্ষিতে জেলা পরিষদ ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ফেরত দিয়েও দিয়েছে। লোধাদের বাড়ি তৈরির প্রকল্পে ওই টাকা দেওয়া হয়েছিল। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের কাজ দেখভাল করার জন্য জেলায় একটি কমিটি রয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য ও সংশ্লিষ্ট দফতরের জেলা আধিকারিক শান্তনু দাস। সম্প্রতি এই কমিটির বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়, লোধাদের বাড়ি তৈরি প্রকল্পে জেলা পরিষদের কাছে যে ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা রয়েছে, তা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর ফেরত নেবে। সংশ্লিষ্ট দফতর এ বার বাড়ি তৈরি করবে। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের জেলা আধিকারিক শান্তনু দাস বলেন, “জেলা পরিষদের কাছ থেকে অর্থ ফেরত এসেছে। যত দ্রুত সম্ভব ওই ২৭০টি বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে।”
২০০৮ সালে লোধাদের জন্য বিশেষ প্রকল্পে পশ্চিম মেদিনীপুরে এক হাজার বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ইন্দিরা আবাস যোজনা বা অন্য প্রকল্পের মতো সাধারণ মানের বাড়ি নয়। এই প্রকল্পে বাড়ি হবে অনেক বেশি মজবুত। এতদিন বিভিন্ন প্রকল্পে লোধাদের বাড়ি তৈরি হয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ বাড়িই সামান্য ঝড়ে ভেঙে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কিছু ক্ষেত্রে আবার লোধাদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে যে, তাঁরা নিজেরাই বাড়ির জানলা-দরজা ভেঙে বিক্রি করে দিয়েছেন। যাই হোক না কেন, বাড়ি যে বেশিদিন টেকেনি এটা ঠিক। তাই পরিকল্পনা পরিবর্তন করে জেলা প্রশাসন। ঠিক হয়, বাড়ি তৈরির প্রয়োজনীয় অর্থ দেবে অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ বিভাগ ও পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন ব্লকে বেশ কিছু দাবি তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই প্রকল্পে সবথেকে বেশি বাড়ি তৈরি হওয়ার কথা ছিল নারায়ণগড়ে, ২০০টি। জেলার এই এলাকায় প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি লোধা পরিবারের বাস। খড়্গপুর ২ ব্লকে ১০টি বাড়ি তৈরি হওয়ার কথা ছিল। এখনও পর্যন্ত একটিও তৈরি হয়নি। সামনেই বর্ষা। তার আগে বাড়ি তৈরি না হলে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলি সমস্যায় পড়বে। প্রশাসন অবশ্য যত দ্রুত সম্ভব কাজ এগোনোর আশ্বাস দিয়েছে। এখন শুধু এই বিশেষ প্রকল্পেই নয়, পিছিয়ে পড়া এলাকার উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ আইএপি প্রকল্পেও লোধাদের বাড়ি তৈরি হচ্ছে। জেলায় আপাতত ৫৮টি বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরমধ্যে সাঁকরাইলে ৩৮টি ও শালবনিতে ২০টি বাড়ি তৈরি হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, লোধাদের বাড়ি তৈরির জন্য ২০০৮ সালে ৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। জেলা পরিষদের উদ্যোগেই বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়। সমস্ত বাড়ি তৈরির কাজ এক বছরের মধ্যেই শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু, তা হয়নি। এই প্রকল্পের ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা জেলা পরিষদের কোষাগারে পড়ে ছিল। এই অর্থে ২৭০ টি বাড়ি তৈরি হবে। সম্প্রতি অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের ‘কোপে’ পড়েছে সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এক বেসরকারি সংস্থা। একটি প্রকল্পে ওই সংস্থাকে দেওয়া ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ফেরত চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর। গত শুক্রবার ওই বেসরকারি সংস্থার কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়। এ ক্ষেত্রে ওই বেসরকারি সংস্থাকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, চিঠি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে সুদ-সহ ওই দেয় অর্থ ফেরত দিতে হবে। জানা গিয়েছে, মেদিনীপুরের ‘সেন্টার ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অফ হায়ার এডুকেশন’ নামে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ১১টি লোধা শিশু রক্ষণাগার তৈরির বরাত পায়। প্রাথমিক ভাবে সংস্থাকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু রক্ষণাগার তৈরির কাজ এগোয়নি। পরিস্থিতি দেখে অর্থ ফেরত চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। একই ঘটনা ঘটেছে লোধাদের বাড়ি তৈরি প্রকল্পে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর অর্থ ফেরত চেয়েছিল। সেই মতোই ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বার সংশ্লিষ্ট দফতরই দরপত্র আহ্বান করে বাড়ি তৈরির কাজ দেখভাল করবে। ইতিমধ্যে তা শুরুও হয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.